।। প্রথম কলকাতা ।।
Malaysia Palm Garden Work: মালয়েশিয়ায় প্রবাসীরা পাম বাগানে কাজ করে কত টাকা পান? ভালো করে দেখুন তো, এত কষ্ট করতে পারবেন? পাম ফল গাছ থেকে কেটে মাটিতে নামাতে পারলেই টাকা। মালয়েশিয়ায় টাকা ইনকাম করা কি বড্ড সহজ? পাম বাগানে সারাদিন কাজ করে প্রবাসীরা পান হাজার হাজার টাকা! মাসেই বা আয় কত?
বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ মালয়েশিয়া। এদেশে পাম বাগানে দরকার প্রচুর শ্রমিক। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ মূলত বিদেশী শ্রমিকদের ওপরে নির্ভরশীল। স্থানীয়রা কাজে খুব একটা আগ্রহ না দেখানোয় ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ এবং নেপাল থেকে প্রচুর কর্মী নিয়োগ করা হয়। জানেনই তো, মানুষ সুখের সন্ধানে বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারে। আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য মানুষ গ্রাম থেকে শহর কিংবা দেশের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যায় ভিন দেশে। কিন্তু বাস্তবতা আর প্রত্যাশিত স্বপ্নের মধ্যে মিল অধিকাংশ সময় থাকে না। মালেশিয়ায় যে সমস্ত প্রবাসী কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, অথচ ভিসা নবায়ন হচ্ছে না কিংবা যাদের ওয়ার্ক পারমিট নেই, তারা চরম সমস্যায় পড়েন। পার্টটাইম হিসেবে কাজ করতে হয়, তাও আবার চুরি করে। পুলিশে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। সঠিকভাবে বেতন পান না। কেউ কেউ থেকে যান ‘অবৈধ আদম’ হিসেবে। এক্ষেত্রে তাকে আত্মগোপন করে কাজ করতে হয়। শহরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না, কারণ সেখানে পুলিশের ভয়। তার মানে এই নয় যে, কাজের সুনিশ্চয়তা নেই। মোটামুটি বৈধ ভিসা থাকলে, এই সমস্যাগুলো পোহাতে হয় না।
মালয়েশিয়ায় কাজ করে ইনকাম হয়তো হয় প্রচুর, কিন্তু আবার রিক্সও রয়েছে। মালয়েশিয়ার বিস্তীর্ণ পাম বাগানে সাপ থেকে শুরু করে রয়েছে বন্য বিষাক্ত পোকার ঝুঁকি। তাই কাজ করতে হয় সাবধানে। গোটা বিশ্বের শতকরা ৮০ভাগ পাম তেল উৎপন্ন হয় শুধুমাত্র মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ায়। পাম তেলের আদি উৎস সেই পশ্চিম আফ্রিকা। একটা চার থেকে পাঁচ বছর বয়স বছর বয়সী পাম গাছ থেকে বছরে কমপক্ষে অন্তত ৪০ কেজি পাম হয়। একটা পাম গাছ একটানা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ফল দেয়। শুধু তাই নয়, পাম ফল থেকে তেল নেওয়ার পর, গুরুত্বপূর্ণ বর্জ্য বাগানের সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই পাম ফল থেকে তেল সংগ্রহ করাও ভীষণ সহজ। প্রথমে গাছ থেকে কাঁদিসহ পাম ফল কেটে নামিয়ে পরিষ্কার করে নেয়া হয়। পাকা ফলগুলো জলে ভালো করে সিদ্ধ করা হয়। তারপর সেগুলো হাত দিয়ে বা কোন কাপড় দিয়ে চিপে রস বের করে নেয়া হয়। যেহেতু সেই রসের মধ্যে জলের মিশ্রণ থাকে, তাই রস ভালো করে আগুনে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় তেল।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/717159423939991/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
এবার আসি সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে। পাম বাগানের শ্রমিকদের ইনকাম কত? পাম বাগানে দু’রকমভাবে কাজ করা যায়। একটা কন্ট্রাক্টরের আন্ডারে , আর একটা বেসিকে। মাসে স্যালারি হয় প্রায় ১৫০০ রিংগিত, তবে কোম্পানি অনুযায়ী স্যালারির পার্থক্য রয়েছে। এক রিঙ্গিত সমান বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৩ টাকার বেশি। কষ্ট কিন্তু প্রচুর করতে হয়। তবেই মেলে এই টাকা। পাম গাছ ছোট হলে বড় লোহার দণ্ডের মাথায় লাগানো থাকে খুন্তির মতো ধারালো অংশ। সেটি দিয়ে বেশ গায়ের জোরে মেরে প্রথমে গাছের পাতাগুলো কেটে ফেলতে হয়। তারপর ফল কেটে ফেলতে হয় মাটিতে। সেই ফল বয়ে নিয়ে জড়ো করা হয় গাড়িতে। বড় গাছ হলে তো আরো কষ্ট। তখন বিশাল বড় লম্বা লাঠির মত ইস্পাতের দন্ডের মাথায় কাস্তের মতো ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফল কাটতে হয়। যেমন গায়ের জোরের প্রয়োজন, তেমনি ব্যালেন্সও দরকার। রীতিমত ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে যান শ্রমিকরা। ১০০ থেকে ২০০ ফল কাটলে পাওয়া যায় বাংলাদেশি টাকায় ২৩০০ টাকার মতো, এক একটা গাছে ফল থাকে থাকে প্রায় ১০ থেকে ১২ টা পর্যন্ত। আর প্রবাসী শ্রমিকরা এই এত কষ্ট কেন করেন জানেন? শুধুমাত্র নিজের পরিবারকে একটু ভালো রাখবেন বলে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম