।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: চিনতে ভুল করবেন না। অখন্ড ভারতের মানচিত্র নিয়ে বাংলাদেশ জুড়ে তোলপাড়। ব্যাখ্যা চাইতেই মুখ খুলল নয়া দিল্লি। কিন্তু ভারতের উত্তরে কি সন্তুষ্ট হলো বাংলাদেশ? এই ইস্যুটাকে কতটা বড় করে দেখছে শেখ হাসিনার দেশ? নির্বাচনের আগে কতটা রিস্ক বাড়লো বাংলাদেশের? এর সাথে কি রাজনীতির সত্যিই সম্পর্ক আছে? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের একটা অংশ বাংলাদেশ। আর এই বিষয়টাকেই সহজ ভাবে দেখেনি ঢাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশ এর সামাজিক মাধ্যমে উঠেছে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়। বেকায়দায় পড়ে গেছে বাংলাদেশের শাসক শিবির। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ভারত এ ধরনের মানচিত্র দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছে? উত্তরে নয়া দিল্লি কি বললো জানেন?
ভারত বলেছে, ওই মানচিত্র সম্রাট অশোকের সময়ের ভারত ভূখণ্ড, যার শরিক উপমহাদেশের সব দেশই। নয়া সংসদ ভবনে সেটা রাখা হয়েছে গণমুখী প্রশাসনের গুরুত্ব তুলে ধরতে, যা সম্রাট অশোকের সময়ে অনুসরণ করা হতো তবে, এই উত্তরে চিরে ভেজেনি। ওই ব্যাখ্যার পরও ভারত বিরোধী প্রচার বন্ধ হয়নি। অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের সঙ্গেই এবার বাংলাদেশের সড়ক, নদী, বন্দর ইত্যাদি ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আলোচনায় টেনে আনা হচ্ছে।
বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় থামেনি। কেউ বলছেন এই মানচিত্রের অর্থ ভারত বাংলাদেশের পৃথক অস্তিত্ব স্বীকারই করে না। কারো মতে, ভারতের শাসকদের কল্পিত মানচিত্রে বাংলাদেশকে অখণ্ড ভারতের অংশ দেখানো অপমানজনক, আপত্তিকর। আবার কারোর কথায়, এই ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটাই প্রশ্ন উঠছে, অন্য কোনো দেশের অখণ্ড মানচিত্রে বাংলাদেশকে দেখানো হবে কেন? যদিও, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার এই বিষয়টাতে সেভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তাঁরা বলছে, অখণ্ড ভারত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার কোনো কারণ নেই। তারপরও বাড়তি ব্যাখ্যার জন্য দিল্লির মিশনকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়।
এর সঙ্গে রাজনীতির কি কোনও যোগ রয়েছে? বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর উত্তরে সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে। তিনি তো বলছেন, ওটা একটা ম্যুরাল, ওই ম্যুরালে যা চিত্রায়ন করা হয়েছে তার সঙ্গে সাংস্কৃতিক মিল থাকতে পারে কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।যদিও এই নিয়ে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে শাসক শিবিরকে বারবার কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে, হচ্ছে। সরকারকে অবিলম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে হবে, দাবি বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। তাহলে কি নির্বাচনের আগে কিছুটা হলেও চাপ বাড়লো বাংলাদেশ সরকারের?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে আর মাত্র মাস ছয় পরই বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অলরেডি ওই দেশ মার্কিন ভিসা নীতি, মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট সহ লোডশেডিংয়ের সমস্যায় জেরবার। তার উপর ভারতের সংসদে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এককথায়, ভোটমুখী বাংলাদেশে ওই মানচিত্র রীতিমতো নির্বাচনী ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, বাংলাদেশের বিরোধী শিবির কে কিছুটা হলেও এক্সট্রা অক্সিজেন যোগাচ্ছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যদিও, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নিয়ে যে বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছেন না, তা স্পষ্ট। তিনি ভারতীয় সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরই বরং জোর দিয়েছেন। সত্যিই তো যেকোনো ইস্যুই কি ভারত বাংলাদেশের দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভীত নড়িয়ে দিতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের আর একাংশের কথায়, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোকে মনে রাখতে হবে এটা চিন নয় যে অন্যের জমিতে ভাগ বসানোই যাদের একমাত্র লক্ষ্য, এটা কিন্তু ভারতবর্ষ। যে ভারতবর্ষের রাজনীতি, কূটনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সংস্কৃতির সঙ্গে বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশ এক শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ। দুই দেশের সম্পর্কের উচ্চতা টের পাওয়া কিন্তু এখন এতো সহজ কথা নয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম