।। প্রথম কলকাতা ।।
Tripura’s Unakoti: এমন একটি জায়গা যাকে অদ্ভুত বললেও কম হবে। যেখানে পাহাড়ে পাথরের মধ্যে খোদাই করা রয়েছে দেব দেবীর হরেক রকমের মূর্তি। কবে কারা কখন এই পাহাড় খোদাই করে মূর্তি তৈরি করেছিলেন তা কারোই জানা নেই। জানা সম্ভবও নয় কিন্তু ঐতিহাসিকরা বলছেন এইগুলি তৈরি হয়েছিল অষ্টম কিংবা নবম শতাব্দীতে। আর তাঁর থেকেও আশ্চর্য হওয়ার মতো বিষয় হল এই পাহাড়ের গায়ে একটি দুটি দেবতাদের প্রতিমা নয় খোদাই করা রয়েছে ৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টি প্রতিমা। শুনে অবাক হচ্ছেন তো! এমন জায়গায় রয়েছে এই ভূ-ভাগেই।
ত্রিপুরার রঘুনন্দন পাহাড়ে এই আশ্চর্য দেবতাদের প্রতিমা দেখতে পাওয়া যায়। জায়গাটির নাম ঊনকোটি। বাংলায় ঊনকোটির মানে হল ১ কোটির থেকে কম। ঊনকোটিতে অবস্থিত এই পাহাড়ে যে ভাস্কর্য ফুটে উঠেছে তা চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মত। বর্তমানে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে এই জায়গাটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। জানা গিয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই স্থানটিকে সংরক্ষণ করার জন্য এবং এখানে পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য ১২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায় প্রত্নতাত্ত্বিকরা ক্রমাগত এই অঞ্চলে খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আশা আছে এর আশেপাশে আরও অন্যান্য মূর্তি আবিষ্কার করা যাবে। এখনও পর্যন্ত এই পাহাড়ের গায়ে দুই ধরনের মূর্তি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এক হল পাহাড় খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে আর দ্বিতীয়টি পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছে। আর এই সব মূর্তিগুলির মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত হল একটি শিবমূর্তি এবং বিশাল আকার একটি গণেশ মূর্তি। ওই শিবের মূর্তিটির নাম ঊনকোটিশ্বর কাল ভৈরব। যার উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। আর শিবের মূর্তির মাথার উপর একটি অলংকরণ রয়েছে যার উচ্চতা ১০ ফুট।
এই পাহাড়ের গায়ে ভগবান শিবের ষাঁড় নন্দীর তিনটি মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। কিছু কিছু একেবারে স্পষ্ট দেখা গেলেও তার মধ্যে কয়েকটি মাটিতে অর্ধেক ডুবে রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে খারাপ আবহাওয়া, দূষণ প্রভৃতির কারণে বহু প্রতিমাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বহু প্রতিমার ওপর থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়ায় বর্তমানে সেগুলি আর দৃশ্যমান নয়। লোকমুখে প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, ওই পথ দিয়েই ভগবান শিব কাশীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গ নিয়েছিলেন ৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ জন দেবতা।
তাঁরা সকলে বর্তমানে এখানে থেকে গেলেও ভগবান শিব কাশীর পথে পাড়ি দেন । বলা হয় একরাত ভগবান শিব এখানে কাটিয়েছিলেন । সূর্যোদয়ের আগেই সবাইকে উঠে কাশীর উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে এমনটাই বলেছিলেন তিনি। কিন্তু এমনটা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভোলেনাথ সকলকে পাথরে পরিণত হওয়ার অভিশাপ দেন । আর তারপর থেকে এই এমন ভাবে মূর্তি গুলি পাহাড়ের উপরে রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর এপ্রিল মাসে অশোকাষ্টমী মেলা হয় বলেও জানা যায়। মূলত শিবের ভক্তরা প্রতিবছর এই মেলা উপলক্ষে এখানে আসেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম