।। প্রথম কলকাতা ।।
আপনি কি সুখের চাবিকাঠি খুঁজছেন? ভাবছেন কীভাবে সুখে থাকা যায়? এই পৃথিবীতে এমন এক জায়গা রয়েছে যেখানে টাকা ছাড়াই পাবেন অঢেল সুখ। ধনী গরিবের কোন পার্থক্য নেই। জোর গলায় বলতে পারবেন, আপনি সুখী। বলছি বিশ্বের অন্যতম সুখী দেশ ফিনল্যান্ডের কথা। এখানে মানুষ জানে কিভাবে হাসতে হয়, জানে কিভাবে ভালো থাকা যায়। ভাবছেন টা কি? এখানে সবাই ধনী! মোটেই নয়। একসময়ের গরিব দেশ ফিনল্যান্ড, বহু মানুষ খেতে পেত না। পাত্তা দিত না ইউরোপ। শুরুটা করেছিল একদম শূন্য থেকে। আজ এখানকার মানুষের সুখ দেখে থতমত খায় গোটা বিশ্ব। কেন জানেন? আসল সিক্রেটটা কি? জানলে আপনার ভালো লাগবে। এভাবে আপনিও বাঁচতে পারেন।
১৯৪৫-এ ফিনল্যান্ড ছিল ইউরোপের সব থেকে গরিব দেশের একটি। কিন্তু এখন ফিনল্যান্ডের সিস্টেমটাই আলাদা। অন্যান্য দেশের সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। এখানে হার মেনে যায় শক্তিধর দেশগুলোও। নেই অঢেল টাকা, নেই শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র, নেই ক্ষমতা। তাও ভীষণ সুখী। রয়েছে প্রগতিশীল কর নীতি। মানুষের জীবন যাপনের মধ্যে সুন্দর ভারসাম্য। শিশুরা শিক্ষা পায় বিনামূল্যে। রয়েছে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। গুরুত্ব পায় সমতা। সম্পদ বন্টন করা হয় সবার মধ্যে। জানেন, ফিনল্যান্ডের ৮০ শতাংশ মানুষ তাদের দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পুলিশের উপর অগাধ ভরসা রাখে। তারা জানে তাদের পায়ের নিচের মাটি নিরাপদ। কোন বিপদে পড়বে না। যদিও বা সমস্যায় পড়ে, সমাধান করতে এগিয়ে আসবে প্রচুর মানুষ।
আরেকটা সিক্রেট আছে, যা ফিনল্যান্ডের মানুষকে অন্যান্য দেশের থেকে এক্কেবারে আলাদা করে দেয়। তা হল অন্যকে সাহায্য করার ইচ্ছা ফিনল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন, যদি অন্যকে ভালো রাখা যায় তাহলে নিজেরাও ভালো থাকবেন। তাই তো রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে বারংবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তকমা পেয়েছে ফিনল্যান্ড। পিছু পিছু চলে আসে ডেনমার্ক আইসল্যান্ডের মতো দেশগুলো।
এদেশে সর্বোচ্চ আয়কারী ব্যক্তি আর সর্বনিম্ন আয়কারী ব্যক্তির মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই। প্রত্যেক নাগরিক নিজেদের মতো করে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দুর্নীতির পরিমাণও খুব কম। একে ওপরে এর পাশে দাঁড়ান। গণপরিবহন অত্যন্ত ভালো। যানজটে আটকে যায় না। অথচ ভাড়াও কম। জীবনযাপন নির্ভর করে বিশেষ নীতির উপর। অন্য কারোর প্রত্যাশা পূরণের জন্য নয়, এদেশের মানুষ বাঁচে নিজেদের জন্য। চিন্তাও করেন খুব কম। যেহেতু প্রত্যাশা কম, তাই প্রয়োজনও কম। যেটুকু অভাব থাকে হাত বাড়ালেই পেয়ে যান। এখানে একটা তত্ত্ব ভীষণ জনপ্রিয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন তিনজনকে সাহায্য করে। যেমন কারুর দিকে জলে গ্লাস এগিয়ে দেওয়া, কোন বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে একটু সময় কাটানো। এভাবেই বাড়ায় নিজেদের মনোবল। বেশি করে সময় কাটায় বন্ধু আর পরিবারের সঙ্গে।
দেশটির কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৪০ ভাগেরও বেশি বয়স্ক মানুষ। মানুষ দিলখোলা, আন্তরিক এবং ভীষণ বিনয়ী। কথা বলেন খুব কম। আচরণবিধির মধ্যে স্পষ্ট নীরবতা। অথচ ভীষণ পরিশ্রমী। মাথাপিছু আয় ইউরোপের বহু দেশের থেকে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু মনে করেন, মাসিক ইনকাম তাদের জন্য যথেষ্ট। নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে আদর্শ জায়গা এই দেশ। দেশটাতে প্রতিবছর একটা দিন কিশোরী এবং তরুণীরা ব্যবসা, রাজনীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য খাতের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । একদিনের জন্য হন প্রধানমন্ত্রী। ফিনল্যান্ডবাসী বিশ্বাস করেন, একসাথে অনেক কিছু করা যায়, কিন্তু তা একা করা যায় না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম