।। প্রথম কলকাতা ।।
Dhirubhai Ambani: মাত্র দশম শ্রেণী পাস, পকেটে ছিল ৫০০ টাকা। এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলেন রিলায়েন্স গ্রুপের (Reliance Group) প্রতিষ্ঠাতা। আজ যাঁর ছেলে এশিয়ার সেরা ধনীদের মধ্যে একজন। যাঁর সম্পত্তির পরিমাণ আলিবাবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা এর সম্পদের চেয়েও বেশি। ইনি হলেন ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত উদ্যোক্তা ধীরুভাই আম্বানি (Dhirubhai Ambani)।
১৯৩২ সালের ২৮শে ডিসেম্বরে গুজরাতের (Gujarat) একটি ছোট্ট গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম। বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক, মা গৃহিণী। আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভালো ছিল না। সেই সময় দাঁড়িয়ে কম শিক্ষিত ব্যক্তিদেরও আর্থিক অবস্থা ভালো দেখে, ছোটবেলায় ধীরুভাই আম্বানির মধ্যে ধারণা তৈরি হয় বড়লোক হওয়ার সঙ্গে পড়াশোনা ভালো হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। তাই দশম শ্রেণী পাস করে সিদ্ধান্ত নেন প্রবাসে পাড়ি দেবেন। সেই অনুযায়ী চলে যান ইয়েমেনে। মাত্র ৩০০ টাকার বেতনে পেট্রোল পাম্পে কাজ করতে শুরু করেন। সেখানে অন্যের গাড়িতে তেল ভরে দিতেন আর টাকা সংগ্রহ করতেন। অথচ মাথার মধ্যে সর্বদা ঘুরত কিভাবে তিনি ধনী হবেন। সব সময় ছক কষতেন নিজের ব্যবসা খোলার। দুই বছর চাকরি করার পর টাকা জমিয়ে ব্যবসা করার জন্য চলে আসেন ভারতে। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে ফান্ডের জন্য বহু ছোটাছুটি করেছিলেন, কিন্তু কোন সাহায্য পাননি। যখন মুম্বাই আসেন তখন পকেটে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা, যা ব্যবসার জন্য একেবারেই যথেষ্ট ছিল না।
বর্তমানে সেই ধীরুভাই আম্বানির ছেলে মুকেশ আম্বানি এশিয়ার অন্যতম ধনীদের শীর্ষে রয়েছেন। মুকেশ আম্বানির বিলাসী জীবন বারবার নজর কাড়ে সাধারণ মানুষের। তাঁর কি নেই, বিশ্বের দামি দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি থেকে শুরু করে বড় বড় বাড়ির মালিক এবং তাঁর বিলাসিতা সবকিছুকে টপকে যায়। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি এবং টেলিকম শাখা জিওর হাত ধরে আম্বানি পরিবারের অফুরন্ত ধনভান্ডার অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় টেলিকমের তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে ২০১৬ সালের জিওর মাধ্যমে ফোরজি পরিষেবা চালু করেছিল মুকেশ আম্বানি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে গ্রাহক সংখ্যা ধারায় প্রায় ১৪০ মিলিয়নে। আম্বানি পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম বর্তমান পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। মুকেশ আম্বানি যে গাড়ি চড়েন , সেই দামে একটা বহুতল বাড়িও হয়ে যেতে পারে।
আম্বানি পরিবারের ব্যবসা শুরু হয়েছিল প্রচুর পুঁজি নিয়ে নয়। মুকেশ আম্বানির বাবা ধীরুভাই আম্বানি নিজের চাকরির টাকা অল্প অল্প করে জমিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। ব্যবসার টাকা একটু জমতেই তিনি বিদেশে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন মুম্বাইয়ে। সেখানেই ছোট ঘরে থেকেই শুরু হয় তাঁর স্ট্রাগল। স্থাপন করেন রিলায়েন্স কমার্শিয়াল কর্পোরেশন। যেখানে তিনি শুরু করেন মশলা এবং বিমল কাপড়ের ব্যবসা। কিন্তু তৎকালীন বাজারে বিমল কাপড় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। সেই কাপড়ের স্টক বিক্রি করতে ধীরুভাই আম্বানি নিজেই মাঠে নেমে কাজ করতে থাকেন। যে সময় মানুষকে ইনভেস্ট কি জানতো না, সেই সময় দাঁড়িয়ে ধীরুভাই আম্বানি ইনভেস্টর এবং কোম্পানির লোকদের এমন কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন যার মাধ্যমে সবাই উপকৃত হন। মাত্র হাতে গোনা কয়েক বছরের মধ্যেই ৭০০ কোটির রেভিনিউ বেড়ে ২০০২ সালে তা দাঁড়ায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার। ধীরুভাই আম্বানির মৃত্যুর আগেই সমস্ত ব্যবসা তাঁর দুই ছেলে মুকেশ আম্বানি এবং অনিল আম্বানির মধ্যে ভাগ করে দিয়ে গেছেন। ভাগ্যের পরিহাসে অনিল আম্বানি তা ধরে রাখতে পারেননি কিন্তু মুকেশ আম্বানি সেই সোপানকে আঁকড়ে আজ সবার শীর্ষে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম