।। প্রথম কলকাতা ।।
India China: শেষে ভারতীয় সাংবাদিককে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে চিন। জিনপিং সরকারের কোন গোপন খবর ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল? ভারতও কি পাল্টা বদলা নেবে? বের করে দেবে চিনা সাংবাদিকদের? সাংবাদিকের নামে ভারতে কাদের পাঠাচ্ছে চিন? জিনপিং সরকারের বিপজ্জনক পদক্ষেপ। কোন দিকে গড়াতে পারে গোটা ঘটনা। পরিণতি কথা ভেবেই এমন স্টেপ নিল তো বেজিং? প্রশ্নটা এখন অনেকেই তুলছে ঠিক কোন কারণে ভারতের সাংবাদিককে টার্গেট করা হল? কূটনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, ভারত ও চিন দুদেশের রেষারেষি বা সম্পর্কের তীক্ততার মাঝখানে পড়ে বেহাল দশা হচ্ছে সাংবাদিকদের।
ওপর ওপর এধরণের মন্তব্য হয়ত করে দেওয়াই যায় কিন্তু তাতে লাভ কতটা? গভীরে ঢুকে জানতে হবে বিষয়টা। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদক ছিলেন চিনে থাকা ভারতীয় সর্বশেষ সাংবাদিক। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে চিনে ভারতের আর একজন সাংবাদিকও অবশিষ্ট থাকবেন না। প্রশ্ন উঠছে বেজিংয়ের কি কোনও খবর ফাঁস করে দিয়েছিলেন এই সাংবাদিক? আর সেজন্যই কি দিন দিন অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছিলেন? না বিষয়টা তেমন নয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন বলছে চলতি মাসের শুরুতেও চিনে চারজন ভারতীয় সাংবাদিক ছিলেন এর মধ্যে দুজনের ভিসা স্থগিত করে গত এপ্রিলেই দেশটিতে তাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। আর গত সপ্তাহেই আরেকজন সাংবাদিককে চিন ছাড়তে বাধ্য করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের মতো বৃহত্তম ইকোনমির দেশ সেখানে ভারতের খুব বেশি হলে ৩ থেক ৪ জন সাংবাদিক পাঠানোর অনুমতি রয়েছে। কিন্তু চিন চাইলে ৫০ শের বেশি সাংবাদিক ভারতে পাঠাতে পারে। ভারত নাকি বেজিংয়ের সাংবাদিকদের হেনস্থা করছিল সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তোলে জিনপিংয়ের দেশ।
যদি ভারত এমনটা করেই থাকে তাহলে নেপথ্যে উঠে আসছে বড় কারণ সত্যি সত্যি সাংবাদিকদেরই ভারতে পাঠানো হচ্ছিল তো নাকি তাদের ছদ্মবেশ অন্য কাউকে। ভারত ও চিনের সাংবাদিকেরা এত দিন ধরে দুই দেশেই কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পরই শুরু হয় গন্ডগোল। চিনের দাবি ছিল, গত মাসেই দিল্লিতে অবস্থান করা চিনা রাষ্ট্রীয় দুটি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের বহিষ্কার করেছে ভারত কর্তৃপক্ষ। তবে এ ধরনের অভিযোগকে অস্বীকার করা হয় তৎক্ষণাৎ। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি দাবি করেন শুধু চিনা সাংবাদিকরাই নন সব বিদেশি সাংবাদিকই বাধাহীন এবং স্বাধীনভাবে ভারতে অবস্থান করে মিডিয়া কাভারেজ করতে পারছেন তারা। তবে হয়ত এটুকুই যথেষ্ট ছিল না ড্রাগনের দেশের জন্য৷ সোজা অ্যাকশন শুরু করে দিল বেজিং। এখন পাল্টা ভারত যদি চিনের সব সাংবাদিকদের দেশ থেকে বের করে দেয় তাহলে?
দিল্লির সরাসরি দাবি করছে, ২০২০ সালের পর থেকে কীভাবে হেনস্থা করা হয় সেদেশে ভারতের সাংবাদিকদের। চিনে কোনো ভারতীয় গণমাধ্যমের ব্যুরো অফিস চালাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়োগ করতে গেলে চিনা কর্তৃপক্ষ সেক্ষেত্রে বাধা দেয়। এ ছাড়াও ভারতীয় সাংবাদিকেরা বেজিংয়ে নির্বিঘ্নে চলা-ফেরা অবধি করতে পারেন না। কূটনৈতিক মহল বলছে, এটা জলের মতো পরিস্কার যে ভারতকে পাল্টা চাপ দিতে চিন এই উদ্যোগ নিল। বিষয়টা অনেকটা ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার মতো। কিন্তু এটাও ফ্যাক্ট ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র বলছে চিনের প্রোপাগান্ডা ভারতে বিস্তার করার উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদের নামে পাঠানো হয়েছে কিছু জনকে। হয়ত তাদেরকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছে নয়া দিল্লি৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেও চিনের মতো দেশে থেকে খবর সংগ্রহ করাও একটা বড় কঠিন কাজ সেখানে সবকিছুরই ওপর সরকারের নজর থাকে৷ আপনি সোজা ভাষায় একে খোলা জেলও বলতে পারেন। তারা বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারতকে পড়াতে আসছে শিক্ষার পাঠ। ভাববেন না এমনটা শুধু ভারতের সঙ্গেই হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও গণমাধ্যম নিয়ে দৌরাত্ম্য চলেছ। চিনের হয়ত আগামী দিনে এই ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়াতেও পারে। এই দুই দেশ এখন দেখার ঠিক কোথায় গড়ায় এই ইস্যু৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম