।। প্রথম কলকাতা ।।
শেখ হাসিনার ব্রাসেলস সফর, তাতেই পাল্টে গেল সব ছক। চীনের সাথে আর মাখোমাখো নয়। এই সময় চলতে হবে বুঝে শুনে। তাল মেলাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে! সামনেই যে নির্বাচন। তাহলে কি ভয় পাচ্ছেন শেখ হাসিনা? হাতে রাখতে চাইছেন ইউরোপকে? চলছেন ভীষণ ব্যালেন্স করে। লাভ হবে তো? বাংলাদেশের মাটিতে জোর কম্পিটিশন। জিতবে কে?
বাংলাদেশে ইউরোপ নাকি চীন? কার প্রভাব সব থেকে বেশি? লড়াই কিন্তু চরমে। কিন্তু কারোর পক্ষই নিতে চাইছে না বাংলাদেশ। মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকোর সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার কথায়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি খুবই স্পষ্ট। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। ১৭ কোটির বাংলাদেশ অনেক ছোট, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সব দেশ থেকে বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশে সবাই পছন্দ অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু কোন বিনিয়োগ ভালো, তা মূল্যায়ন করে তবেই গ্রহণ করবে দেশটা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে ধরেছে বড় বাজি। শেখ হাসিনার সঙ্গে স্বাক্ষর করেছে দুর্দান্ত চুক্তি। যেখানে ঋণ ও অনুদানসহ পাওয়া যাবে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর প্যাকেজ। দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে এটা রীতিমত মাস্টারস্ট্রোক। আসলে এই উদ্যোগ কম্পিটিশন করছে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের নজর বাংলাদেশে কেন? আসলে একসময় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। অথচ এখন বলছে অর্থনৈতিক সাফল্যের গল্প। নেপথ্যের মূল কারিগর বিনিয়োগ, বিদেশি সাহায্য আর পোষাক রপ্তানি শিল্প। পাশাপাশি রয়েছে শেখ হাসিনার দক্ষ পরিচালনা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বহু পরাশক্তি দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করছে ঠিকই, কিন্তু ঠোক্কর খাচ্ছে চীনের কাছে। বারংবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে ইউরোপকে। বেজিংয়ের হিসেব বলছে, গত ৭ বছরে শুধুমাত্র বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ২৪১ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ জুড়ে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে চীনের প্রকল্প।
চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দ্বন্দ্বে কোন পক্ষই নেবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ চীন আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্যালেন্স করতে চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যতই চাপ দিক না কেন, সম্পর্ক কিন্তু তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির অর্ধেকের বেশি যায় শুধুমাত্র ইউরোপের বাজারে। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ফাঁকি দিয়ে চীন গুরুত্ব পেলে মুশকিল।
তার উপর সামনেই নির্বাচন। মাঝে গুনে গুনে আর মাত্র দুটো মাস। মসনদ ধরে রাখতে তৎপর হাসিনা সরকার, কিন্তু আসন্ন নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে? তা নিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে উঠছে প্রশ্নের ঝড়। বারংবার সতর্কতা প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিশ্বের একাধিক দেশ। এর আগে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। যদিও শেখ হাসিনা বারংবার জোর গলায় বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপির কোন প্রশ্নই নেই। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ রাজনৈতিক স্বাধীনতা থেকে শুরু করে মানবাধিকারের মানদন্ড মানছে কিনা তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাহলে শেখ হাসিনার এমন সমতা বিধানের চেষ্টা কি শুধুমাত্র নির্বাচনের কারণে? নাকি পুরোটাই পররাষ্ট্রনীতি? আপনার কি মনে হয়? আমাদের মন্তব্য করে জানাতে পারেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম