।। প্রথম কলকাতা ।।
রণাঙ্গনে পুতিনের ভরসা জিতেছে রাশিয়ার কম দামী আত্মঘাতী ড্রোন। কিয়েভের ভীত নাড়িয়ে দিচ্ছে ল্যান্সেট ড্রোন। হাজার চেষ্টা করেও বাগে আনতে ব্যর্থ। ১৭ মাসে ল্যান্সেট খতম করেছে প্রতিপক্ষের একের পর এক দামী অস্ত্র। ইউক্রেনের জন্য কতটা রিস্কি রাশিয়ার ল্যান্সেট ড্রোন? মিসাইলকেও টেক্কা? তুখোর ক্ষমতা। ল্যান্সেটের ব্যবহার বাড়াচ্ছে মস্কো। ইউক্রেন কে দেখেই কী কৌশল শিখছে রাশিয়া?
সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের জন্য মারাত্মক রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে রাশিয়ার ল্যান্সেট ড্রোন। জানলে অবাক হবেন পশ্চিমাদের লেপার্ড দুই ট্যাংক এবং সিজার সেল্ফ-প্রপেলড হাউটজারও এই ড্রোনের সামনে টিকতে পারে নি তুখোর পাওয়ার। ল্যান্সেট ড্রোনগুলোতে থাকে তুলনামূলক ছোট আকারের দেড় থেকে পাঁচ কেজির বিস্ফোরক। আর্টিলারি গোলা, অধিকাংশ রকেটের চেয়ে কম শক্তিশালী হয়েও ধ্বংস করার ক্ষেত্রে কম যায় না এই ড্রোনগুলো। ল্যান্সেট ড্রোন পরিচালনা করে পাইলট। এক্ষেত্রে ইরানের শাহেদ-১৩৬ ড্রোনের থেকে এটা আলাদা। ল্যান্সেট-এর সর্বশেষ মডেল ল্যান্সেট ৩, ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে। ফলে, ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনের অনেক ভেতরে ঢুকে এই ড্রোন আঘাত হানতে পারে।
ল্যান্সেট পারে আকাশে অপেক্ষা করতে। দরকারে তেড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ইউক্রেন চেয়েও পেরে উঠছে না। ইউক্রেনের ট্যাংক, সেল্ফ-প্রপেলড আর্টিলারি, রকেট লঞ্চ সিস্টেমের মতো অত্যন্ত দামী যুদ্ধাস্ত্রগুলোর কাছেও ল্যান্সেট দিনে দিনে রিস্কি হয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের বিএম-২১ গ্র্যাড রকেট লঞ্চারও, এখন রাশিয়ার ল্যান্সেটের বড় লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেন বলছে, ল্যান্সেটের মতো যেসব ড্রোন নীচ দিয়ে ধীরগতিতে ওড়ে, সেগুলো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করে। কারণ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে দ্রুতগামী বড় হিট সিগনেচারসমৃদ্ধ লক্ষ্যবস্তুকে প্রতিহত করার জন্য। ফলে, ল্যান্সেট দিব্যি পার পেয়ে যায়। তবে জাল বা ধাতুর তৈরি খাঁচা ল্যান্সেট বিস্ফোরণের ক্ষতি কিছুটা কমাতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে উপযুক্ত প্রতিরক্ষা, রাডার সংযুক্ত স্বয়ংক্রিয় অ্যান্টি-ড্রোন কামান ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ব্যবস্থা। এসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের সৈন্যরা প্রায়ই ল্যান্সেট ড্রোনকে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি করে ভূপাতিত করার চেষ্টা করে। তবে, ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে চলা কোনো বস্তুকে রাইফেল দিয়ে গুলি করে ভূপাতিত করা কি এতোই সোজা?
এখানেই ল্যান্সেটের কেরামতি। তাই, কম খরচে পশ্চিমা গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের ওপর হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ল্যান্সেট ড্রোনের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে। জেনে রাখুন, একটা ল্যান্সেট ড্রোনের জন্য খরচ পড়ে আনুমানিক তিন মিলিয়ন রুবল বা ৩৫ হাজার ডলারের মতো। আর, রাশিয়ার এস-৩০০ মিসাইলের কেবল একটির জন্যই খরচ করতে হয় কয়েক লাখ মার্কিন ডলার। একটি লেপার্ড ২ ট্যাংকের দাম কয়েক মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তফাৎটা বুঝুন। অবশ্য বসে নেই ইউক্রেন ও। কম খরচে রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য শক্তিশালী ড্রোন সক্ষমতা তৈরি করেছে ইউক্রেনও। কিন্তু, প্রশ্ন হলো সেগুলো কী ল্যান্সেট কে টেক্কা দিতে পারছে?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম