।। প্রথম কলকাতা ।।
আস্ত ঘরবাড়ি গিলছে গঙ্গার ভাঙন, সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে নিজেদের ‘সর্বনাশ’ দেখছেন ওরা। চোখের সামনেই তলিয়ে যাচ্ছে শেষ সম্বল! গঙ্গার গ্রাসে আস্ত গ্রাম ফের নতুন করে গঙ্গা ভাঙন নিয়ে আতঙ্কিত সামশেরগঞ্জের বাসিন্দারা। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ ব্লকের উত্তর চাচন্ড গ্রামে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙ্গন দেখা দিল। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে শুরু হয়ে যায় এমন ধ্বংসলীলা। চোখের সামনেই তাসের ঘরের মতন ভেঙে যাচ্ছে সারি সারি বাড়ি। কোথাও একতলা বাড়ি তো কোথাও বা আবার দোতলা পাকা বাড়ি। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে নিজেদের হাতে তৈরি করা মাথা গোঁজার ঠিকানা, স্বপ্নের মহলগুলি। গ্রাম জুড়ে হাহাকার।
বর্ষার জলস্তর বৃদ্ধি হতেই এই ভাঙন শুরু হয়। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জে ফের শুরু হয়েছে গঙ্গা নদীর ভয়াবহ ভাঙন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে তিনটে থেকে উত্তর চাচন্ড গ্রামে শুরু হওয়া গঙ্গা নদীর ভাঙনে বেলা আটটার মধ্যে নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে প্রায় কুড়িটি বাড়ি। তারপর ধীরে ধীরে ৩০ থেকে ৩৫টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, গত প্রায় দু’বছর ধরে সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার ধানঘড়া, শিবপুর চাচন্ড প্রভৃতি এলাকাতে গঙ্গা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মাঝে মধ্যেই ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে এলাকায়। এর আগেও বহুবার বহুবারই তলিয়ে গেছে নদীগর্ভে। ফের আবারও সেই দৃশ্য দেখা গেল। ২০২০ সালের ভয়াবহ ভাঙনে এই এলাকার সমস্ত চাষযোগ্য জমি নদী গর্ভের তলিয়ে গেছে। গঙ্গা নদী এখন জনবসতির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত যদি ভাঙন বন্ধ না হয় তাহলে গোটা একটি জনপদ নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে।
বর্ষাকালে এ বছর দীর্ঘ হওয়াতে এবং গঙ্গা নদীতে জল বেশি থাকার জন্য সেভাবে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা যায়নি। সামশেরগঞ্জের যে সমস্ত এলাকাতে ভাঙন হচ্ছিল সেখানে বালির বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। তবুও ঠেকানো যায়নি এই ভয়াবহ ভাঙ্গনকে। গ্রামবাসিরা জানান, ভোররাতে যখন সকলে ঘুমোচ্ছিলেন, তখনই আচমকা ঘটে এই ভয়াবহ ঘটনা। টের পেতেই নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঘর থেকে বের করার সময় পাননি তারা। প্রাণ হাতে নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন ঘর থেকে। সব হারিয়েছেন। টাকা পয়সা, প্রয়োজনীয় নথিপত্র, বাড়িঘর সব ভেসে গেছে।
বাড়ি-ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন গ্রামবাসীরা। গৃহহীন অবস্থায় কোথায় যাবেন, তা নিয়ে কার্যত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা।গ্রামজুড়ে এখন শুধুই সব হারানোর হাহাকার। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে, আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা এখন কোথায় যাবেন কি করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম