।। প্রথম কলকাতা ।।
Koromondo Express: ৫ দিন পর আবার গড়াল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চাকা। সময়ের বেশ কিছুক্ষণ আগেই শালিমার স্টেশনে পৌঁছে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। স্টেশনে তখন যাত্রীদের হুড়োহুড়ি কিন্তু কোথাও যেন মনের মধ্যে খচখচটা রয়েই গিয়েছে। ঘড়ির কাঁটায় যখন ৩ টে ২৬ মিনিট ধীরগতিতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস শালিমার স্টেশন থেকে রওনা দিল চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর সঙ্গেই বুকটা খানিকটা যেন কেঁপে উঠল। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার ৫ দিন কেটে গিয়েছে। প্রাণ গেছে শয়ে শয়ে মানুষের। আতহরা ভর্তি বিভিন্ন হাসপাতালে। দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় রেল দুর্ঘটনা। কাছের মানুষকে হারিয়েছেন কতজন। লাশের স্তূপের মধ্যে নিজেদের আপনজনকে মরিয়া হয়ে খুঁজেছেন। হাজার বার ডেকেও সাড়া মেলেনি। রাত বাড়লেই সেই সব কাতর মানুষের আর্তনাদ দূর থেকে ভেসে আসছে ওড়িশার বাহানাগা গ্রামে।
প্রতিদিন দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ট্রেনে যাতায়াত করেন কয়েক লক্ষ মানুষ । কেউ রোজগারের তাগিদে, কেউ চিকিত্সার কারণে, কেউ আবার বেড়ানোর নেশায়। ওড়িশায় এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পর থেকে রাতে ট্রেনে আর দুচোখের পাতা এক করতে পারছেন না বহু যাত্রী। চোখ বুজলেই সেই দুঃস্বপ্ন ফিরে ফিরে আসছে। যাত্রাপথে ছুঁয়ে যাবে শুক্রবারের সেই বালেশ্বরের অদূরে বাহানগা বাজার স্টেশন। বুধবার যখন আপ লাইনে শালিমার থেকে করমণঅডল এক্সপ্রেস ছাড়লো তখন কোনও মায়ের মনে ছেলে হারানোর আশঙ্কা কারোর আবার স্বজন হারানোর ভয় একবার হলেও জেগে উঠেছিল। ট্রেন যখন ছাড়ল বহু যাত্রী চাপা উত্তেজনায় তাকালেন জানলার বাইরে। এই যাত্রা কেমন হবে জানিনা, সুস্থ হয়ে যেন ফিরে আসতে পারি, করমমঅডল এক্সপ্রেসে ট্রেন যাত্রার আগে ভগবানের কাছে প্রার্থনা এই যাত্রীর।
BT…..মহিলা শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইমুখী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই রুট ধরেই আজকে এগিয়ে যাবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। লাইনের ধারে এখনও দুঘর্টনার ধ্বংসাবশেষ কত মানুষের আশা, ভরসা নিমেষের মধ্যে একটা দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে। কাছের মানুষকে হারিয়ে হয়তো প্রাণ খুলে হাসতে ভুলে গিয়েছেন অনেকে। কিন্তু সময় তো কারোর জন্য থেমে থাকে না। দক্ষিণ ভারতে এরাজ্যের বহু মানুষ রোজগারের জন্যে ছুটে যান। তাঁদের কাজের জন্য যেতে তো হবেই। দুর্ঘটনার স্মৃতি নিয়েই বুধবার ফের নতুন করে যাত্রা শুরু। হাওড়া থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস যাত্রা শুরুর দিনেই জোর হোঁচট খেল ট্রেনটি। আতঙ্ককে সঙ্গী করে ট্রেনে চেপেছিলেন যাত্রীরা। সাঁতরাগাছি স্টেশনে পৌঁছতেই কামরার এসি খারাপ হয়ে যায়। তবে পরে অবশ্য ঠিক হয়ে যায় সেই সমস্যার। সংবাদমাধ্যমে এমনই তথ্য দাবি করা হয়েছে ট্রেনটি ছাড়লেও উদ্বেগ পুরোদমে রয়েছে যাত্রীদের মধ্যে।
ডাউন লাইনে করমণ্ডলের পরিষেবা অবশ্য চালু ছিল।বুধের দুপুরে আপ লাইনে করমণ্ডল ট্র্যাকে ফিরলেও বিপর্যয়ের পঞ্চম দিনেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি দক্ষিণ ভারতগামী ট্রেন চলাচল। এদিনও বাতিল করা হয়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। শনিবার থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছিল রেললাইন উদ্ধারের কাজ। কারণ, ওই গুরুত্বপূর্ণ রুটে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয়। রবিবার সময় তখন রাত ১০টা ৪০ মিনিট। প্রায় এক ঘণ্টা বাদে রাত ১১টা ৩৯ মিনিটে চালানো হয় আরও একটি মালগাড়ি। তবে আপ লাইনে প্রথম ট্রেনটি চালানো হয় রবিবারই রাত ১২টা ৫ মিনিটে। আতঙ্ক কাটিয়ে সব রেলযাত্রীদের যাত্রা শুভ হোক। এটাই প্রার্থনা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম