।। প্রথম কলকাতা ।।
করুণ অবস্থা ভারত বাংলাদেশের বাঙালিদের। চারিদিকে চালের জন্য হাহাকার। দৌড়াদৌড়ি। মানুষ খুঁজছে একটু চাল। এই দৃশ্য কোন অভাগা দরিদ্র দেশের নয়। আমেরিকা ইউরোপের গ্রসারি স্টোরে। চালের জন্য লাইনে এনআরআইদের ঢল। হাতে টাকা আছে কিন্তু বাজারে চাল নেই। ভারতের একটা সিদ্ধান্তে সবটা ওলটপালট। ভারতের উপর চটছে গোটা বিশ্ব!
চালের স্টক যত শেষ হচ্ছে, দাম বাড়ার আশঙ্কা ততই বাড়ছে। ইতি উতি খালি ট্রলি নিয়ে ছুটছে, কিন্তু চাল পাওয়া যাচ্ছে না। যা রয়েছে তার অধিকাংশই থাইল্যান্ডের চাল। ভারতীয় বাংলাদেশী তথা দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকরা এখন মহা ঝামেলায়। কি খাবেন সেটা নিয়েই ভাবতে ব্যস্ত। বিদেশের মাটিতে যতই চাকচিক্য থাকুক না কেন, বাঙালির ভাত না হলে কি চলে? সেই ভাতেই এখন টান। টাকা দিয়েও মিলছে না চাল।
২০ জুলাই বাসমতি বাদ দিয়ে অন্যান্য সব ধরনের চালে রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের যোগান আর দাম ঠিক রাখতে এমন সিদ্ধান্ত। তারপরে আমূল বদলে যায় নর্থ আমেরিকা ইউরোপের গ্রসারি স্টোর গুলোর চিত্র। বাঙালিদের মধ্যে চাল কেনার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। লম্বা লাইন দোকানের বাইরে। ৯ কেজি চালের বস্তার দাম পড়ছে প্রায় ২২১৩ টাকা। আবার কোন দোকান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মাথাপিছু মিলবে মাত্র এক বস্তা চাল। এর বেশি নয়। কারণ চাহিদা যেহেতু বেশি, তাই সবার দিকটা ভাবতে হবে। বিদেশে শুধু ভারতীয় বা বাংলাদেশীরা নয়, চিনা জাপানি মেক্সিকান থাই আমেরিকান সহ বহু মানুষ ভাত খান। ভারতের সিদ্ধান্তে এখন ক্ষতির মুখে গোটা বিশ্ব। বিদেশের মাটিতে বিপদে বাঙালিরা।
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা আর এল নিনোর কারণে বিশ্বের চালের বাজারের অবস্থা ভীষণ খারাপ। চালের মূল্যের সূচক ১১ বছরের মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ স্থানে। আন্তর্জাতিক বাজারে ৯০% চাল রপ্তানি করে ভারত সহ এশিয়ার গুটিকতক দেশ। গোটা বিশ্ববাজারে ভারত একাই রপ্তানি করে ৪০ শতাংশ চাল। প্রায় ১০০ টা দেশ ভারত থেকে খাদ্যশস্য কেনে। ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বে আটকে গিয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ চাল। ভবিষ্যতে যে ভয়াবহ বিপদ আসতে চলেছে, আঁচ করতে পেরেছ ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ। আশঙ্কা, হঠাৎ রপ্তানি বন্ধ করলে বাসমতিরও সংকট দেখা দেবে। বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়বে চালের দাম। সমস্যায় পড়বে একাধিক দেশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে আমেরিকা ব্রিটেন কানাডার সহ পূর্ব ইউরোপের বহু দেশে মুদ্রাস্ফীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। যার আঁচ থেকে বাঁচতে পারবেনা সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সৌদি আরবের মতো ধনী দেশগুলো। তাই ভারতকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছে আইএমএফ।
আইএমএফ এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, ভারতের এমন পদক্ষেপে বিশ্বের অন্যান্য দেশ পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে। যা ভালোর দিকে যাবে না। ভারত প্রচুর পরিমাণে চাল রপ্তানি করে আমেরিকা, থাইল্যান্ড, ইতালি, স্পেন আর শ্রীলঙ্কায়। সেক্ষেত্রে এই দেশগুলোর মনোভাব কি বদলে যাবে? ভারতের শত্রু হয়ে উঠবে না তো? এটাও একটা বড় প্রশ্ন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম