।। প্রথম কলকাতা ।।
Mystery of Netaji: নেতাজি (Netaji) শুধুমাত্র একজন রক্ত মাংসের মানুষ নন, বহু ভারতবাসীর কাছে তিনি দেশনায়কের পাশাপাশি ভগবানের সমান। আজও তাঁর অন্তর্ধানকে কেন্দ্র করে নানান রহস্য (Mystery) রয়েছে। কেউ মনে করেন তিনি মারা গেছেন, আবার কেউ মনে করেন এখনো তিনি বেঁচে রয়েছেন। বিমান দুর্ঘটনার পর নেতাজিকে নিয়ে তৈরি হয় নানান রহস্যের ঘনঘটা, যা উপযুক্ত প্রমাণ সহ এখনো পর্যন্ত ভেদ করা যায়নি। বহু জল্পনা, আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্কের পরেও আজও নেতাজির মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে। বহু দেশবাসী মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন নেতাজি আজও বেঁচে রয়েছেন। তবে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, তিনি আজীবন ভারতবাসীর মনে অমর হয়ে থাকবেন। তাঁর জায়গা কেউ নিতে পারবে না। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose) দাদা ছিলেন বঙ্গবিপ্লবী শরৎচন্দ্র বসু (Sarat Chandra Bose)। দুই ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তার দাদা শরৎ বসুকে দেখে নিজেকে দেশপ্রেমে আত্মনিয়োগ করেন। সেই শরৎ বসু পর্যন্ত বিমান দুর্ঘটনার পর নেতাজির ঘড়ি দেখে বলেছিলেন সেটি তাঁর ভাইয়ের নয়।
ভারত মাতার সাহসী বীর বিপ্লবী সুভাষচন্দ্রের অত্যন্ত অন্তরঙ্গ ছিলেন তাঁর মেজ দাদা শরৎচন্দ্র বসু। দু’জনেই অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু তাঁদের সেই ব্যস্ততাময় জীবনের সাথে ছিল নানান টুকরো কাহিনী। সুভাষচন্দ্র বারংবার তাঁর দাদাকে দেখেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ভারতীয় জাতীয় সেনা বাহিনী গঠনের পিছনে নেতাজিকে মানসিক এবং সর্বতোভাবে সমর্থন করেছিলেন তাঁর এই মেজ দাদা। তৎকালীন সময়ে শরৎচন্দ্র বসু ছিল দিল্লি সরকারের কাছে এক প্রকারের ভয়ের মত। সেই সময়কার সরকার ভাবত, নেতাজি সুভাষচন্দ্রের সমস্ত কর্মকাণ্ডের পিছনে মূল উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন শরৎচন্দ্র বসু । কিন্তু তা একেবারেই ভুল ছিল। শরৎচন্দ্র বসুর মূল লক্ষ্য ছিল, যে বিপ্লবীরা বিনা দোষে স্বদেশী আন্দোলনের জন্য জেলে যাবেন তাদের হয়ে তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে লড়াই করবেন। তবে তিনি নেতাজির নানান কর্মকাণ্ড বা খবর গোপনে আদান প্রদান করতেন।
একবার দূরের এক মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য প্রচণ্ড ব্যস্ততা সহকারে সবাই তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু দেরি করছিলেন নেতাজি নিজে। অথচ ট্রেন ছাড়তে আর মাত্র ৭ মিনিট বাকি। আর সেই ট্রেনের পরে আর কোন ট্রেন ছিল না অথচ মিটিংটা ছিল অত্যন্ত জরুরি। একদম ট্রেন ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে শরৎচন্দ্র বসু হাওড়া স্টেশনের কর্তৃপক্ষদের বারংবার ফোন করে সেই ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রেখে ছিলেন। অপরদিকে চিন্তার একরাশ বোঝা নেমে গিয়েছিল নেতাজির মাথা থেকে।
নেতাজির বিমান দুর্ঘটনার পর শরৎ বসু কখনোই বিশ্বাস করতে চাননি যে সেই দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। তিনি রীতিমত প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছিলেন নেতাজির বিশ্বস্ত সঙ্গী হাবিবুর রহমানকে। হাবিবুর রহমান যখন নেতাজি ভবনে আসেন, তখন তাঁকে একের পর এক জেরা করেন শরৎ বসু। হাবিবুর রহমান জানিয়েছিলেন, তিনি নাকি চেষ্টা করেছিলেন নেতাজিকে আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর এবং তাই তাঁর হাত যথেষ্ট পুড়ে যায়। অথচ তাঁর সেই হাতে সামান্য মাত্র পুড়ে যাওয়ার দাগ ছিল। তাই শরৎ বসু কিছুতেই সেই কথা বিশ্বাস করতে চাননি। তখন হাবিবুর তাঁর হাতে একটি ঘড়ি তুলে দেন , যেখানে একটু পোড়া দাগ ছিল। পরে ঘড়িটি ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করে দেখা যায় ঘড়ির বেল্টের পোড়া দাগ অ্যাসিড থেকে সৃষ্টি হয়েছে। অথচ সেই ঘড়িটি আদৌ নেতাজির কিনা তারও কোন যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নেতাজি আর শরৎ বসুর মধ্যে সম্পর্ক ছিল বিশ্বাসের বন্ধনে আবদ্ধ , পাশাপাশি ছিল স্নেহের আবেশ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম