।। প্রথম কলকাতা ।।
রমরমিয়ে চলছে সাপের বিষ স্মাগলিং। সেফ করিডর বাংলাদেশ। জিভে বিষাক্ত কামড় পড়তেই ঝাঁকুনি। নেশায় বুঁদ হয়ে যাচ্ছে। অলিতে গলিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে সাপের বিষ। কোটি কোটি টাকার বিষ উদ্ধার হচ্ছে। কোথা থেকে আসছে?কোথায় যাচ্ছে? কী হচ্ছে এই বিষ দিয়ে? কারা এই বিষের বাণিজ্য সামলাচ্ছে? বাংলাদেশে সাপের বিষ চোরাচালানের কতটুকু জানেন? এটাই কি মেইন রুট? বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হচ্ছে? আসল ফ্যাক্ট জানলে আপনি ছিটকে যাবেন বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রায় সময়ই দেখা যাচ্ছে। কয়েক পাউন্ড সাপের বিষ, টেস্টিং কিট, ম্যানুয়াল বই উদ্ধার হয়েছে। সাপের বিষ পাচারচক্রের সদস্যদের আটক করা হচ্ছে। এইসব বিষের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাপের বিষ সংগ্রহ করে চোরাচালান করা হচ্ছে কিন্তু এতে বাংলাদেশের ভূমিকাটা ঠিক কি?
পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব বলছে, সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে চোরাচালানের একটা রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু কবে থেকে বাংলাদেশে সাপের বিষ চোরাচালান হচ্ছে? কবে থেকে বাংলাদেশ সাপের বিষ পাচারের রুটে পরিণত হলো? না, সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তথ্য বলছে, দেশি-বিদেশি চক্র প্রতিবছর ১০০ কোটি টাকার গোখরা সাপের বিষ পাচার করছে।পটুয়াখালীর নন্দীপাড়া, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর, রাজবাড়ীর কালুখালী, গাজীপুরের মণিপুর, রাজশাহীর ধর্মহাটা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, ঠাকুরগাঁও এবং ঢাকার ধারমাইয়ে বেশ কয়েকটা সাপের খামার আছে। এসব খামারের বিষের ক্রেতা ফ্রান্সের একাধিক প্রতিষ্ঠান। তাই বিষ পাচরকারীদের ধরতে খামারিদের ওপরই নজর রাখছেন গোয়েন্দারা। আবার পুলিশের ধারণা।ফেনী, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, যশোর ও কুমিল্লার একাধিক চক্র আছে, যারা কিনা এই সাপের বিষ সংগ্রহ ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশে কয়েক ধাপে সাপের বিষ পাচারের সিন্ডিকেট কাজ করে। আন্তর্জাতিক পাচারকারীদের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।তবে, বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকার আটক হওয়া সাপের বিষ নিয়ে বিতর্কও কম কিছু নয়। সাপের বিষ নিয়ে গবেষণারত বিশেষজ্ঞরা বলছন, বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া সাপের বিষ পরীক্ষা করে তারা দেখেছেন সেগুলো কোনোটাই নাকি “সাপের বিষ নয়”। তাহলে কেন কোটি কোটি টাকার সাপের বিষ আটকের খবর আসছে? আটক হওয়া ওই সাপের বিষ আদতে কী? কোনো নতুন মাদক নাকি স্রেফ জালিয়াতি?
লক্ষ্য করে দেখবেন, আটক করা সাপের বিষের ছবি কারুকাজ করা জারের গায়ে রেড ড্রাগন কোম্পানি, কোবরা, পয়জন অব ফ্রান্স এরকম লেখা থাকে। আর থাকে ‘মেড ইন ফ্রান্স’। সে ক্ষেত্রেও একটা কৌতূহল থেকেই যাচ্ছে। যদি এগুলো আদতেই সাপের বিষ হয়ে থাকে তবে কি আসলেই এসব ফ্রান্স থেকে আসছে? ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে তো এমন জার ভর্তি বিষ হাওয়া বা সমুদ্রের জলে ভেসে আসে না। যদি এগুলো সাপের বিষই হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে এসব বিষ কীভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে? জানা যায়, পাচারে আকাশ পথকে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশ বাণিজ্যিকভাবে সাপের বিষ বিক্রি করে না। ফ্রান্স সাপের বিষ বিক্রি করে না তাহলে কেন লেখা থাকে ‘মেড ইন ফ্রান্স’? তাহলে, ‘সাপের বিষের’ এই চোরাচালান কারা চালাচ্ছে? একমাত্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনীই এই রহস্য উদঘাটন করতে পারে। তাদের মতে, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে বিষ পাচার হয়। আবার উচ্চ মুনাফার আশায়, কখনও সেসব দেশ থেকে বিষ এনেও বাংলাদেশ হয়ে তৃতীয় দেশে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশের আইনে সাপের বিষের লেনদেন, ক্রয়, বিক্রয়, মজুত এবং পাচার কিন্তু দণ্ডনীয় অপরাধ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, বিষ পাচারকারী গোষ্ঠী বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম