।। প্রথম কলকাতা ।।
উত্তাল সমুদ্রে কি ভাসছে ওটা? কৌতূহলের বসে নৌকা এগিয়ে নিয়ে যায় মৎস্যজীবি। কিছুটা গিয়েই চোখ কপালে ওঠে তাঁর। গণেশ মূর্তির পাটাতন আঁকড়ে ধরে ভাসছে ছোট্ট একটা ছেলে। না, কোনও চিত্রনাট্য নয়, একদম বাস্তব ঘটনা। তবে যা ঘটেছে তা জানলে গা কাঁটা দিয়ে উঠবে। কথায় বলে রাখে হরি মারে কে? আবারও একবার প্রমান হয়ে গেলো তা! একের পর এক উত্তাল ঢেউ পারেনি ছোট্ট ছেলেটিকে সমুদ্রের অতলে তলিয়ে দিতে। টানা ২৪ ঘন্টা লড়াই করে গণেশকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে ছিল ছেলেটি। ছেলে কে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের সুরাট শহরে। গণেশ বিসর্জন এর দ্বিতীয় দিন প্রায় দুপুর ১ টা নাগাদ পরিবারের সাথে ডুমাস সি-বিচে বিসর্জন দেখতে যায় লক্ষণ নামের একটি কিশোর। সমুদ্র স্নান করতে গিয়ে হটাৎ তলিয়ে যায় ১৩ বছরের কিশোর। ওই কিশোর তো বটেই কিশোরের পরিবারের লোকেরাও সাঁতার জানেতেন না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা, ঘোরাঘুরির পর এক প্রকার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন। ভেবেই নিয়ে ছিলেন ছেলে আর বেঁচে ফিরবে না।
বড় বড় ঢেউ, তার মধ্যে সাঁতার না জানা এক ১৩ বছরের কিশোর! কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর, আজ পর্যন্ত কেউ জীবিত ফিরেছেন বলে নজির নেই। ফলে হাল ছেড়ে দিয়ে তারা বাড়ি ফিরে যান। ডুমাস থানায় নিখোঁজ ডাইরি করেন পরিবারের লোকজন। পুলিশ প্রশাসন ডুবুরি দিয়ে খোঁজাখুজি শুরু করে। তাতেও লাভ হয়নি কিছুই। খোঁজ মিলল না লক্ষণের। শোকাহত পরিবার! ছেলেকে হাড়ানোর শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন লক্ষণের মা বাবা। ভেবেই নিয়ে ছিলেন আর কোনও দিনও ছেলে জীবিত পাবেন না।
কিন্তু ২৪ ঘন্টা পর ঘটলো মিরাক্কেল। আরব সাগরের সৈকত থেকে ১৮ নটিক্যাল মাইল দূরে এক মৎসজীবি হটাৎই সমুদ্রে কিছু একটা ভাসতে দেখলেন। কৌতূহলে ভর করে নিজের নৌকো সেদিকে এগিয়ে নিয়ে যান ওই মৎস্যজীবী। কিছুটা কাছে যেতেই যা দেখলে তাতে কপালে উঠল তাঁর। একটা গণেশ মূর্তির পাটাতন মাঝদরিয়ায় দুলছে। আর সেটা আঁকড়ে ধরে ভাসছে ছোট্ট একটা ছেলে। জলে হাবুডুবু খেতে খেতে টানা ২৪ ঘন্টা খড় কুটোর মতো ওই প্লাইউডের পাটাতনকে জড়িয়ে ধরেছিল লক্ষণ। এটা দেখে আর কোন কিছু না ভেবেই দ্রুত গিয়ে ছেলেটিকে নৌকায় তুলে নিলেন তিনি। এভাবেই সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরল গুজরাটের ১৩ বছরের কিশোর লক্ষণ।
পরদিন পরিবারের কাছে প্রশাসনের তরফে খবর যায় আপনার ছেলে জীবিত রয়েছে। আপনি দ্রুত যোগাযোগ করুন। এই খবর শুনে তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। এমনকী ছেলের নব জীবনের আশা তারা ছেড়ে দেওয়ার পর এভাবে ফিরে আসায় তারা অভিভূত হন। সবটাই সিদ্ধিদাতা গণেশের কৃপা বলে মনে করছেন তাঁরা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম