।। প্রথম কলকাতা ।।
India Bangladesh: মোদীর মাস্ট্রারস্ট্রোকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যার অবসান নেপাল-বাংলাদেশ চিনের মূল টার্গেটে এই একটা কারণেই তো। আগ বাড়িয়ে নতুন প্রস্তাব। পশ্চিম এশিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবার হবে ভারতের হাতের মুঠোয়। কিন্তু নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে ভারতের কোথায় লাভ? বাংলাদেশের বিদ্যুত সমস্যার ফায়দা তুলতে সবার আগে পৌঁছেছিল চিন। কক্সবাজারে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কারখানা চিনের হাত ধরে, তবুও বলছি চিন যা পারেনি ভারত করে দেখালো পশ্চিম এশিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পাওয়ার হাব হবে এবার দিল্লি। নেপালের ভিতরে ঢুকে কলকাঠি নেড়েও দিল্লিকে রুখতে দাহা ফেল চিন।
বরং নেপালকে লাভের গুড় খেতে হবে ঝুঁকতে হবে ভারতের দিকেই কোনও উপায় নেই৷ খবর এটাই যে বাংলাদেশ-নেপাল-ভারত ঐতিহাসিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে ভারত। নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ যাবে ভারতের মাটি হয়ে। ঢাকা-কাঠমান্ডু কয়েক বছর ধরে এই অপেক্ষাটাই করেছিল। বাংলাদেশের লোডশেডিংয়ের সমস্যায় বিপর্যস্ত জনজীবনের এতটা উপকার করে ভারতে লজিক্যালি কোন লাভটা হতে চলেছে? বর্ষাকালের মধ্যেই এই ডিল স্বাক্ষর হয়ে গেলে বাংলাদেশের অনেক বড় লাভ হতে চলেছে, এমনটা নিশ্চিত।
শুধুই নেপাল-বাংলাদেশকে চিনের প্রভাব মুক্ত করার চেষ্টা এই একটা কারণ তো হতে পারে না। ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট গুজরাত-সৌদি আরব এবং আরব আমিরাত গভীর সমুদ্র গ্যাস পাইপলাইন তৈরি হতে চলেছে। এদিকে সিঙ্গাপুরকে গ্রিন এনার্জি রপ্তানি করার কথাও জোর কদমে চলছে ভারতের। এই অবস্থায় নেপাল-বাংলাদেশ দুটো দেশই চেয়েছে দিল্লির হাত ধরে চলতে৷ কিন্তু গোটা বিষয়টাতেই কড়া নজর রয়েছে চিনের৷ তাই তো নেপাল-বাংলাদেশে আগ বাড়িয়ে বিনিয়োগে প্রস্তাব দিচ্ছে বেজিং। বাংলাদেশের তিস্তা নদী সংক্রান্ত প্রকল্পেও বড় ভূমিকা নিচ্ছে চিন। বিশেষজ্ঞদের মত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিস্তার জল বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের দেরি হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগাতে চাচ্ছে চিন। তিস্তা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের অচলাবস্থার সুযোগ নিয়ে চিন বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে চলা পুরো তিস্তা নদীতে খনন প্রকল্পে রাজি করাতে ঢাকাকে চাপ দিচ্ছে।
এদিকে নেপালের সঙ্গে চিনের বন্ধুপ্রীতি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই৷ কিন্তু জেনে রাখুন ভারতকে ছাড়া কারোরই চলবে না। নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ কিনতে বাংলাদেশ যতটা আগ্রহী, নেপালও বিদ্যুৎ বিক্রিতে ততটাই আগ্রহী। ভারতের মধ্য দিয়ে দুই দেশ যাতে একে অপরের সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনাবেচা করতে পারে সে জন্য নেপাল ও বাংলাদেশ অনেক দিন ধরেই তৎপর। নেপাল তো এতটাই ডেসপারেট যে এটাও বলে দিল ভারত কালাপানি এলাকার বদলে যাতে শিলিগুড়ি করিডর নেপালকে দিয়ে দেয়। যাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ট্রেড করতে পারে কাঠমান্ডু। জানেন কি নেপালে যে একের পর এক হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টে কাজ করছে ভারত
তাতে চিনকে রুখতে দিল্লির প্রধান শর্তই ছিল চিন বেসড কোনও কোম্পানিই ভারতের এই জলবিদ্যুতের প্রকল্পের কোনও বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। এদিকে ভারত এবং নেপাল যৌথ ভাবে আন্তঃসীমান্ত তেল সরবরাহ পাইপলাইন চালু করেছে যা দিয়ে ২.৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন ডিজেল নেপালে পাইপের সেকেন্ড ফেজ তৈরি হবে। ১৮৩ কোটি খরচ করে শিলিগুড়ি থেকে নেপালের ঝাপা সংযুক্ত হবে।
এখানে ভারতের রাস্তা একেবারেই পরিস্কার বাংলাদেশে ভারতের হয়ে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পৌঁছলে আরও অনেক বেশি আঞ্চলিক স্তরে মজবুত হবে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক। আর নেপালের একাধিক হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্টে উৎপন্ন বিদ্যুতের রপ্তানি মার্কেট ধরছে ভারত। সোজা কথায় নেপালের পাওয়ার মার্কেটের অবলম্বন হচ্ছে ভারতবর্ষ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন নেপালের বিদ্যুত যখন ভারতের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে যাবে তখন তার একটা মোটা ট্রানসিট ফিও পাবে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন চিন বরাই করে কিন্তু ভারত গোপনেই নেপালের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ফেলছে জাল। তবে এতে নেপালের কোনও ক্ষতি নয় বরং লাভই হবে। এদিকে পরোক্ষভাবে হয়ত ভবিষ্যতে বাংলাদেশও এই লাভের অংশীদার হতে পারে। কারণ মনে রাখতে হবে নেপাল চায়, বাংলাদেশ সে দেশের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করুক আর এমন লোভনীয় সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না বাংলাদেশও।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম