।। প্রথম কলকাতা ।।
Ethiopia: একটা গোটা দেশে পিছিয়ে রয়েছে সমগ্র বিশ্ব থেকে। না, অর্থনৈতিক দিক কিংবা শিক্ষাগত দিক থেকে নয়। বরং পিছিয়ে রয়েছে সময়ের দিক থেকে। এদেশের ক্যালেন্ডারের পাতা বদলায় দেরিতে। যার কারণে বিশ্বময় বর্তমানে ২০২২ সাল চললেও সেই দেশে কিন্তু এখন ২০১৩। শুনতে অবাক লাগছে? নিশ্চয়ই ভাবছেন এও আবার সম্ভব নাকি ! এটা সত্যিই সম্ভব। আর সম্ভব হবে নাই বা কেন? যে কোন দেশের অধিকার রয়েছে নিজের দেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। পূর্ব আফ্রিকার ইথিওপিয়াও তো সেটাই করেছে।
আজকের এই প্রতিবেদনে ইথিওপিয়ার সময় চক্রের বর্ণনা রইল। সে দেশের সময় খানিকটা বেশিই আসতে চলে। কারণ অন্যান্য দেশের তুলনায় ওই দেশটি ৭ বছর ৮ মাস পিছিয়ে রয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আমাদের বছর বারো মাসে শেষ হয়ে গেলেও তাদের বছর কিন্তু শেষ হতে আরও একটি মাস সময় লাগে। অর্থাৎ তেরো মাসে পূর্ণ হয় ইথিওপিয়ার এক বছর। আসলে এই সময় নিয়ে গন্ডগোলের মূলে হল ক্যালেন্ডার। বিশ্বের প্রায় সব দেশই বর্তমানে ব্যবহার করে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার। কিন্তু ইথিওপিয়া এখনও পর্যন্ত ব্যবহার করছে অর্থোডক্স ক্যালেন্ডার তথা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার।
এই দুটি ক্যালেন্ডার এর মধ্যে মূল পার্থক্য হল যীশু খ্রিস্টের জন্মের বছরটির হিসেব। প্রথমে যদিও অর্থোডক্স ক্যালেন্ডারই প্রচলিত ছিল গোটা বিশ্বে কিন্তু পরবর্তীতে যখন গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার আসে তখন সময়, দিন ,মাস, বছর সমস্ত কিছু মাপার পদ্ধতি বদলে গিয়েছিল। সেই নয়া পদ্ধতি মেনে নিয়েছিল বহু দেশ। কিন্তু যারা মানতে চাননি তাদের মধ্যে অন্যতম হল ইথিওপিয়া। এখনও পর্যন্ত তাঁরা অর্থোডক্স ক্যালেন্ডার ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সম্পূর্ণ ক্যালেন্ডারটাই যখন অন্য তখন নববর্ষ পালনের রীতিও নিশ্চয়ই অন্যই হবে। সেখানে নতুন বছর শুরু হয় ১১ সেপ্টেম্বর থেকে। আর যদি সেটি লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ হয় তাহলে শুরু হবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। আমাদের কাছে এই ব্যাপারটা শুনতে বেশ জটিল মনে হলেও ইথিওপিয়ানদের কাছে কিন্তু এটা তেমন বিরাট কোন অঙ্ক নয়। তাদের প্রত্যেকটি মাসে ৩০ টি করে দিন থাকে। আর ১৩ তম যে মাসটি রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত ছয় -সাতটি দিন থাকে। যাকে বলা হয় ফরগটন ডেজ।
এই ধরনের ক্যালেন্ডারে ইথিওপিয়ানদের কোন সমস্যাই হয় না। কিন্তু সমস্যা হয় অন্যান্য দেশের বাসিন্দাদের। এই ধরুন বাইরে থেকে কেউ যদি ইথিওপিয়ায় বেড়াতে যেতে চান তাহলে তাকে হোটেল বুকিং করতে বা ফ্লাইট বুকিং করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হবে। কারণ সব তারিখের হিসেব তো করতে হবে সাড়ে সাত বছর আগে গিয়ে। কিন্তু এটা একেবারেই অন্যান্য দেশের বাসিন্দা এবং পর্যটকদের ব্যক্তিগত সমস্যা। তাই এই সংক্রান্ত কোনো রকম চাপের মুখেই এখনও পর্যন্ত নতি স্বীকার করেনি ইথিওপিয়ান সহ তাদের ক্যালেন্ডার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম