।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: বাংলাদেশের নির্বাচনে কড়া নজর যুক্তরাষ্ট্রের। জুলাই জুড়ে কূটনৈতিক চাপ, অস্থির রাজনীতি। কিভাবে সামাল দেবে দেশটা? এই মাসটা ভীষণ ভীষণ ভাইটাল। পাল্টে যেতে পারে রাজনীতির সমস্ত ছক। বাংলাদেশ সফরে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের বহু প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন এত মাথাব্যথা? নির্বাচন দেশটার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, কিন্তু সেখানে কেন হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র? উদ্দেশ্যটা কি?
যুক্তরাষ্ট্র মুখে বলছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামানোর লক্ষ্য, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়। শুধুই কি রাজনৈতিক সমঝোতা? নাকি যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে? আর তাই অযথা স্নায়ুচাপ বাড়াচ্ছে দেশটার উপর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ যেন একটু বেশি। সামনেই নির্বাচন। গোটা দেশজুড়ে এখন টানটান উত্তেজনা। সেই উত্তেজনার পারদ বাড়াতে বাংলাদেশ আসতে পারে তিনটে বিশেষ দল। বাংলাদেশের সরকার অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঠিক কতটা আয়োজন করেছে তা জানতে ঢাকায় আসবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জিয়া। নির্বাচনের আয়োজন যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে কিনা সেই বিষয়টা যাচাই করতে আসবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল। পাশাপাশি জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আসতে পারেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমোন গিলমোর।
তাই বলা যেতেই পারে, জুলাই মাস বাংলাদেশের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশী রাষ্ট্রের মাথা ব্যাথার আরেকটা কারণ আছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে শ্রমিকদের অবস্থা কিংবা তাদের অধিকার বৈশ্বিক সূচকে একদম নিচে। শ্রমিকদের অধিকার, উন্নয়ন কিভাবে করা যায় এই নিয়ে আলোচনায় বসতে পারে দুই দেশ। যেখানে গুরুত্ব পাবে শ্রম পরিস্থিতি সহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বাংলাদেশের শ্রম অধিকার এবং পরিবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ বহুদিনের। সমস্যাগুলো কিভাবে সমাধান করা যাবে সে বিষয়েও ভাবছে বাংলাদেশ সরকার, তবে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কিছুটা অসন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানের দু পক্ষের অর্থাৎ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে উত্তপ্ত হতে পারে রাজনীতির ময়দান।
এমত পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের বহু রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন , রাজনৈতিক সমস্যার নামে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিনিধির দল পাঠাচ্ছে তা ভূরাজনৈতিক কৌশল ছাড়া অন্য কিছু নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশ করা। যেখানে জড়িয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ। টার্গেটে রয়েছে এশিয়ার কৌশলগত অবস্থান, বাণিজ্যপথ, বাজার, নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা থেকে শুরু করে মূল্যবান সম্পদ। সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকদের নতুন জন্য যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি তা কিন্তু নির্বাচনকে টার্গেট করেই। এমনটাও মনে করছেন অনেকে। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ৬ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। একটু খেয়াল করে দেখবেন, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আমেরিকার যতটা তৎপর অন্য কোন দেশ কিন্তু ততটা তৎপর নয়। যুক্তরাষ্ট্র নীতিগত অবস্থান থেকে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় তৎপর থাকে এবং সেই বিষয়ে বার্ষিক রিপোর্টও দেয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই উৎসাহ যেন অনেকটা বেশি। তাই জুলাই মাসটা গেলে বোঝাই যাবে বাংলাদেশের ময়দানে রাজনৈতিক চাপানউতোরের জল ঠিক কতটা। এটা বৈশ্বিক হতে পারে, আবার অভ্যন্তরীণও হতে পারে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম