তিনি তো অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan)। অসম্ভবকে সম্ভব করাই তো শাহেনশাহর কাজ। টানা ১০ ঘন্টা লেগেছে কল্কির মেকআপ করতে। অনেকেই তো বলছে, কল্কির আসল ম্যাজিকই হচ্ছেন বিগবি। অথচ জানেন কি, একটা সময় এই অমিতাভই দেনায় জর্জরিত হয়ে ডুবতে বসেছিলেন। সেখান থেকেও যে ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন সাম্রাজ্য তৈরি করা যায়, সেটাই করে দেখিয়েছেন ইনকিলাব শ্রীবাস্তব।
চমকে উঠলেন? ভাবছেন ইনকিলাব শ্রীবাস্তবটা আবার কে? তাহলে বলি শাহেনশাহর জন্মের পর এই নামটাই দিয়েছিলেন বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন। তবে পরে স্কুলে ভর্তির সময় তা বদলে দেন। এরপরের স্ট্রাগলের গল্পটা তো অনেকেই জানেন। আজ সেই অমিতাভ বচ্চন প্রায় 3396 কোটি টাকার মালিক। এদিকে মুক্তির দু সপ্তাহের মধ্যেই হাজার কোটির রেশে ঢুকে পড়েছে কল্কি 2898 এডি। যেখানে অশ্বত্থামার চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহেনশাহ।
অশ্বত্থামা, এক ভয়ঙ্কর যোদ্ধা। যার উপর লেগে রয়েছে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ। সেই অভিশাপ অনুযায়ী, অশ্বত্থামার কোনও শেষ নেই। শত কষ্ট সহ্য করেও সৃষ্টির শেষ অবধি তাকে টিকে থাকতে হবে। কল্কি 2898 এডি ছবিতেই এই অশ্বত্থামার ভূমিকাতেই অভিনয় করেছেন বিগ বি। সাদা চুল, বয়সের ভারে কুঁচকে যাওয়া চেহারা নিয়েই তিনি লড়াই করে গেলেন ৬০০০ বছরের ছোট ভৈরবের সাথে।
সেই লড়াই দেখে কে বলবে যে তার বয়স ৮১! তার মারকাটারি অ্যাকশন থেকে বাঘা বাঘা স্টান্টম্যানরা অবধি অবাক। কোথাও বয়সের এতটুকুও আঁচ পড়তে দেননি। দর্শকদের কথায়, একেই বলে পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আর এটা সম্ভব কেবল বিগ বি শাহেনশাহর ক্ষেত্রেই। অনেকেই তো বলেন, তিনি নাকি ঈশ্বরের বর প্রাপ্ত।
জীবনে অনেক ওঠা পড়ার সাক্ষী থেকেছেন অভিনেতা। ১৯৮২ সালে তো তাকে নিয়ে যমে মানুষে টানাটানি অবস্থা যাকে বলে। কুলি সিনেমার শুটিং চলছিল তখন। নিজের ফাইট সিন নিজেই করছিলেন, তখনও নেননি কোনও বডি ডাবিং। হঠাৎ করেই জোরদার লেগে যায় অভিনেতার তলপেটে। সেই আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, চিকিৎসকরা তাকে *ক্লিনিক্যালি ডেড* বলেই ঘোষণা করে দিলেন। তবে তার মধ্যেও একজন ডাক্তার ছিলেন যিনি হাল ছাড়েননি। ৪০টা ইঞ্জেকশন আর দুটো অপারেশনের পর নতুন জীবন পেলেন অমিতাভ। তারিখটা ছিল ২ অগাস্ট। গোটা ভারত জুড়ে সেলিব্রেট করা হয়েছিল সেই দিনটা। আজও অনেকেই এই দিনটায় শুভেচ্ছাবার্তা জানান অমিতাভকে।
তা এই মানুষটি ক্যারিশমা দেখাবেন তো কে দেখাবেন? ৮১ কেন তিনি যদি ৯০ বছর বয়সেও অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করেন তাও অবাক হবনা। তিনি আগেও পেরেছেন এবং ভবিষ্যতেও পারবেন। কঠিন লড়াই ছাড়া যে সাফল্য অসম্ভপব, তা তিনি বারে বারে ভক্তদের বলেছেন। আর সেই কারণেই তিনি আজও প্রাসঙ্গিক। আজও সমানতালে পাল্লা দিচ্ছেন নতুন প্রজন্মকে। কত অভিনেতাই তো এলেন, গেলেন। তবে অমিতাভ বচ্চন সেদিনও ছিলেন, আজও আছেন এবং আগামীতেও থাকবেন।