।। প্রথম কলকাতা ।।
শুরু হয়ে গেছে বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞ। বহু ফুটবলের স্বপ্ন দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা। নিজেদের প্রমান করার সবচেয়ে বড় মঞ্চ ফুটবলারদের। আবার অনেকে ফুটবলারের কেরিয়ারে ইতি টানার বিষাদের সুর। চলতি বিশ্বকাপেও কিছু কিংবদন্তিদের জন্যও শেষ হবে যারা তাদের নিরন্তর ফুটবল দক্ষতা দিয়ে আমাদের মুগ্ধ করেছে। পরবর্তী বিশ্বকাপে সেই শূন্যতা পূরণ করা কঠিন।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো : ৩৭ বছর বয়সে রোনাল্ডো ক্যারিয়ারের একেবারে গোধূলি লগ্নে রয়েছেন। তিনি ক্লাব পর্যায়ে এবং জাতীয় দলের হয়ে গত এক দশক ধরে সুনাম অর্জন করেছেন। জিতেছে অসংখ্য ব্যক্তিগত পুরস্কার। দেশকে এনে দিয়েছেন ইউরো কাপ ও উয়েফা নেশন্স লীগের খেতাব। বাকি শুধু বিশ্বকাপ জয়। ২০০৬ সালে তার প্রথম বিশ্বকাপের পর থেকে রোনাল্ডো প্রতিটি টুর্নামেন্টে গোল করেছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার তিনি। চলতি বিশ্বকাপই যে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সারা বিশ্বের ভক্তরা শেষ বিশ্বকাপে রোনাল্ডোর সেরা পারফরম্যান্স দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
লিওনেল মেসি : রোনালদোর পাশাপাশি এবারের আসরে মেসিরও শেষ বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। ৩৫ বছর বয়সে, তিনি আমাদের এমন মুহূর্ত দিয়েছেন যা সম্ভবত ফুটবলে পুনরাবৃত্তি হবে না। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারার হৃদয়বিদারক থেকে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের জার্সিতে কোপা আমেরিকা জয়। মেসির জীবনের অনবদ্য প্রাপ্তি। ক্লাব পর্যায়ে জিতেছেন অসংখ্য শিরোপা। সাতবার ব্যালন ডি অর সহ জিতেছেন একাধিক ব্যক্তিগত পুরস্কার। মেসি আশা করছেন এবার ভাগ্য তাকে খালি হাতে ফেরাবে না। তবে প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে তাঁর দল।
নেইমার : এই তালিকায় নেইমার বেশ আশ্চর্যজনক, কারণ তার বয়স এখন ৩০ এবং তার পরবর্তী বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা অন্যান্য বয়সী খেলোয়াড়দের তুলনায় বেশি। তবুও ২০১৪ বিশ্বকাপে নিজেদের ঘরের মাঠে দুর্ভাগ্য। ২০১৮ বিশ্বকাপে একটি হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জন্য তিনি চরম সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। নেইমার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে এটি তার ফিফা বিশ্বকাপের শেষ। সেই সময় হয়ে এসেছে। এবারের বিশ্বকাপে ব্যর্থ হলে তাঁকে যে সমালোচনার মুখে পড়তে হতে পারে, তা বলাই যায়। তবে আশা করি এটি ইতিবাচক হবে না।
ম্যানুয়েল নুয়ের : জার্মানি দলের ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক এবং আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নুয়ের। ৩৬ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক চলতি বিশ্বকাপের জার্মান দলের একজন অন্যতম সদস্য। একজন নতুন ম্যানেজার এবং নতুন প্রতিভাদের সঙ্গে নিয়ে একটি দুর্দান্ত বিশ্বকাপের আশা করবেন ম্যানুয়েল নুয়ের। শেষ বিশ্বকাপে অতীতের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবেন।
লুকা মদ্রিচ : যখন লুকা মদ্রিচের কথা আসে, তাহলে বলতেই হয় ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠের প্রাণভোমরা লুকা মদ্রিচ। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়াটদের ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। রাশিয়া বিশ্বকাপে জিতেছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল পুরস্কার। ক্রোয়েশিয়ার পাশাপাশি রিয়াল মাদ্রিদের অন্যতম প্রধান ভরসা মূল ভিত্তি। আমরা পরবর্তী বিশ্বকাপে অবশ্যই মিস করতে যাচ্ছি একজন মাঝমাঠের এই জাদুকরকে।
লুইস সুয়ারেজ : ক্লাব ফুটবলে সুয়ারেজের একটি অন্যতম ক্যারিয়ার রয়েছে, বার্সেলোনা এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন। নিঃসন্দেহে আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার তিনি। তবে ৩৫ বছর বয়সী তারকার এটিই হবে তার শেষ বিশ্বকাপ। জাতীয় দলের জার্সিতে সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি। এর আগে বিশ্বকাপে বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। যার মধ্যে অন্যতম ২০১০ বিশ্বকাপে তার হ্যান্ডবল খেলার জন্য বা ২০১৪ সালে চেলেনিকে কামড় দেওয়া। বিশ্বফুটবল এবার আশা করবে তিনি আর বিতর্কে জড়াবেন না।
থিয়াগো সিলভা : ব্রাজিল দলের অন্যতম প্রধান থিয়াগো সিলভা ব্রাজিলের হয়ে কোপা আমেরিকা জিতেছেন। ব্রাজিল তাদের ২০০২ সালের জয়ের পর থেকে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে হতাশায় হয়েছে। এই ব্রাজিলিয়ান দলটিকে চূড়ান্ত গৌরব অর্জনের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং তার কেরিয়ারের একটি উচ্চ পর্যায়ে শেষ করা সিলভার উপর অনেকটাই নির্ভর করবে।