।। প্রথম কলকাতা ।।
ফুল দিয়ে সাজানো ট্রেনের কামরা। শিয়ালদাগামী ট্রেন তখন ছুটছে পরের স্টেশনের দিকে। এর মধ্যেই হচ্ছে মন্ত্রপাঠ। বিশ্বকর্মার মূর্তি এনে চলন্ত ট্রেনের কামরাতেই হল পুজো। ট্রেনে কেন এই আয়োজন? ১ বছর বা ২ বছর নয়! এই পুজোর বয়স দেখতে দেখতে ১৬ বছর। সপ্তাহের পাঁচদিন সফর সঙ্গী। বয়সের বাধা নেই একটা অন্যরকম বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ট্রেনেই। এবারও ট্রেনের কামরায় বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করলেন নিত্যযাত্রীরা।
প্রতিদিন একই ট্রেনে করে কর্মস্থলে পৌঁছে যান সবাই। আবার দেখা হয় পরদিন একই সময়। ঠাকুর কিনে নিজেরাই কামরায় কাঁধে করে নিয়ে যান যাত্রীরা। সকালে ট্রেনে উঠেই পুজোর আয়োজকরা কামরার ভিতরটা সাজিয়ে ফেলেন। ট্রেনে যাতায়াতের পথেই কেনাকাটি করে রাখা হয়। কামরার দরজায় পুজোর রীতি মেনে লাগানো হয়েছে কলাগাছ। রীতিমতো ঢাকঢোল এনে, কাঁসর বাজিয়ে পুরোহিততের মন্ত্রোচ্চারণে হল যন্ত্রের দেবতার পুজো। শান্তিপুর স্টেশনে পুজো শুরু হয় শেষ হতে হতে ট্রেন তখন ব্যারাকপুরে। বিশ্বকর্মার কাছে একটাই প্রার্থনা সময়ে চলুক ট্রেন। পুজো শেষে যাত্রীদের প্রসাদ বিতরণও করেন উদ্যোক্তারা। নিজেরাই চাঁদা তুলে এতো কিছুর আয়োজন করেন।
কেন বছর বছর পুজোর আয়োজন করছেন নিত্যযাত্রীরা? যে ট্রেন ছাড়া জীবন অচল কত মানুষের রোজগার নির্ভর করে ট্রেনের উপরই তাই সকলের মঙ্গল কামনাতেই চলন্ত ট্রেনেই করা হয় পুজো। এই একদিন কাজ রেখে ট্রেনেই চুটিয়ে আনন্দ করেন সকলে। আয়োজকদের পাশাপাশি অনান্যরাও এগিয়ে আসেন। প্রতিদিন নতুন নতুন যাত্রী আসেন। পুরনোদের সাথে মিশে যান নতুনরাও। কিন্তু এই পুজো কোনওদিনও বন্ধ হববে না। এক প্রজন্ম যাবে। আরেক প্রজন্ম শুরু করবে বাবা বিশ্বকর্মার আরাধনা। টচলন্ত ট্রেনেই হবে উৎস।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম