।। প্রথম কলকাতা ।।
China United States: ফাইনালি, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বরফ গলছে কি? স্বার্থ হাসিল করতে কি শত্রুকেও বন্ধু বানাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র? মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের চীন সফর কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে? আদৌ চীনের মন গলবে তো? মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে কোন কোন বিষয় আলোচনার মেইন টপিক হতে পারে? সংঘাতের রিস্ক কমেছে, এটাই মুখোমুখি বসার মোক্ষম সময় কিন্তু, দুদেশের বিরোধ নিষ্পত্তিতে ব্লিঙ্কেনের এই সফর কতটা ফলপ্রসূ হবে?
যুক্তরাষ্ট্র চীন উত্তেজনার পারদ কমবে কতটা?
কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? আন্তর্জাতিক মহলে জোর চর্চা। নিশ্চয়ই ভুলে যাননি বেলুনকাণ্ডের কথা। হ্যাঁ প্রায় পাঁচ মাস আগের ঘটনা। তারপর এই প্রথমবার বেইজিংয়ে পা রাখলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান ইস্যু, দক্ষিণ চীন সাগর সহ একাধিক ইস্যুতে চরম দ্বন্দ্বে থাকা দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে। চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ কেউ কারও কাছে নতি স্বীকার করতে নারাজ। তাই, এবার উত্তেজনার পারদ কমাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের চীন সফরে সম্পর্কের মেরামতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের কূটনৈতিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের বিষয়টা। না, এইভাবে মতানৈক্য জিইয়ে রাখতে পারে না দুই দেশ সাফ কথা মার্কিন বিশেষজ্ঞদের একাংশের। বৈশ্বিক অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন তাঁরা।
আর চীন? তাঁরা কি চাইছে? সেটাও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর। চীনের উদ্বেগের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। প্রতিযোগিতার নামে চীনের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থের অবমূল্যায়ন বন্ধ করতে হবে। এছাড়া, বাণিজ্যিক দ্বন্দ্বের নিরসন নিয়েও হতে পারে আলোচনা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতেক ম্পিউটার প্রযুক্তি দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে যদি তীব্র প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়, তবে অবৈধ ওষুধ বাণিজ্য বন্ধের বিষয়টি হতে পারে দুই দেশের সহযোগিতা বাড়ানোর বড় জায়গা। কারণ, চীনে উৎপাদিত রাসায়নিক উপাদান দিয়ে ‘ফেন্টানিল’ তৈরি বন্ধ হোক, এটাই চায় ওয়াশিংটন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত সাত বছরে হেরোইনের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি শক্তিশালী ফেন্টানিলের অতিরিক্ত ডোজের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। তাই, খুব স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা খুবই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এসবের বাইরে।
আরও একটা টপিক আলোচনায় উঠে আসতে পারে, সংঘাত পরিহার মনে করে দেখুন। বেলুনকাণ্ডের পর বেশ কিছু ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, রাশিয়ায় অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে চীন চিন্তাভাবনা করছে, যে অস্ত্র ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে। হ্যাঁ, যদিও পরে মার্কিন কর্মকর্তারা ওই অভিযোগ থেকে দূরে সরে যান। কারণ, এই বিতর্কিত বিষয়টা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ছায়া যুদ্ধের রিস্ক তৈরি করতে পারে। কিন্তু এটাও ঠিক, যদিরা শিয়াকে চীন সামরিক ও আর্থিক সহযোগিতা দিলে তার পরিণতি হবে মারাত্মক। ফলে, ব্লিঙ্কেনের চীন সফরে এই ইস্যুতেও আলোচনা হতে পারে। তবে, আলোচনা যে ইস্যুতেই হোক না কেন ব্লিঙ্কেন ও তাঁর কূটনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা চাইছেন, দুই দেশ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে যেন সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে। তার জন্য, দুই দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা কমাতে হবে। দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই টেকসই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে নিজেদের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম