।। প্রথম কলকাতা ।।
Odisha Train Accident: করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গেই দুটোর ট্রেনের দুর্ঘটনা এটাও সম্ভব। ঠিক কীভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল শুনলে আঁতকে উঠবেন রেলের দুর্ঘটনা রোখার ‘কবচ’ পদ্ধতি কি ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসে? LHB কামরা ছিল না করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। কেন বদলানো হয়নি ট্রেনের পুরোনো বগি? একটা নয় দুটো নয় তিন তিনটে ট্রেনের একসঙ্গে অ্যাক্সিডেন্ট। এমন ঘটনা ভারতের ইতিহাসে কোনওদিন ঘটেছে বলা মনে করা যাচ্ছে না। কোনও মুখোমুখি ধাক্কা নয় জানা যাচ্ছে পাশপাশি ধাক্কা কারণে এমন বিপত্তি।
কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব?
করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এক একটা বগির যা অবস্থা তাতে ভিতরে থাকা মানুষগুলো কী অবস্থা হতে পারে ভেবেই আঁতকে উঠতে হয় এক্ষেত্রে লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা থাকলে কি ক্ষয়ক্ষতি আরও কম হত? ট্রেন বিশেষজ্ঞরা বলছেন মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, মালগাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। কিন্তু, প্রাথমিক তদন্তের পর রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয় মুখোমুখি নয় তিনটি ট্রেনেই ধাক্কা লেগেছিল পাশাপাশি। আর তাতেই এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেল জানিয়েছে, যে গতিতে ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং যশবন্তপুর বা হামসফর এক্সপ্রেস ট্রেনই দুটি তাতে মুখোমুখি ধাক্কা লাগলে কখনও একটি ট্রেনের উপর আরেকটি ট্রেন উঠে যেত না। আর যেহেতু মুখোমুখি ধাক্কা লাগেনি তাই কবচ পদ্ধতিতে নিয়ে প্রশ্ন করাটাই বৃথা।
রেলের ইঞ্জিনিয়াররা অবস্থা খতিয়ে দেখার পর মনে করছেন শালিমার স্টেশন থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে যখন ট্রেনটি পৌঁছয় সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিল যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস। সুপারপাস্ট করমণ্ডল এক্সপ্রেস বেশ গতিতে চলছিল তবে, যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের গতি খুব বেশি ছিল না। দুটি ট্রেন পাশাপাশি একে অপরকে অতিক্রম করার সময় কোনও ভাবে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল। আর তখনই পাশ থেকেই ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে। সেই ধাক্কায় লাইন থেকে ছিটকে যায় প্রচণ্ড গতিতে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসও।
রেল কর্তাদের অনুমান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের পাশের ট্র্যাকে ছিল আরেকটি মালগাড়ি। সেই মালগাড়িটিকে পাশাপাশিই ধাক্কা মারে লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এরপর মালগাড়িটির উপরে উঠে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। কতটা মর্মান্তিক বুঝে নিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবথেকে দুর্ভাগ্যের বিষয় করমণ্ডলে ছিল না LHB কামরা। সাধারণ কামরার থেকে LHB কামরা বেশ কয়েকটি মাপকাঠিতে অনেক উন্নত। LHB কামরার প্রধান বৈশিষ্ট্য, ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লেও এটি উল্টে যায় না। জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি LHB কামরার ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা নেই বললেই চলে। সঙ্গে থাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি নিউম্যাটিক ব্রেক। ট্রেন তীব্র গতিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলেও এর মাধ্যমে আচমকা গতিবেগ কমে যাওয়াকে অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়।
যেভাবে গ্যাসকাটার দিয়ে কেটে এখন বের করতে হচ্ছে যাত্রীদের LHB কামরা থাকলে বহু প্রাণ বেঁচে যেত। ২০০০ থেকেই এই LHB কামরা ব্যবহার করছে ভারতীয় রেল৷ কিন্তু এখনও সব মেল-এক্সপ্রেসে চালু করা যায়নি৷ শুক্রবারের দুর্ঘটনা ফের পুরোনো প্রশ্নটা তুলে দিল কবে আর একটু নিরাপদ হবে রেল সফর?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম