।। প্রথম কলকাতা ।।
দোরগোড়ায় ফুটবল বিশ্বকাপ। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের কিক-অফের অপেক্ষা মাত্র ১ দিনের। ৯২ বছরের ইতিহাসে প্রতিবারই নতুন কিছুর জন্ম দিয়ে এসেছে ফুটবল বিশ্বকাপ। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় এবারে একটু বেশিই নতুন কিছু পেতে চলেছে ফুটবল বিশ্ব। যার মধ্যে অন্যতম হল শীতকালীন বিশ্বকাপ। শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজন করে ফুটবল ইতিহাসের পাতায় প্রথমবারের জন্য জায়গা নিয়েছে কাতার বিশ্বকাপ। এছাড়াও আরও নতুন কিছুর উদ্ভাবন ঘটতে চলেছে। যার সাক্ষী হতে চলেছেন আপনিও। চলুন দেখে নেওয়া যাক কাতার বিশ্বকাপের অনন্য কিছু নতুনত্ব।
শীতকালীন বিশ্বকাপ : ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবার শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজিত হতে চলেছে। সাধারণত ফুটবলের মহোৎসব শুরু বছরের মাঝামাঝি সময়ে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম ভাবিয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে। এই সেই কারণেই শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিধান্ত নেওয়া হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বিশ্বকাপ : কাতারই হলো মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ যারা বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয় আরব বিশ্বেও প্রথম দেশ হিসেবে কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। তবে এশিয়া মহাদেশে দ্বিতীয়বার ফুটবল বিশ্বকাপের মহোৎসব শুরু হতে চলেছে। এর আগে ২০০২ সালে যৌথভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল।
সবচেয়ে ব্যায়বহুল বিশ্বকাপ : কাতারই বিশ্বকাপ হতে চলেছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফুটবল বিশ্বকাপ। উন্নত স্টেডিয়াম, উন্নত পরিকাঠামো, হোটেল নির্মাণের জন্য কাতার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাস বলছে এর আগে কোন বিশ্বকাপে এতো পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়নি।
প্রথম প্রযুক্তি বল : কাতার বিশ্বকাপের বলের নাম অনেক আগেই প্রকাশ করেছে ফিফা। বলের নাম রাখা হয়েছে ‘আল রিহলা’। যার বাংলায় অর্থ করলে হয় ‘ভ্রমণ’। অ্যাডিডাসের তৈরি বলটিতে রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। বলের নিখুঁত গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকছে সেন্সর প্রযুক্তি। যার ফলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সিধান্ত দেওয়া আরও সহজ হয়ে যাবে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার বলে সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথম মহিলা রেফারি : কাতার বিশ্বকাপে পুরুষ রেফারিদের পাশাপাশি মহিলা রেফারিরা ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ৩৬ জনের রেফারি প্যানেল ঘোষণা করেছে ফিফা। যার মধ্যে রয়েছেন তিনজন মহিলা রেফারি। পুরুষদের বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করতে যাওয়া মহিলা রেফারিরা হলেন, জাপানের ইয়োশিমি ইয়ামাশিতা, ফ্রান্সের স্টিফানি ফ্রাপার্ট ও রুয়ান্ডার সালিমা মুকানসাঙ্গা। এছাড়াও রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন ব্রাজিলের নেউজা বেক, মেক্সিকোর কারেন দিয়াজ ও ক্যাথরিন নেসবিত।
সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি : ২০১৮ বিশ্বকাপে প্রথমবার অফসাইডের জন্য ভিএআরের সাহায্য নেওয়া হয়। তবে কাতার বিশ্বকাপ হতে চলেছে আরও উন্নত। আসন্ন বিশ্বকাপে ব্যবহার করা হবে সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি। যার জন্য প্রতিটি স্টেডিয়ামের ছাদের নীচের অংশে লাগানো হয়েছে ক্যামেরা। কোন খেলোয়াড় অফসাইড হলেই সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির কাছে সংকেত চলে যাবে। যার ফলে সিধান্ত নেওয়া আরও সহজ হয়ে যাবে। এই প্রযুক্তি প্রথম ব্যবহার করা হয় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও ফিফা আরব কাপে। কাতারেই প্রথমবার বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত স্টেডিয়াম : মোট আটটি স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ৬৪টি ম্যাচ। প্রতিটি স্টেডিয়ামেই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। মজার বিষয় হলো আটটি স্টেডিয়ামের মধ্যে কাতার বিশ্বকাপের জন্য সাতটি স্টেডিয়াম তৈরি করেছে।