।। প্রথম কলকাতা ।।
নবমী-নিশি, হইও না অবসান। নবমীতে এটাই সকলের মনের কথা হয়ে ওঠে। সারা বছর ধরে যে উৎসবের জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি, তার বিদায় ঘন্টাটা বাজিয়ে দেয় নবমী নিশি। তাই নবমী নিশিকে আমরা সবাই ধরে রাখতে আকুতি জানাই। তবে নবমী পুজোর গুরুত্ব অনেক। সেই পুজো করার পর থাকে ফলের আকাঙ্ক্ষাও।আসুন তাহলে নবমী পুজোর মাহাত্ম্য ও বিধি জেনে নিই।
আমাদের সমস্ত তিথি-নক্ষত্র হিসাব করা হয় চন্দ্রের অবস্থান দেখে। সেই অনুযায়ী মাসের তিরিশ দিনকে শুক্ল ও কৃষ্ণ এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই শুক্লা নবমীকে শাস্ত্রে বলে ‘উগ্রপদা’। নবমী তিথিতে মানুষের নাকি উত্তেজনা বাড়ে। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অপরাধের প্রবণতা বাড়ে। অশুভত্বের দিকে মানুষ নবমীতে বেশী ঝুঁকে যায়। এই অশুভত্বকে বিনাশ করে শুভশক্তির জয়ের জন্য আমরা সেই দেবী দুর্গারই শরণ নিই। এই মহানবমী তিথিকেই অন্য নবমী তিথির মধ্যে শুভ ধরা হয়।তাই জপ, তপ, উপাসনাএই তিথিতে বেশি করা হয়।
আদিশক্তি দুর্গার রূপ ধারণ করে মহিষাসুরের সঙ্গে টানা আট দিন যুদ্ধ করে নবম দিনে মহিষাসুরকে বধ করেন।নবমী তিথি শুরুই হয় সন্ধিপুজো দিয়ে। সন্ধিপুজো হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিট জুড়ে। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা হয় এই সময়ে।একশো আটটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও একশো আটটি পদ্মফুল নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে। নিবেদন করা হয় রান্না করা ও কাঁচা সবজি, ফলও।
অষ্টমীতেই মূলত অঞ্জলি দেওয়া হয়, সেটাই প্রশস্ত। তবে নবমীতেও অঞ্জলি দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে নবমী এই ক’দিনের তুঙ্গ মূহুর্ত বলেই এই দিনে সাধারণত দেওয়া হয় অঞ্জলি। নবমীর অঞ্জলির আলাদা কোনো নিয়ম নেই, তা অষ্টমীরই মতো। মন্ত্রোচ্চারণ করে তিনবার পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রণাম করতে হয়। নবমীর বিশেষত্ব হোম-যজ্ঞ অনুষ্ঠানে। নবমীতেই মূলত হোম হয়ে থাকে। পরিবার ভেদে ব্যতিক্রমী নিয়মও থাকতে পারে। মূলত আঠাশটা বা একশো আটটা নিখুঁত বেলপাতা লাগে। বালি দিয়ে যজ্ঞের মঞ্চ বানিয়ে নেওয়া হয়। বেলকাঠ নিয়মমতো সাজিয়ে পাটকাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে ঘি’তে চুবিয়ে বেলপাতাগুলো নিবেদন করা হয়। তারপর সবার শেষে একটি কলা চেলীতে বেঁধে পান নিয়ে সেটা ঘি’তে চুবিয়ে পূর্ণাহুতি দেওয়া হয়। তারপর তার মধ্যে দই দেওয়া হয় ও দুধ দিয়ে আগুন নেভানো হয়।
মহানবমীর দিন নিয়ম মেনে দেবীর পুজো করলে সাফল্য, শক্তি ও সম্পদ আসে। সিদ্ধিদাত্রী দেবী মহাবিদ্যার আটটি সিদ্ধি দান করেন। সেইকারণে এদিন সমস্ত ভক্তরা আন্তরিক চিত্তে তাঁর পুজো করেন। হিন্দুদের বিশ্বাস যে, সমস্ত দেব-দেবীরাও দেবী সিদ্ধিদাত্রীর কাছ থেকে সিদ্ধি লাভ করেছেন। এই দিনে দেবী সিদ্ধিদাত্রীর আরাধনা করলে ভক্তরা দুর্গাপুজোর শুভ ফল লাভ করেন। জীবনে সাফল্য লাভ হয় অতিসহজে। এইদিনে বিশেষ আরতি করা হয়। সেই আরতি করলে জীবনের সব ইচ্ছা পূরণ হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম