৷৷প্রথম কলকাতা৷৷
Russia-Ukraine war: ইউক্রেনের দেশভক্তিকে কাজে লাগিয়ে মারাত্মক ফায়দা লুটছে দেশটা৷ ইউরোপের শিল্পকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে একটু একটু করে৷ এসবে কিন্তু চিন বা রাশিয়ার কোনও হাত নেই৷ সমস্ত গেম যেন এখন একটা দেশের হাতেই৷ ইউক্রেন যত শেষ হবে ততই যেন লাভ এবার৷ যুদ্ধ থামানোর কোনও দরকারই তো নেই৷ যুদ্ধ যত চলবে ততই লাভ হবে৷ হ্যাঁ আসলে গোপন কূটনীতি এটাই৷ এই ভাবনাটা কিন্তু রাশিয়ার নয় অন্য আরেক দেশের৷ মস্কো যত আগ্রাসন বাড়াবে ইউক্রেন যত তাতে রুখবে লাভ হবে তাতেই৷ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, হঠাত করে একটা যুদ্ধ৷ অনেক দেশই ভেবে উঠতে বা ভবিষ্যতে এমনটা হলে কি পরিকল্পনা নিতে হবে সেটা ভাবতে পারেনি৷ যুদ্ধ লাগল আর শুরু হল জ্বালানি সংকট, মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা সমস্যায়৷ কিন্তু ঠিক তখন এ সংকটকে পুঁজি করেই ব্যবসা করে যাচ্ছে একটা দেশ৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধীরে ধীরে কার্যত ধ্বংস হওয়ার মুখে ইউরোপের শিল্প৷ বা এভাবেও বলা যেতে পারে যে ইচ্ছা করেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে৷ সংবাদমাধ্যম সময় নিউজের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম পলিটিকোতে দেয়া সাক্ষাৎকারে শীর্ষ একজন ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলেন, গভীরভাবে দেখলেই বোঝা যায় এ যুদ্ধ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে তাহলে কেন? কিভাবে? আমেরিকা তো ইউক্রেনকে সাহায্য করছে তাতে নাকি তাদের প্রতিরক্ষায় অস্ত্রের ঘাটতিও দেখা যাচ্ছে৷ আমেরিকা ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলছে তাহলে এগুলো কি সব মুখোশের খেলা? ইউরোপ কি ধরে ফেলতে পারল মার্কিনদের চালাকি?
সংবাদমাধ্যম পলিটিকোতে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, আমেরিকা এই সুযোগে বেশি দামে গ্যাস বিক্রি করছে৷ একইসঙ্গে তারা বেশি বেশি অস্ত্রও বিক্রি করছে৷ তারা এটাও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই অতি মুনাফা হওয়ার লালসাই কিন্তু ইউরোপের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে দিনদিন৷ কারণ তারা মনে করছেন, ইউরোপীয় শিল্পকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে আমেরিকার এই সুপ্ত ইচ্ছা৷ কূটনৈতিক মহলের দাবি, এখানে একটা সরু বিভেদের পথ কিন্তু তৈরি হচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে৷ আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার পশ্চিমা মিত্রদের এমন বিভেদ স্বাভাবিকভাবেই খুশি করছে রাশিয়াকে। কিভাবে আমেরিকা ইউরোপকে জালে জড়ালো সেটা শুনুন এবার৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপীয় অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে৷ রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাস আমদানির দিকে ঝুঁকেছে৷ কিন্তু এজন্য তাদের খরচ হয়ে যাচ্ছে প্রায় চারগুণ বেশি৷
আর আমেরিকা পুরো দমে এর ফায়দা লুটছে৷ তবে ইউরোপের সব দেশ কিন্তু রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমায়নি৷ এটাও একটা পয়েন্ট৷ পাইপলাইন বন্ধ হওয়ায় বিকল্প হিসেবে সমুদ্রপথে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি করছে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও স্পেনের মতো দেশগুলো৷ ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট বলছে, রাশিয়ার গ্যাস আমদানিতে নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে ইউরোপের এই দেশগুলো৷ এর মানে একটু বেশি আমদানিই করে রাখতে চাইছে তারা৷ নয়ত সেই হাত পাততে হবে আমেরিকার কাছে৷ কূটনৈতিক মহল বলছেন, এছাড়াও আরেকটা দিক রয়েছে, ইউক্রেনকে লাগাতার অস্ত্র সহায়তা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে ইউরোপীয় সেনাবাহিনী৷ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামের জন্য তাদের এখন নির্ভর করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। কিন্তু মিত্র বলে কিন্তু সেখানেও ব্যবসা করতে ছাড়ছে না আমেরিকা৷
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেই দিয়েছেন, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ আচরণ নয়৷ তবে ইউরোপ যতই অভিযোগের আঙুল তুলুক না কেন আমেরিকা বলছে, ও এসব কিছুই নয়৷ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেছেন, ইউক্রেনে পুতিনের আগ্রাসন এছাড়াও ইউরোপের বিরুদ্ধে পুতিনের ‘জ্বালানি যুদ্ধের’ কারণেই এ অঞ্চলে গ্যাসের দাম বেড়েছে৷ আমেরিকার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের রফতানি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, যা ইউরোপকে রাশিয়া নির্ভরতা কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। কিন্তু এ সুযোগে আমেরিকা কত লাভ করেছে তা নিয়ে কার্যত স্পিকটি নট ওয়াশিংটন৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম