।। প্রথম কলকাতা ।।
Insomnia: আপনি না ঘুমিয়ে কদিন থাকতে পারবেন? চার-পাঁচ দিন তো দূর, একদিন না ঘুমালেই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে এই ব্যক্তি প্রায় ৫০ বছর না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলেন। এক মুহূর্তের জন্য চোখের পাতা এক করেননি। কি, রহস্য মনে হচ্ছে? ভাবছেন এটা কি সত্যি! শুধু আপনার কাছে নয়, এই ঘটনা অজানা রয়ে গিয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছেও। ঘুম মানেই শান্তি। আর সেই শান্তি ছাড়া কিভাবে দিন কাটে বছর ৮১ র নিয়পের? চলুন, আজকের সেই গল্প একটু শুনে নিন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ফেলে দিয়েছে এক বৃদ্ধের কথা। ভিয়েতনামের কুয়াং প্রদেশের বাসিন্দা নিয়প। এক নিদ্রাহীন বৃদ্ধ, ঘুমাননি প্রায় ১৮ হাজার ৬৬৫ দিনেরও বেশি। রাতে সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখনও এই বৃদ্ধ জেগে থাকেন। তার চোখে বিন্দুমাত্র ঘুম নেই। তাই গভীর নিশুতি রাতে কৃষি জমির কাজ করেন। তার জীবনে যে কোন দুশ্চিন্তা রয়েছে, কোন খারাপ ঘটনা ঘটে গিয়েছে, এমনটাও নয়। ঘুম না এলে তিনি নয় চাষবাস করেন, নয় আকাশের দিকে তাকিয়ে চুপটি করে বসে থাকেন। আবার কখনো বা নিজের শখের বাগানের দেখভাল করেন। শুনলে আশ্চর্য হবেন, এত বছর না ঘুমিয়েও কিন্তু তিনি দিব্যি সুস্থ রয়েছেন। তার শরীরে কোন রোগ এখনো বাসা বাঁধতে পারেনি। রীতিমত সক্ষম সবল এক বৃদ্ধ।
তার চোখে প্রায় ৫০ বছর ধরে কেন ঘুম নেই, সেই নিয়ে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন দেশ-বিদেশের বহু চিকিৎসক। কিন্তু উত্তর মেলেনি। তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল ভিয়েতনামের দ্য ন্যাং সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়। কিন্তু তার শরীরে কোন অস্বাভাবিকতার লক্ষণ দেখেননি চিকিৎসকরা। নিয়প মিথ্যে বলছেন নাকি সত্যিই ঘুম আসে না সেই বিষয়েও নজরদারি করা হয়েছে। কিন্তু পরিবার থেকে শুরু করে পাড়া পড়শির সকলের একই দাবি, নিয়প ঘুমান না। শোনা যায় ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় থেকেই নাকি তার ঘুমের অসুবিধা হতে থাকে। তখন থেকেই তিনি ঘুমাতে পারতেন না। ঘুম না হওয়াটা একেবারেই বিরল নয়। বহু মানুষ এক দুদিন না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেন। কিশোর বয়সে নিয়প যখন ঘুমাতে পারতেন না তখন বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু ১৯৭৩ সালের পর থেক দু চোখ থেকে ঘুম চিরতরে হারিয়ে যায়।
নিয়প সম্পর্কে আর একটা কথা শোনা যায়। ৩১ বছর বয়সে তিনি নাকি প্রবল জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত তিনি আর ঘুমাতে পারেননি। প্রথম প্রথম ঘুমাতে না পারলে তার খুব অস্বস্তি হত। কিন্তু এখন এই রুটিন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করেন। সব কাজই করেন। কিন্তু ঘুমাতে পারেন না, স্বপ্ন দেখেন না। যেহেতু চোখে ঘুম নেই, তাই নিয়োপ সারাদিনই নিজেকে নানান কাজে ব্যস্ত রাখে। রাতে ঘুমানোর জন্য কি না করেননি। ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন, মদ্যপান করেছেন কিন্তু চোখে ঘুম আসেনি। সাধারণ মানুষ সারাদিনে যা কাজ করতে পারে তার দ্বিগুণ কাজ করেন তিনি। বাড়ি থেকে রোজ তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে জমিতে কৃষি কাজ করতে যান। অনায়াসে তুলতে পারেন ৫০ কেজি ওজন। সোজা কথায়, অনিদ্রা তার জীবনে কোনো ছাপই ফেলেনি। জীবন বেশ সাদামাটা। দুই ছেলে, তিন মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম