।। প্রথম কলকাতা ।।
Onion Price: মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করেন কৃষকরা (Farmer)। যখন সেই ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না তখন কেমন পরিস্থিতি হয় তার চেনা পরিচিত ছবি সবারই জানা। ভারতের কৃষকরা নাকি তাদের উৎপাদিত পিয়াঁজ (Onion) মাঠের এক জায়গায় একত্র করে জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কেন? তাহলে কি পিয়াঁজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে না? কিন্তু খুচরো বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখতে পাবেন পিয়াঁজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে এবং দামও ভালোই।
বিবিসি নিউজ বাংলাতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) ২০২৩ এ অতিরিক্ত পরিমাণে পিয়াঁজ হয়েছে, কিন্তু কৃষকরা যথাযথ পরিমাণে সেই পিঁয়াজ বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না। আসলে বিক্রি করতে গেলে তারা খরচের অর্ধেক দামও পাচ্ছেন না। যার কারণে পিয়াঁজ অতিরিক্ত ফললেও তাদের মুখে হাসি নেই। উল্টে তারা বিপাকে পড়েছেন। বাড়তি ফলনের কারণে একেবারেই বাজারে পিয়াঁজের দাম পাচ্ছেন না, তাই ঠিক করেছেন পিয়াঁজ পুড়িয়ে দেবেন। পিয়াঁজের দাম এতটাই কমে গিয়েছে যে কেজি প্রতি প্রায় দুই তিন টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই কৃষকরা মনে করছেন, দুই তিন টাকা কেজি দরে পিয়াঁজ বিক্রি করার থেকে ফসল জমিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া ভালো। শুধু পিয়াঁজ নয় এই তালিকায় রয়েছে আলু, টমেটো সহ বিভিন্ন সবজি। কৃষকরা জমি থেকে ফসল না তুলে জমিতেই তা নষ্ট করে দিচ্ছেন।
কৃষকদের যন্ত্রণার এই ছবি মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার। প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী, কিছুদিন আগেই ওই জেলার কৃষক কৃষ্ণ ডংরে হোলির আগের দিন হোলিকা দহন অনুষ্ঠান করেছেন নিজের জমিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সেই সমস্ত ছবি ভাইরাল হয়েছে। এ যেন এক অন্যরকম হোলিকা দহন। এই উৎসবে মূলত শুকনো কাঠ পোড়ানো হয়। সেখানে ওই ব্যক্তি হোলিকা দহন পালন করেছেন নিজের ফসলের জমিতে। শুকনো খরকুটোর পরিবর্তে তিনি ব্যবহার করেছেন প্রায় ১৫ হাজার কেজি পিয়াঁজ। এই হোলিকা দহন ওই কৃষকের কাছে একেবারেই অনুষ্ঠান ছিল না। তিনি নিজের চোখে দেখেছেন তার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফসল কিভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা তিনি নিজের হাতে ফলিয়েছেন। ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়ে চাষ করেছিলেন, অথচ উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে পারলেন না। উপরন্তু মাথায় চাপল ঋণের বোঝা। এখন তার চিন্তা ব্যাঙ্কের দেনা কিভাবে শোধ করবেন।
এই দৃশ্য শুধুমাত্র একটা কৃষক পরিবারের ছবি নয়। মহারাষ্ট্রের হাজার হাজার পিয়াঁজ চাষী পরিবারের ছবি। শিশুর বায়না করা ১০ টাকার আইসক্রিমের কিনতে গেলে বিক্রি করতে হবে প্রায় পাঁচ কিলো পিয়াঁজ অর্থাৎ পাঁচ কিলো পিয়াঁজের দাম একটি আইসক্রিমের দামের সমান। এত কম টাকায় পিয়াঁজ জমি থেকে তুলে বিক্রি করতে গেলে লোকসানের বোঝা বাড়বে। তাই কেউ ক্ষেতের পিয়াঁজ পুড়িয়ে ফেলছেন, আবার কেউ বা ট্রাক চালিয়ে জমিতে ফসল নষ্ট করে দিচ্ছেন।
আগে বেশিরভাগ পিয়াঁজ চাষ হত মহারাষ্ট্রে কিন্তু ধীরে ধীরে মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাতেও পিয়াঁজ চাষ শুরু হয়েছে। যার কারণে বিপাকে পড়েছেন মহারাষ্ট্রের পিয়াঁজ চাষীরা। বাজার পরিস্থিতি এখন ভাগ হয়ে গিয়েছে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ আর মহারাষ্ট্রের মধ্যে। যার কারণে কিছুটা হলেও লোকসানের মুখ দেখছে মহারাষ্ট্র। কয়েকদিন আগেই যেখানে চাষীরা কুইন্টাল প্রতি পিয়াঁজের দাম পেয়েছেন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। হোলির পরের দিন খোলা বাজারে সেই দাম কুইন্টাল প্রতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ টাকা। কিন্তু তাও ক্ষতি বোঝার চাপছে চাষীদের ঘাড়ে। যার কারণে অন্য দেশের রপ্তানিতেও লাগাম পড়েছে। বাংলাদেশে (Bangladesh) ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানির (Export) পরিমাণ অনেকটা কমেছে বলে দাবি রিপোর্টে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম