।। প্রথম কলকাতা।।
Parenting Tips: বাচ্চার স্কুলের প্রথম দিন প্রত্যেকটি বাবা-মায়ের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রত্যেক অভিভাবক এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। আসলে বাচ্চাদের প্রথম স্কুলে (School) পাঠানো তাদের ভবিষ্যতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে । এটা একটা বড় মাইল ফলক বাচ্চাদের (Children) জীবনে । বর্তমানে দেখা যায় মা-বাবা দুজনেই কর্ম ব্যস্ত জীবনের কারণে মুখে বুলি ফুটতে শুরু করলেই বাচ্চাদের পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে তাদের প্রি স্কুলে (Pre School) পাঠিয়ে দেন। অনেকে মনে করেন এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের (Mental Health) গঠন আরও দ্রুত হবে । বাস্তবের মাটিতে পা রাখবেন তাদের সন্তানরা।
যদিও এই প্রি স্কুলগুলিতে দু থেকে তিন ঘন্টা থাকতে হয় বাচ্চাদের । কিন্তু এক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট বয়স রয়েছে কী? পাঁচ বছরের আগে একটি শিশুকে বাড়ির বাইরে স্কুলে পাঠানো তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা সুবিধা জনক? এই বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করার মতো । এত অল্প বয়সে তাদের স্কুলে পাঠালে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কোন রকম প্রভাব পড়ে না তো ? এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সমীক্ষা চলে। সেখান থেকেই এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছে যা প্রত্যেকটি মা- বাবার জানা প্রয়োজন।
গবেষণা যা বলছে
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে কোন কোন বাচ্চা জন্মগতভাবে এমন কিছু প্রতিভা নিয়ে জন্মায় যা তাকে অন্য বাচ্চার থেকে কিছুটা আলাদা করে । যেমন সে কোন জিনিস খুব দ্রুত মুখস্থ করতে পারে, কোন জিনিস খুব দ্রুত চিনে ফেলতে পারে, রং সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারণা রয়েছে, এইরকম বহু। কাজেই সেই সকল বাচ্চাদের তাড়াতাড়ি স্কুলে পাঠানো বেশ লাভজনক হতে পারে। তবে আরও একটি বিষয় গবেষণায় বলা হয়েছে যে, একটা শিশুর মস্তিষ্কের প্রায় ৯৫ শতাংশ বিকাশ হতে অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগে। তাই তার আগেই যদি বাচ্চাকে কোন প্রি স্কুলে বা শিক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয় তাহলে সেটা তাঁর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার মেডিকেল (University of Exeter Medical) স্কুলের গবেষকদের একটি গবেষণার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের যদি স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে তা্ঁরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতে পারে। কারণ এত ছোট বয়সে বাড়ি থেকে কয়েক ঘন্টা দূরে থাকা তাদের মনে একটা ভয়ের সৃষ্টি করবে। চেনা পরিবেশ ছেড়ে অচেনা পরিবেশে গেলে তাদের মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবেই। একই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে । নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারে সে।
এমনও অনেক সময় দেখা যায় যে কোন শিশুর সহপাঠীর বয়স তাঁর থেকে বেশি। কাজে সে তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে সঠিকভাবে মিশে উঠতে পারছে না। এক্ষেত্রেও কম বয়সের শিশুদের স্কুলে পাঠানোর বিষয়টিকে দায়ী করা হয়। মা-বাবা থেকে শিশুকে দূরে রাখলে তাঁর মনে মা বাবার সম্পর্কে নেগেটিভ ছবি তৈরি হতে পারে । কারণ শিশু বয়সে সবথেকে আস্থার জায়গা হল বাবা-মা। সেই সময় কোনটা তাদের ভালোর জন্য এবং কোনটা তাদের খারাপের জন্য করা হচ্ছে এই বিষয়ে জ্ঞান শিশুদের থাকে না। তাদের বুঝে ওঠা কখনই সম্ভব নয় । তাই আপনার শিশুকে স্কুলে পাঠানোর আগে অবশ্যই কিছু বিষয় বিবেচনা করে নিন।
যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন
- যদিও বাচ্চাদের স্কুলে খুব জোর দুই থেকে তিন ঘন্টা রাখা হয় । কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে শিশুর টয়লেট ব্যবহার করতে হতে পারে , তাকে নিজে খেতে হতে পারে তাই অন্ততপক্ষে এই বিষয়গুলির প্রশিক্ষণ বাড়িতেই দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- আপনার সন্তান যাতে কোনরকম সমস্যায় পড়লে সেটা অন্য কাউকে বলতে পারে এটা তাকে শেখান। নইলে স্কুলে গিয়েও জড়তার কারণে নিজের সমস্যার কথা মুখ ফুটে বলতে পারবে না আপনার শিশু।
- কিছু সময় তাকে ধীরস্থির রাখা এবং পরিবারের সদস্যদের থেকে বাইরে রেখে বাস্তব জগতের সাথে ধীরে ধীরে পরিচয় ঘটানোর জন্য প্রি স্কুলগুলি বেশ উপকারী। এক্ষেত্রে অবশ্যই এমন স্কুল বেছে নিন যেখানে আপনার বাচ্চা দিনের দু-তিন ঘন্টা একেবারে নিরাপদে থাকতে পারবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম