।। প্রথম কলকাতা ।।
Momo: হালকা খিদের ছোট্ট সমাধান মোমো (Momo)। সন্ধ্যে হলেই কিংবা বিকেল রাস্তার দু’ধারে দেখা যায় মোমোর দোকান। অফিস ফেরত যাত্রীরা নিজেদের খিদে মেটাতে হাতে তুলে নেন গরম গরম মোমোর প্লেট। সাথে থাকে চাটনি আর স্যুপ। ভারতীয়রা এই খাবারটিকে এক্কেবারে আপন করে নিয়েছে। বিশেষ করে মাছে ভাতে বাঙালির কাছে অত্যন্ত প্রিয় খাবার হয়ে উঠেছে মোমো। এই মোমোর নাম ছিল নাকি মগমগ। সেই মোমো থেকে মগমগের যাত্রা পথ কেমন ছিল? মাছে ভাতে বাঙালির মন চুরি করেছে মোমো। গত দশ বছর আগেও অনেক মানুষই মোমোর নাম জানতেন না। আর এখন, বিরিয়ানি যদি হয় রাজা তাহলে মোমো তার মন্ত্রী। ভারতবর্ষের অলিতে গলিতে স্ট্রিটফুডের দোকানে অন্যতম জায়গা করে নিয়েছে মোমো।
তিব্বতকে মোমোর জন্মস্থান বলা হয়। একসময় দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল প্রচলিত ছিল এই খাবারটি। তিব্বত থেকেই প্রতিবেশী অঞ্চল দার্জিলিং সিকিম এবং নেপালে এর প্রতিপত্তি ছড়িয়ে পড়ে। কোরিয়ার খাদ্য মান্ডু বা চিনের বাওজি থেকে শুরু করে জাপানের গিয়জার সাথে তুলনীয় এই মোমো। তিব্বতে মোমোকে বলা হয় মগমগ। যার অর্থ চলন। তিব্বতি ভাষায় অনুসারে মোমো কথার অর্থ হল বাষ্প। সাধারণত মোমো বাষ্পের মধ্যেই সিদ্ধ করা হয়। এই খাবারটি আসামে মম , চিনে পিনইন এবং নেপালে মমচা নামে পরিচিত। এইসব নামের সাথে মেলবন্ধন করেই ভারতে এই খাদ্যটির নাম হয় মোমো।
সাধারণত মোমো দুই প্রকারের, একটি ভাপা এবং অপরটি ভাজা। বর্তমানে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট নানান ভাবে নানান স্বাদের মোমো বানিয়ে থাকে। স্যুপ এবং সসে ডুবিয়ে মোমো পরিবেশন করা হয়। কোথাও বা আবার দেওয়া হয় টমেটোর টক ঝাল চাটনি। পশ্চিমবঙ্গে মোমো পরিবেশন করা হয় স্যুপ এবং চাটনি দিয়ে। নেপালের নেওয়ার ব্যবসায়ীরা সর্বপ্রথম তিব্বত থেকে মোমোর সন্ধান পান। ধীরে ধীরে তা নেপালের তুলাধর জাতির কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই সময় নেপালে মোষের মাংস অত্যন্ত সহজলভ্য ছিল। তাই মোমোর পুর বানানো হতো মোষের মাংসের কিমা দিয়ে। বর্তমানে মোমোর পুরে সবজি থেকে শুরু করে নানান মাংসের পুর দেওয়া থাকে। আপনি আপনার পছন্দের স্বাদের মোমো বেছে নিতে পারেন।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি জন আন্দোলনের ফলে নেপালে বেশিরভাগ মানুষের কাছে প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে মোমো। তারপর ধীরে ধীরে নেপালের জনগণ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে গেলে তাঁদের থেকেই সারা বিশ্ব পরিচিতি লাভ করে মোমোর সম্পর্কে। বর্তমানে চাউমিন, পাস্তা, ইডলি, ধোসার মতো জনপ্রিয় ফাস্টফুডগুলিকে পিছনে ফেলে দিয়ে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিয়েছে মোমো। তৈরি করতে সময় লাগে কম, অথচ অতুলনীয় স্বাদে উদরপূর্তি হয় খুব তাড়াতাড়ি, তাই হয়তো মানুষের মনকে হরণ করতে পেরেছে মোমো।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম