।। প্রথম কলকাতা ।।
Rain in West Bengal: তিন দিনের টানা বর্ষনে সর্বনাশ হয়ে গেল কৃষকদের। জলে ভাসছে মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান। তিন দিনের টানা বর্ষণ কৃষকদের চোখে জল এনে দিয়েছে। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা। পাকা ধানে একরকম মই দিয়ে দিল এই নিম্নচাপের বৃষ্টি। আপনারা তো জানেনই, এ রাজ্যের বেশিরভাগ বাসিন্দাই শুধুমাত্র কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বার বার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খাড়া নেমে আসে তাদের মাথায়। ফের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বুক বাঁধেন তাঁরা। এবারের ধান নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল তাঁদের।তিনদিনের বৃষ্টি সব শেষ করে দিল। শুধু ধান নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষেরও। ক্ষতির মুখে পড়েছেন আলু চাষিরাও।
কালীপুজোর পর বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা থাকে না। তখন নিশ্চিন্তে ধান কেটে তা ঝাড়াই করে গোলায় তোলেন কৃষকরা। ধান বিক্রি করে হাতে কিছু অর্থ আসে। ধারদেনা মেটানো হয়। বন্ধক দেওয়া গয়না ছাড়ানো হয়। কেনা হয় সংসারের টুকিটাকি। গ্রামে গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় নবান্ন উৎসব। নতুন চাল গুঁড়ো করে তৈরি হয় পিঠে পুলি। সেই উৎসবের আবহে সর্বনাশ ডেকে আনলো এই নিম্নচাপের বৃষ্টি। মঙ্গলবার থেকে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। তার জেরে পাকা ফসল ঘরে তোলার মুখে মাথায় হাত চাষিদের। লাভ তো দূরের কথা। এখন সারা বছর খাবেন কি? সারা বছরের খোরাকির চালটুকুও যে জুটবে না।
বহু জমিতে পাকা ধান ছিল শুধু কাটার অপেক্ষায়। কারো বা ধান কাটার পর মাঠেই পড়ে ছিল। অনেকে ধান গাছ বেঁধে এক স্থানে জড়ো করে রেখেছেন বাড়িতে আনার জন্য। সেই মুহূর্তে হাজির সর্বনাশের নিম্নচাপের বৃষ্টি।জমিতেই পড়ে রয়েছে ধান। এক রকম জলে ভাসছে সেসব। সেই ধানের আর কিছুই আদায় করা সম্ভব হবে না। কৃষকরা বলছেন, বৃষ্টিতে ভিজে ধান মাঠে ঝড়ে যাবে।জলে ভিজে সেই ধানের কল বেরিয়ে যাবে। তার আর দাম মিলবে না। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সর্বত্র এক চিত্র। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষেও। বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে ফুলকপি। শশা, বেগুন, কাঁচা লঙ্কা সহ সব সবজি জমিতেই জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
টানা বর্ষনে ফলন তো কমবেই, গাছও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এর ফলে পিছিয়ে যাবে আলুর চাষ।অনেকেই আলু বসানো শুরু করে দিয়েছিলেন। তাঁদের অনেককেই আবার নতুন করে চাষ করতে হবে। তাতে খরচ বাড়বে অনেকটাই। জমি তৈরি করতেও বাড়তি সময় লাগবে। এই সময় কৃষকরা ধান কেটে আলু চাষের জন্য জমি তৈরি করেন। বৃষ্টিতে জমি থেকে ধান না তুলতে পারায় আলু লাগাতেও অনেকটা পিছিয়ে যেতে হবে।আলুর ফলনে দেরি হলে দামও ভালো পাওয়া যাবে না।সব মিলিয়ে এই নিম্নচাপের বৃষ্টি বড় ধরণের বিপর্যয়ের সামনে ফেলল কৃষকদের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম