।। প্রথম কলকাতা ।।
স্বস্তিক চিহ্নে নাকি ব্যান লাগিয়ে দেবে কানাডা! এ চিহ্ন শুধু হিন্দুদের নয়! হিটলারের ফ্ল্যাগে ছিল স্বস্তি। ঠাকুরের ঘটে হোক বা ঘরের আলপনা স্বস্তিক তো আঁকেনই কিন্তু কোথা থেকে উৎপত্তি স্তিক চিহ্নের? রুট শুনলে চমকে যাওয়ার মতোই ব্যাপার। প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বস্তিক চিহ্ন। এইটুকুই কি এর পরিচয়? কে প্রথম এঁকেছিলেন কল্যাণময় এই ডিজাইন? অনেকেই বলেন বাড়িতে যে স্থানে এই চিহ্নটি রাখতে চান সেই স্থান সুন্দর এবং পরিষ্কার হওয়া উচিত। ঘরে কখনোও উলটো স্বস্তিক আঁকবেন না, তাহলে তা অশুভ। একটা চিহ্নের এত মানে কীভাবে হয়? সনাতনের দেব দেবতারা জড়িয়ে নাকি এর সঙ্গে? তাহলে ন্যাত্সীদের রাজা হিটলারের পতাকায় কীভাবে এল স্বস্তিকের চিহ্ন। স্বস্তিক চিহ্ন ঠিক কতটা পুরোনো আর এর রুট কি এটা জানার জন্য গবেষণা শুরু করেছিল মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে সন্ধি কর্মসূচি IIT, NIT, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের নিয়ে শুরু হয় গবেষণা। মূল উদ্যোগটা ছিল খড়গপুর আইআইটির। আর এই গবেষণাতেই মেলে চমকপ্রদ তথ্য।
গবেষকরা দেখলেন যত পুরনো ভাবা হয়েছিল তার থেকেও অনেক বেশি প্রাচীন স্বস্তিক। ১১ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো এই স্বস্তিক চিহ্ন গবেষকদের দাবি প্রাক হরপ্পা যুগের সিলে সুগঠিত জ্যামিতিক গঠনের সন্ধান মিলেছে বেদেও মিলেছে স্বস্তিক চিহ্নের উল্লেখ। ঋগ্বেদকে আর্য সভ্যতার অংশ ধরা হলেও তার জন্ম আরও আগে প্রাক হরপ্পা যুগ থেকে শ্রুতির মাধ্যমে তা ভারত ভূমির সভ্যতায় বহমান। আর স্বস্তিক ভারতের গন্ডি ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দুনিয়ায়। তাতার মঙ্গোলিয়ার পথ দিয়ে কামচাটকা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকায়। সেখানে মায়া সভ্যতাতেও স্থান করে নিয়েছে এই চিহ্ন। পশ্চিমের পথ দিয়ে ফিনল্যান্ড, স্ক্যানডেনেভিয়া হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপেও এটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন চিনে ‘ওয়ান’, জাপানে ‘মনজি’, ইংল্যান্ডে ‘ফাইলফোট’, জার্মানিতে ‘হাকেনক্রয়েজ’ এবং গ্রিসে ‘টেট্র্যাস্কিলিয়ন’ বা ‘তেত্রাগামাদিয়ন’।
জ্যোতিষীদের মতে, যাত্রা শুরু করার আগে বা কোনও শুভ কাজে যাওয়ার আগে এই চিহ্ন দেখে বেরনো খুব শুভ তাই তা আর বন্দি থাকেনি শুধু ভারতের মধ্যেই এর বিস্তার এখন গোটা দুনিয়ায় এতো গেল পুরা কালের কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আধুনিক জার্মানি আর্য রক্তের অহঙ্কারের দর্পে তখন ইতিহাসে উত্থান অ্যাডলফ হিটলারের। ইতিহাসের নৃসংশতম এই একনায়কও প্রতীক করেছিলেন এই স্বস্তিক চিহ্নকেই। শেষপর্যন্ত জয় হয়েছিল শান্তিরই। কানাডা নাৎসিদের প্রতীক সেই ‘হাকেনক্রুজ’ যা গত শতাব্দী থেকে ঘৃণার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। তার সঙ্গে হিন্দুদের পবিত্র স্বস্তিকা চিহ্নকে মিলিয়ে ফেলেছে এর সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো-সহ অন্য নেতাদের।
যার জেরে এখন ইন্দো-কানাডিয়ান সম্প্রদায় শুরু করেছে ‘রিক্লেম স্বস্তিক’ আন্দোলন। ট্রুডোকে ক্ষমা চাওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে ট্রুডো কি করবেন সেটা তার ব্যাপার। এই স্বস্তিকের বিস্তার ও বিশ্বাস যে আজ ধরা ছোঁয়ার বাইরে তা স্পষ্ট বোঝা যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম