।। প্রথম কলকাতা ।।
ফ্রড কল এলে সেটি না ধরেও কিংবা কোনও ওটিপি কারও সাথে শেয়ার না করেও আপনি সাইবার প্রতারণার শিকার হতে পারেন। ভাবছেন তা কি করে সম্ভব? আসলে নিরাপত্তার স্তর যত মজবুত হচ্ছে ততই নিত্যনতুন কৌশল খুঁজে বের করছে সাইবার অপরাধীরা। যার মধ্যে সাম্প্রতিক এই মিসড কল প্রতারণা। এই পদ্ধতিতে বারবার আপনার ফোনে একটি ভুয়ো নম্বর থেকে মিসড কল আসবে, উক্ত ব্যক্তি যদি ফোন রিসিভও করে অপর প্রান্তে কেউ থাকবেনা। কিন্তু কিছু মুহূর্ত বাদেই দেখবেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে খেপে খেপে সাফ হচ্ছে টাকা।
মিসড কল প্রতারণার শিকার দিল্লির এক ব্যক্তি
সম্প্রতি দিল্লিতে এমনই এক প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক ব্যক্তি। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৮.৪৫ পর্যন্ত এক অপরিচিত নম্বর থেকে বারবার মিসড কল আসে ওই ব্যক্তির নম্বরে। কিন্তু কিছুদিন বাদে অ্যাকাউন্টে চোখ যেতেই চক্ষু চড়কগাছ হয় তাঁর। RTGS এর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে উধাও ৫০ লক্ষ টাকা। কোনও ওটিপিও শেয়ার করেন নি তিনি। পুলিশের অনুমান, এই মিসড কল প্রতারণার পিছনে রয়েছে কুখ্যাত জামতারা সাইবার প্রতারকরা।
আরও পড়ুন : Bluetooth ইয়ারফোন ব্যবহার করেন? পর্দার আড়ালে চলছে বড় হ্যাকিং, যে ভাবে সতর্ক থাকবেন
মিসড কল প্রতারণা কি এবং কীভাবে হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সিম সোয়াপ (Sim Swap Fraud) পদ্ধতি দ্বারা সংগঠিত হয়। এই কৌশলটি অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় অনেকটা আলাদা। প্রথমে, তারা একটি ফিসিং/ভুয়ো মেইল পাঠায় ওই ইউজারের ইমেইল অ্যাড্রেসে। তারপর ওই ইউজারের একাধিক ব্যক্তিগত তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিজিট করে তারা। কোনও কোনও সময় ভুয়ো কাস্টমার কেয়ার ছদ্মবেশে এইসব তথ্য হাতিয়ে থাকে তারা।
এরপর তথ্য সংগ্রহ হয়ে গেলে মিথ্যে কারণ দেখিয়ে যেমন ফোন হারিয়ে গিয়েছে বা সিম নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে ওই ইউজারের নামে অনুমোদিত টেলিকম সংস্থার কাছে গিয়ে ডুপ্লিকেট সিমের আবেদন করেন। সিম সংগ্রহ হয়ে গেলে ওই ইউজারের নম্বরে সেটি অ্যাক্টিভেট করে নেয় তারা। এখানে মজার বিষয় হল, আপনার পরিচয় একবার টেলিকম অপারেটরের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেলে এবং ডুপ্লিকেট সিম ইস্যু ও অ্যাক্টিভেট হলে তাদের পক্ষ থেকে আগের সিমটি ব্লক করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : পাসওয়ার্ড ছাড়াই লগইন! গুগল ক্রোম ব্রাউজার নিয়ে এল ফাটাফাটি সুবিধা
যেহেতু ওই ডুপ্লিকেট সিম প্রতারকদের কাছে রয়েছে তাই ইউজারের ফোন কল, টেক্সট মেসেজের অ্যাক্সেস পেয়ে যায় তারা। তাছাড়া বর্তমানে একটি ফোন থেকেই বড় বড় অংকের আর্থিক লেনদেন কয়েক সেকেন্ডে হয়ে যায়। পরবর্তী ধাপে প্রতারকরা ইউজারের ফোনে RTGS লেনদেন শুরু করতে এবং OTP অ্যাক্টিভেট করতে ব্ল্যাঙ্ক কল বা মিসড কল করতে শুরু করে।
কীভাবে সাবধানে থাকবেন?
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে সবচেয়ে বড় সাবধানতা হল সচেতন ও সতর্ক। যে কোনও প্রকার ভুয়ো কিংবা ফিসিং মেইলের প্রতিক্রিয়া দেওয়া থেকে বিরত থাকা, ওই মেইলে কোনোরূপ লিঙ্কে ক্লিক না করা, অজানা অপরিচিত সাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা, টেলিকম অপারেটরের নামে ফোন এলে যাচাই করা, নিজের অজান্তেই কোনও ওটিপি বা মেসেজ এলে তা যাচাই করা, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বা দপ্তরে অভিযোগ করা উচিত।