।। প্রথম কলকাতা ।।
পাতাল ফুঁড়ে ছুটবে ট্রেন? ১৪ টা সুড়ঙ্গ জুড়ে গেল সিকিমের মাটিতে। সুড়ঙ্গের গভীরে রহস্যে মোড়া বাইশটা সেতু? হাতে চাঁদ পেল বাংলা! ব্রেক জার্নি ভুলে যান, রংপো ঘোরালো অ্যাঙ্গেল। তিস্তা বাজারের আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনেই লুকিয়ে আসল চমক। ২৪ এই জোর ঝটকা খাবে চীন। ইন্ডিয়ান আর্মির বড় হাতিয়ার এই স্পেশাল রেল ট্র্যাক। দুর্গম পথের এই সুড়ঙ্গ কতটা রিস্কি? জানেন শূন্য থেকে শুরু করে কোটি কোটি মুনাফা, সুড়ঙ্গে ভারতের বিশাল ভরসা। মাকড়সার জালের মত এতগুলো সুড়ঙ্গ। ভারতের মাটির তলায় কি ঘটছে জানেন?
চীনকে টেক্কা দিতে সুড়ঙ্গের ভেতর মাস্টার প্ল্যান ভারতের। পুরোটা তাহলে খোলসা করে বলা যাক। পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে রেলপথ। সেবক- রংপো রেলপথ ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে এই রেল ট্র্যাকের বেশিরভাগ অংশ, ৩৮ কিলোমিটার। এই রেল ট্র্যাকের জন্য মোট ১৪টি সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে রেল। এর মধ্যে দীর্ঘতম সুড়ঙ্গটি ৩ কিমোমিটারেরও বেশি লম্বা। পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার তারখোলা ও টুংলাংখোলার মধ্যে এই সুড়ঙ্গ অবস্থিত। ভারতীয় রেল সূত্রে খবর, এই রুটের মোট টানেল তৈরির বেশিরভাগ কাজই শেষ হয়ে গেছে। এই অঞ্চলে টালেন তৈরি করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়ায় সতর্কতা বজায় রেখে তৈরি করা হয়েছে এই সুড়ঙ্গ। যোগাযোগ ব্যবস্থায় কি এফেক্ট ফেলবে এই রুট সেটা জানানোর আগেও যে পয়েন্টে হিট করব সেটা হল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই রুট কতটা ইম্পরট্যান্ট।
সিকিমের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে চীন সীমান্ত। সিকিম শেষ হলেই চীনের এলাকা শুরু। তাই নিরাপত্তার জন্য এই এলাকায় বিশেষ নজর থাকে ইন্ডিয়ান আর্মির। ডোকালাম এখান থেকে মোটেই বেশি দূরে নয়। এই ডোকালামেই বছর খানেক আগে ভারত ও চীনা সেনা মুখোমুখি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি তৈরির পর থেকেই ওই এলাকায় প্রচুর ফোর্স মোতায়েন করেছে ইন্ডিয়ান আর্মি। ডোকালাম থেকে আবার চিকেন নেক খুব দূরে নয়। ভারতের প্রতিরক্ষায় চিকেন নেক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে এই রেলপথ তৈরি হলে ইন্ডিয়ান আর্মির যাতায়াত ও যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়াও সহজ হবে। জাতীয় নিরপত্তার ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাছাড়া, সিকিম পৌঁছনোর খরচ এক ধাক্কায় কমে গেল অনেকটাই। এই রেল ট্র্যাক চালু হয়ে গেলে সরাসরি ছোঁয়া যাবে সিকিম।
মনে করিয়ে দিই সেবক ও রংপোর মধ্যে সংযোগকারী এই রেললাইন নির্মাণ হচ্ছে ১৪ টা সুড়ঙ্গ ও ২২ টা সেতুর মধ্যে দিয়ে। টানেলগুলোর চূড়ান্ত কংক্রিট লাইনিং এর কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাংলার তিস্তা বাজারে এর একটি ভূগর্ভস্থ স্টেশনও রয়েছে। এই লাইনে মোট পাঁচটি স্টেশন থাকছে। এতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিকিম যাওয়া অনেক সহজ হবে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই রেলপথ।
বর্ষার সময় ধসের জেরে সিকিমগামী এক মাত্র জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই সময় কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সিকিম। সেই অবস্থা বদলে যাবে এই রেলপথ তৈরি হলে। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গের কপালেই যে শিঁকে ছিঁড়ছে এমনটা নয়। ধীরে ধীরে এটা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালের শুরুতেই উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্য সিকিমের সঙ্গে রেল যোগাযোগের সমস্ত কাজ শেষ করে রেল দফতরকে হস্তান্তর করা হবে প্রজেক্ট।অর্থাৎ খুব তাড়াতাড়ি বাংলা থেকে সরাসরি পৌঁছানো যাবে সিকিম। বলাই বাহুল্য, এই প্রজেক্ট সিকিমের সামগ্রিক উন্নয়নে বড় অবদান রাখবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম