।। প্রথম কলকাতা ।।
International Mother Language Day: রাত পোহালেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস(International Mother Language Day)। তার আগের দিন ব্যাপক ব্যস্ততা দেখা গেল বাংলাদেশে (Bangladesh)। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতের পরে ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শুরু হবে। বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষা। যে ভাষার অধিকার পেতে হয়েছিল লড়াই করে। রক্ত ঝরে ছিল সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের মতো যুবকদের। মহান শহীদ দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দুই বাংলায় এখন পুরোদমে শেষ প্রস্তুতি চলছে।
সুন্দর আলপনা আর ভাষা আন্দোলনের নানান গান, কবিতা, স্লোগানে দেয়াল সাজাচ্ছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের পড়ুয়ারা। পাশাপাশি পরিষ্কারের কাজ চলছে। রং করা হচ্ছে গাছের গুড়ি। শহীদ মিনারের আশেপাশে থাকা দেয়াল ভরে উঠছে নানান ছবিতে। যেখানে ফুটে উঠেছে বাংলা ভাষা আর বাঙালির কথা। শহীদ মিনার এলাকায় এখানে মহা ব্যস্ততা। কেউ নিপুণ হস্তে সুন্দর করে বর্ণমালা লিখছেন, আবার কেউ শহীদদের ছবি আঁকছেন। সকাল হলেই আমুল বদলে যাবে শহীদ মিনার এলাকার চিত্র।
ঠিক রাত ১২টা ০১ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। গোটা বিশ্বজুড়ে রাত পোহালে পালন করা হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিন যাতে নিরাপত্তায় কোন ফাঁকফোকর না থাকে তাই ঢাকা সিটি পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছেন ঢাকাই জঙ্গি হামলার কোন আশঙ্কা নেই। বইমেলার পুরো এলাকার পাশাপাশি পলাশি থেকে দোয়েল এলাকা পর্যন্ত সিসিটিভির নজরে রাখা হবে। শহীদ মিনারের প্রবেশপথে রাখা থাকবে আর্চওয়ে। ভিতরে প্রবেশ করতে হলে চাইলে প্রত্যেককে আর্চওয়ের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে। ভিআইপিরা প্রবেশ করবেন দোয়েল চত্বর দিয়ে। গাড়ি রাখার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে জিমনেসিয়াম মাঠে। সাধারণ মানুষ প্রবেশ করবেন পলাশির মোড় দিয়ে জগন্নাথ হল থেকে। ঢাকা জুড়ে এখন বাঙালির উৎসাহ তুঙ্গে। মাতৃভাষা দিবসে উপস্থিত থাকবেন দেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি শহীদদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বিদেশি কূটনৈতিক এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ। পুষ্প অর্পণ হয়ে গেলে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। পাশাপাশি পেয়েছিল দেশভাগের যন্ত্রণা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যেখানে বাঙালিদের বাস, তাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল উর্দু ভাষা। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলেও ভাষা নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। বাঙালি বারবার বলে গেছে তারা উর্দু নয়, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেতে চায়। অবশেষে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ আরো জোরালো হয়ে ওঠে। বলা হয়, ভাষা আন্দোলনে ঠিক কত জন বাঙালি যুবক শহীদ হয়েছিলেন এখনো পর্যন্ত তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা পাওয়া যায় না, তবে বারংবার যে নামগুলি পাওয়া যায় সেই তালিকায় রয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের নাম। মাতৃভাষা নিয়ে যে আন্দোলন তৈরি হয়েছিল সেখানেই স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বপ্নের বীজ বপন করা হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম