।। প্রথম কলকাতা ।।
Sarojini Naidu: ছোটবেলা থেকেই নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে এসেছেন তিনি। তাঁকে ভারতের ‘নাইটেঙ্গেল’ নামে সকলেই চেনে। ১৮৭৯-র আজকের দিনে হায়দরাবাদে জন্ম হয় তাঁর। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তিনি যোগ দিয়েছেন ‘ডান্ডি পদযাত্রায়’। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও কবি বরদাসুন্দরী দেবীর জ্যেষ্ঠ কন্যা। কম বয়স থেকে কবিতা লিখতেন সরোজিনী নাইডু। ১৯১৪-তে ইংল্যান্ডে প্রথম গান্ধীজির সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপরই গান্ধীজির চিন্তাভাবনায় প্রভাবিত হয়ে নিজের জীবন দেশের সেবায় উৎসর্গ করেন তিনি।
মাত্র ১৯ বছর বয়সে গোবিন্দরাজুলু নাইডুর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। কেবল রাজনীতি নয় সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁর প্রথম কবিতা সংগ্রহ ‘দ্য গোল্ডেন থ্রেসহোল্ড’ প্রকাশিত হয় ১৯০৫-এ। তাঁর দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাব্য সংকলন ‘সময়ের পাখি’ এবং ‘ব্রোকেন উইং’ তাঁকে আরও মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। তিনি তাঁর উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন লন্ডনের কিংস কলেজ এবং পরে কেমব্রিজের গিরটন কলেজ থেকে। তাঁর সঙ্গে একদম মাটির স্তরের মানুষদের যোগাযোগ ছিল। মানুষের মধ্যে বিপ্লব ছড়াতে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন। দেশবাসীদের নিজেদের কর্তব্যের কথা বারেবারে মনে করাতে মিশেছেন সব মানুষের সঙ্গে। তাঁর আরেকটি প্রতিভা ছিল। তিনি বহু ভাষায় কথা বলতে পারতেন। প্রয়োজন আর পরিস্থিতি বুঝে ইংরেজি, হিন্দি, বাংলা অথবা গুজরাটি ভাষায় নিজের বক্তৃতা দিতেন। লন্ডনের সভায় তাঁর বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান সেখানে উপস্থিত মণ্ডলী।
‘দ্য নাইটেঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া’ নামে পরিচিত সরোজিনী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি এবং স্বাধীন ভারতে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যপালও। ১৯০৩ থেকে ১৯১৭-র মধ্যে গোপালকৃষ্ণ গোখলে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, সি.পি. রামস্বামী আইয়ার, জহরলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন সরোজিনী নাইডু। জহরলাল নেহরুর সঙ্গে ১৯১৬-তে সাক্ষাতের পর চম্পারণে তিনি নীল চাষীদের হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। গান্ধীজির অসহযোগে তিনিই প্রথম যোগ দিয়েছিলেন। ১৯১৯-এ ইংল্যান্ডে হোমরুল লীগের দূত মনোনীত হন তিনি। ১৯২৪-এর জানুয়ারিতে তিনি পূর্ব আফ্রিকান ভারতীয় কংগ্রেসের দুই জাতীয় কংগ্রেস প্রতিনিধির অন্যতম রূপে নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৪২-এর ২ অক্টোবর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে অংশ নেবার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সময় গান্ধীজির সঙ্গে ২১ মাস কারাগারে বন্দী ছিলেন সরোজিনী। তাঁর সঙ্গে গান্ধীজির সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে, তিনি তাঁকে ‘মিকি মাউস’ বলেও ডাকতেন। ১৯৪৯-এর ২ মার্চ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম