।। প্রথম কলকাতা ।।
Touch Wood: আত্মীয়-পরিজন, কাছের মানুষ অথবা বন্ধুদের সঙ্গে ভালো কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় অথবা খুশির কোন খবর শোনানোর সময় অনেকেই বলে বসেন ‘নজর যেন না লাগে’। অনেককে আবার দেখা যায় আশেপাশে কিছু কাঠের জিনিস থাকলে সেটি স্পর্শ করে ‘টাচ উড’ (Touch Wood) বলতে। কেউ কেউ আবার কাঠের জিনিস না পেয়ে নিজের মাথায় স্পর্শ করে ‘টাচ উড’ বলেন। এই টাচ উড শব্দ দুটি সৌভাগ্যকে কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করার উপায় বলে মনে করা হয়। সম্পূর্ণটিই একটি প্রচলিত বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাসের নেপথ্যে এখনও পর্যন্ত প্রচলিত রয়েছে বেশি কিছু কাহিনী।
প্রবীণরা বলে থাকেন, ভালো কোন কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চর্চা করলে তাদের নিজেরই নজর লাগতে পারে। সুখবর অথবা কোনো ভালো ঘটনায় যাতে কারো নজর না লাগে এবং নজর লেগে থাকলেও যাতে দোষ কেটে যায় তার জন্য বহু জনে বহু কিছুই করে থাকেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, মানুষের কুনজর যেকোনো ভালো জিনিসকে খারাপ করে দিতে পারে। তাই নজর দোষ থেকে ব্যক্তিগত সুখকে বাঁচিয়ে রাখতে এমনটা বলা হয়।
কবে থেকে শুরু হয় ‘টাচ উড’ বলার রীতি ?
প্রাথমিক তথ্য বলছে, যীশু খ্রীষ্টের জন্মের আগে থেকেই এই টাচ উড বলার রীতি প্রচলিত ছিল পশ্চিমের দেশগুলিতে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়, গাছ হল এমন একটি জায়গা যেখানে ভালো পরী এবং ভালো আত্মাদের বসবাস। তাই নিজেদের আনন্দের কথা প্রকাশ করলে কাঠ স্পর্শ করা হতো। যাতে কোনো মানুষের আনন্দের কিংবা সুখের পথে দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। তাঁরা মনে করতেন গাছে বসবাসকারী ভালো পরী বা আত্মারা তাদের সমস্ত বাধা ভিন্ন দূর করতে সাহায্য করবেন। এই কারণেই দুবার গাছের গুঁড়ি ছুঁয়ে এই ‘টাচ উড’ বলার অভ্যাস (Habit) তৈরি হয়।
পরবর্তীতে দেখা যায় আর গাছের গুঁড়ি নয় আশেপাশে থাকা যেকোনো কাঠকে স্পর্শ করেই টাচ উড বলতে শুরু করেন মানুষ। ইংল্যান্ডে (England) আবার টাচ উডের বদলে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় নক অন দ্য উড। আরও একটি কাহিনী অনুযায়ী, ১৯ শতকে বাচ্চাদের টিগি টাচ উড নামে একটি খেলা প্রচলিত ছিল। সেই খেলায় বাচ্চাদেরকে গিয়ে যেকোনো কাঠের জিনিস স্পর্শ করতে হতো। সেই কাঠের জিনিস স্পর্শ করার পরেই সে সুরক্ষিত হয়ে যে।ত কাজেই সেখান থেকেই নাকি কাঠ ছুঁলে সুরক্ষিত থাকা যায় এই বিশ্বাসের জন্ম হয়।
গোটা বিশ্বজুড়ে প্রকৃতিকে পুজো (Worship of Nature) করার অদ্ভুত কিছু নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানকে ঈশ্বর জ্ঞানে আরাধনা করা হয়ে থাকে। ভারতে যেমন তুলসী গাছ থেকে শুরু করে বট, অশ্বত্থ গাছকেও পুজো করা হয়, মান্যতা দেওয়া হয় তেমনি খ্রিস্টানরা মনে করেন তাঁরা কাঠ স্পর্শ করছেন মানেই যিশুখ্রিস্টের ক্রাইস্টের ক্রস স্পর্শ করছেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম