।। প্রথম কলকাতা ।।
Favorite Foods Of Netaji: ভারতবর্ষকে ইংরেজ শাসন শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য যে বীর যোদ্ধারা এগিয়ে এসেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhashchandra Bose)। আজ ভারত স্বাধীন হওয়ার পেরিয়ে গিয়েছে বহু বছর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মানুষের মধ্যে নেতাজিকে নিয়ে কৌতুহল এতটুকু শেষ হয়নি। আজও তাকে নিয়ে চলছে বহু রিসার্চ। তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে ভিন্ন জনের ভিন্ন মত। নেতাজিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বহু সিনেমা বহু ওয়েব সিরিজ। এমনকি পত্রপত্রিকাতেও তাঁর সম্বন্ধে বহু প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। এই সবকিছুই প্রমাণ করে আজও দেশবাসীর কাছে দেশপ্রেমের অন্য নাম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি ভারতকে ব্রিটিশ শাসনের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন, তিনিও কিন্তু আর পাঁচটা বাঙালির মতোই ভীষণ খাদ্য রসিক (Food Lover) ছিলেন। যদিও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম হয়েছিল উড়িষ্যার কটকে কিন্তু তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকায় উড়িয়া খাবারে তুলনায় বাঙালি খাবারের নাম বেশি। অসম্ভব চা প্রেমী ছিলেন নেতাজি। তাঁর সঙ্গে থাকতেন এমন বহু মানুষ সাক্ষী রয়েছেন সারা দিনে নেতাজির কুড়ি থেকে ত্রিশ কাপ চায়ের। পরবর্তীতে বিদেশে থাকাকালীন কফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
সুভাষচন্দ্র বসুর পছন্দের খাবারের তালিকায় কী কী বাঙালি খাবার (Bengali Food) ছিল জানেন ? তিনি ভাত, ডাল খেতে ভীষণ পছন্দ করতেন। ডালের মধ্যে তাঁর অন্যতম পছন্দের ছিল মুগ ডাল। আর খাবার পাতে দই থাকাটা একপ্রকার অলিখিত নিয়ম ছিল। এছাড়াও সুভাষচন্দ্র খিচুড়ি আর ভাতে ভাত খেতে বেশ পছন্দ করতেন। কিছু সবজি দিয়ে সেদ্ধ ভাত তিনি তৃপ্তি সহকারে খেতেন। ভালোবাসতেন পুরি বা লুচি খেতেও। ফলের মধ্যে তাঁর দারুণ পছন্দের ছিল কলা। এই কয়েকটি সাধারণ খাবারই তাঁর প্রতিদিনের ডায়েটে ঘোরাফেরা করতো বলে জানা যায়।
তিনি খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে খুব সক্রিয় থাকলেও রাজনীতিতে যোগদানের পর তার থেকে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়। স্বাভাবিকভাবেই একজন মানুষ সারাদিন অমানুষিক পরিশ্রম করার পর তাঁর খাওয়া-দাওয়ার কোন ঠিক থাকে না। এই কারণেই একসময় পেটের অসুখে ভুগেছিলেন নেতাজি। তখন সালটা ১৯৩৭। সেই সময় তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করার উদ্দেশ্যেই হিমাচল প্রদেশের ডালহৌসিতে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে এক জলাধারের জল খেয়ে তাঁর পেটের অসুখ সারে, এমনটাই শোনা যায়।
যিনি বাঙালি খাবার খেতে ভালোবাসেন, তিনি যে মিষ্টির (Sweets) প্রতি আলাদা আকর্ষণ অনুভব করবেন না এ আবার হতে পারে নাকি! তাই প্রত্যেক বাঙালির মতো নেতাজিরও মিষ্টির প্রতি একটা গভীর টান ছিল। তিনি রসগোল্লা, চমচম, পিঠে পুলি এবং সন্দেশ খেতে বেশ পছন্দ করতেন। তবে বাড়িতে যে সকল মিষ্টি তৈরি করা হয় অর্থাৎ গ্রাম বাংলার মিষ্টি সেই গুলি খেতে তিনি খুব ভালবাসতেন । গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি করা মনোহরা, চিনির পুলি, নারকেল নাড়ু, রসবড়া, ছাতুর বরফি ,মুরির নাড়ু, তিলের নাড়ু , তিলের চাকতি এইসব তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকাতেই ছিল।
তিনি দিনে বহুবার লেবুর জল খেতে পছন্দ করতেন । তবে নেতাজি শেষের দিকে নিরামিষ খেতে শুরু করেছিলেন। এমনটাই জানা যায় তাঁর মা প্রভাবতী দেবীকে লেখা তাঁর একটি চিঠি থেকে। বিদেশে থাকাকালীন তিনি কফি অনুরাগীতে পরিণত হয়েছিলেন। তবে সারাদিন মুখে কিছু একটা রাখতে ভালবাসতেন নেতাজি। এই কারণে সুপারি কখনও লবঙ্গ আবার কখনও হরিতকি বেছে নিতেন তিনি। তাঁর পছন্দের বাঙালি খাবারের তালিকায় যে যে খাবারগুলির নাম রয়েছে তা থেকে এটা অন্ততপক্ষে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, আদ্যোপান্ত বাঙালিয়ানায় পরিপূর্ণ ছিলেন আমাদের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম