।। প্রথম কলকাতা ।।
চাঁদের কলঙ্কই চাঁদকে বানিয়েছে অসাধারণ সুন্দর। মানুষের মুখে মুখে তাই তো চাঁদকে নিয়ে এত রূপকথার গল্প। অথচ স্বপ্নসুন্দর চাঁদেই রয়েছে এমন গর্ত, যেখানে পা দিতে ভয় পান নভোচারীরা। গর্তেই রয়েছে ভয়ঙ্কর ভয়। কি সেই ভয়? যার কারণে এই নভোচারীরা চাঁদে ভেবেচিন্তে পা ফেলেন? ভয় পান মহাকাশযান নামাতে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা গর্ত গুলোতে কয়েকবার পা দিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। চাঁদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এরকম লক্ষ লক্ষ গর্ত, যার রহস্য এখনো অধরা।
শুধু নভোচারী নয়, মহাকাশ যানও চাঁদে নামানোর ক্ষেত্রে প্রচুর রিস্ক রয়েছে। সামান্য ভুলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পুরো যান। আসল ভয় এই গর্ত নিয়ে। যেখানে শুধুই অন্ধকার। প্রবেশ করে না সূর্যের বিন্দুমাত্র আলো। পৃথিবী থেকে আপনি যে চাঁদের কালো কালো দাগ দেখেন, সেগুলোই কিন্তু চাঁদের রহস্য। নভোচারীরা যতবার চাঁদে পা রেখেছেন, ততবারই আবিষ্কার করেছেন নতুন নতুন গর্ত। চাঁদে রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ গর্ত। যদিও গর্তগুলোও কি কারণে তৈরি হয়েছে তার সম্পূর্ণ তথ্য অজানা। মনে করা হয়, চাঁদ ও পৃথিবীর পথ চলা শুরু হয়েছিল একইসঙ্গে। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন বছর আগে। চাঁদের দিকে ধেয়ে এসেছিল প্রচুর উল্কা আর গ্রহাণু। সেগুলি আছড়ে পড়ে তৈরি করে বড় বড় গর্ত। মাঝেমধ্যে গর্তে উল্কাপিণ্ড পড়লে সময়ের সাথে সাথে লাভা ঠান্ডা হয়ে যায়। আয়রনের আধিক্য থাকায় সূর্যের আলো খুব একটা রিফ্লেক্ট করে না। যার কারণে গর্তগুলো আরো বেশি কালো দেখায়।
তবে শুধু চাঁদেও নয়, পৃথিবীতেও রয়েছে এই ধরনের প্রাকৃতিক গর্ত। এখনো পর্যন্ত সামনে এসেছে প্রায় ১৮০ টা গর্ত। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এতটাই বেশি যে ছোট ছোট উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর মাটিতে পড়ার আগেই বায়ুমন্ডলের সংঘর্ষে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অপরদিকে চাঁদে বায়ুমণ্ডল না থাকায় উল্কাপিন্ড সহজেই আছড়ে পড়ে চাঁদের বুকে, তৈরি করে প্রচুর গর্ত। সংখ্যাটা এতটাই বেশি যে নভোচারীরা চাঁদে গেলেই সন্ধান পান নতুন গর্তের। এই গর্তগুলো নিয়ে কিন্তু কম গবেষণা চলছে না। শুধু তাই নয়, এগুলো নিয়ে বেশ ভীত নভোচারীরা। কিছু কিছু গর্তে পা দিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। চিহ্নিত করেছেন প্রায় ৯,১৩৭ টি গর্ত। কিন্তু গবেষণা চালাতে পারেননি। এই গর্ত গুলোর উৎপত্তি কিভাবে, বয়স কত কিংবা এর মধ্যে কি আছে তার সবটাই অজানা। আর তাই তো চাঁদের কলঙ্ক হয়েই রয়ে গিয়েছে গর্ত গুলো।
নাসার বিজ্ঞানীরা বহুবার চাঁদে বসতি করার নকশা করেছেন। কিন্তু এখনো সফলতা আসেনি। আসলে পৃথিবীর দুই রক্ষা কর্তা আছে। প্রথমত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল, যা মহাজাগতিক ঝড়-ঝাপটা থেকে আমাদের বাঁচায়। সৌর বায়ু , সৌর ঝড়ের মতো ভয়ঙ্কর শত্রুদের থেকে আগলে রাখে। দ্বিতীয়ত পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র। কিন্তু চাঁদের না আছে এমন বায়ুমণ্ডল, না আছে চৌম্বক ক্ষেত্র। তাই সূর্য থেকে ধেয়ে আসা ঝড় থেকে শুরু করে মহজাগতিক রশ্মি প্রতিমুহূর্তে আছড়ে পড়ছে চাঁদের বুকে। পরতে পরতে তৈরি করছে রহস্যের জাল। এবার হয়ত অপেক্ষার অবসান ঘটাবে, ভারতের ল্যান্ডার বিক্রম। উদঘাটন করবে আসল সত্য।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম