।। প্রথম কলকাতা ।।
Dollar Politics: কোণঠাসা যুক্তরাষ্ট্র, ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে ডলার অস্ত্র। ডলারের উপর আর ভরসা নেই! মাস্টার প্ল্যান কষছে চীন, সাথে আছে ভারত, বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সিংহাসনে বসে থাকা ডলারের আধিপত্য তাহলে কি শেষ হতে চলেছে? গোটা বিশ্ব একজোট হচ্ছে ডলারের বিরুদ্ধে। এবার কি করবে যুক্তরাষ্ট্র? দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে না তো? এই ডলারের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের এত জোর।
বিশ্বব্যাপী ডলারের দাম বাড়া আর তার বিপরীতে মুদ্রার দরপতন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে এমনটা অহরহ ঘটছে। আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কগুলোতে মার্কিন ডলারের পরিমাণ প্রায় ৬৪ শতাংশের বেশি। আজ যে যুক্তরাষ্ট্রের এত কদর দেখছেন, এর পেছনে অন্যতম কারণ এই ডলার। আন্তর্জাতিক ময়দানে ৮৫ শতাংশ বাণিজ্য এবং ৪০ শতাংশ ঋণ অনুমোদিত হয় ডলারের মাধ্যমে। এক কথায়, ডলার যুক্তরাষ্ট্রের আত্মবিশ্বাস। মোক্ষম ধারালো অস্ত্র। যা দিয়ে গোটা বিশ্বকে দমিয়ে রেখেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ডলারের রাজত্ব আর কতদিন? ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে একের পর এক দেশ। এই যে বিশ্বের বহু দেশ একজোট হয়ে ডলারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তারা কি ডলারের ক্ষমতা কে ঘায়েল করতে পারবে? উত্তরটা কিছুটা হলেও হ্যাঁ, তবে সময় সাপেক্ষ। ডলারের কাছে ইউরোপের ইউরো, সৌদির রিয়াল, কুয়েতের দিনার, জাপানের ইয়েন আর চীনের ইউয়ান মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি। যার অন্যতম কারণ পেট্রোল। বিশ্ব বাজারে পেট্রোল কিনতে গেলে ডলারের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। আর এভাবেই একটা দেশের মুদ্রা আজ আন্তর্জাতিক মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু বিপদে পড়েছে বাকি দেশ। তাইতো ডলার অস্ত্রকে ভোঁতা করতে উঠে পড়ে লেগেছে সবাই। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু কীভাবে ? পুরোটাই সমঝোতার ব্যাপার। চীন আর রাশিয়া তাদের বাণিজ্যিক লেনদেন করছে ইউয়ান আর রুবেলের মাধ্যমে। একই ভাবে চীনের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করতে রাজি হয়েছে ব্রাজিল, সৌদি আরব আর মালয়েশিয়া। আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিজের মহাদেশের অভ্যন্তরের বাণিজ্যের জন্য ডলারের উপর নির্ভর করবে না। ডলার বিমুখতা দেখা দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকাতেও। এক সুরে তাল মেলাচ্ছে জিম্বাবুয়ে। ডলারের পরিবর্তে ব্যবহার করছে সোনার মুদ্রা। ভারত আর বাংলাদেশও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, তারা ডলার নয়, নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করবে। ইতিমধ্যেই ভারত বিশ্বের ১৮ টি দেশের সঙ্গে স্পেশাল রুপি ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট খোলার সংকেত পাঠিয়েছে। যার মাধ্যমে ভারতীয় টাকায় বাণিজ্য করা যাবে। এই প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ব্রিটেন সহ বহু রাষ্ট্র। সোজা কোথায়, গোটা বিশ্বজুড়ে ডি-ডলারাইজেশনের ঝড় উঠেছে। এই ঝড় কিভাবে সামাল দেবে যুক্তরাষ্ট্র? এর উত্তর এখনো জানা নেই।
মার্কিন ডলার যে বড় বিপদের দিকে তা আঁচ করাই যায়। বেশ কিছু রিপোর্টের দাবি, ২০০৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গ্লোবাল রিজার্ভ মুদ্রায় ডলারের প্রকৃত শেয়ার ৬৬ শতাংশ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশে। শুধুমাত্র ২০২২ সালে এক ধাক্কায় সেই শেয়ার নেমে আসে ৪৭ শতাংশে, যা আগে কখনো হয়নি। ডলারের একছত্র আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার মত কিন্তু এখনও কোনো স্ট্রং মুদ্রা বিশ্ব বাজারে আসেনি। এমনকি ইউরো পর্যন্ত নয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি এখনই শক্ত হাতে হাল না ধরে তাহলে এমন একটা দিন আসবে, যখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ডলার ব্যবহার করতে চাইবে না। বিশ্বের এই দেশগুলো যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতা চাইছে, এমনটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। আসলে মুক্তি চাইছে ডলারের চাপ থেকে। যদি সবদেশ একজোট হয়ে ঠিক করে নেয়, তারা নিজেদের মুদ্রাতেই বাণিজ্য করবে, তখন কি হবে? এমত পরিস্থিতিতে ডলারের মর্যাদা হানি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ডলারকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কতটা স্ট্রং? এই রিপোর্ট শোনার পর আপনার কি মনে হয়? কমেন্টে জানাতে পারেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম