।। প্রথম কলকাতা ।।
কৃষ্ণ সাগরে ঝড় তুলল রাশিয়ার “সাইক্লোন”। আরও সমৃদ্ধ হল পুতিনের অহংকার ‘ব্ল্যাক সি ফ্লিট’। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশবাহিনীর বড় অপারেশনের ইঙ্গিত? মিসাইল ক্রুজার সাইক্লোনের ক্ষমতা জানেন? সমুদ্র শাসনের ক্ষমতা রাখে সাইক্লোন। রাশিয়ার কনফিডেন্সে ভয়ে তটস্থ ইউক্রেন। যে কৃষ্ণসাগর রাশিয়ার জন্য এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর, সেই কৃষ্ণ সাগরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ব্ল্যাক সিং ফ্লিট নামের বিশেষ ইউনিট। আর, তারই অংশ হিসেবে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরে নামালো নতুন মিসাইল ক্রুজার সাইক্লোন।
আকারে ছোট হলেও সাইক্লোন একসাথে ৮টি শক্তিশালী দূরপাল্লার মিসাইল আক্রমণে সক্ষম। আক্রমণ এবং শত্রুর হামলা থেকে বাঁচাতে ওই যুদ্ধজাহাজটিতে রাশিয়া সব ধরনের ব্যবস্থা নিযুক্ত করেছে। সাধারণত কৃষ্ণ সাগরের যুদ্ধজাহাজ গুলো থেকে রাশিয়া, ইউক্রেনে ক্যালিবার ক্রুজ মিসাইল হামলা চালিয়ে থাকে। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিন থেকে এখনো পর্যন্ত রাশিয়া শত শত ক্রুজ মিসাইল হামলা করেছে ব্ল্যাক সি ফ্লিট এর ডেস্ট্রয়ার, করভেট, ফ্রিগেট থেকে। সেই তালিকাতেই নবতম সংযোজন সাইক্লোন যুদ্ধ জাহাজ। এক কথায় বলতে গেলে সাইক্লোন আরো সমৃদ্ধ করল ব্ল্যাক সি ফ্লিট কে। এই নৌযানের প্রতিরক্ষায় প্যান সির অ্যান্টি এয়ারক্রাফ্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে এটি ইউক্রেনের বায়ারাক্তার ড্রোন মিসাইল সহ যেকোনো হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে, বলে দাবি করছে রাশিয়া। সাইক্লোন তৈরীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর হয়েছে পরীক্ষা। চলমান বিশেষ সামরিক অভিযানের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৈরি এই যুদ্ধ জাহাজ পরীক্ষায় ফুল মার্কস পেয়ে পাশও করেছে। যে কোন অবস্থা এবং যে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমভাবে কাজ করতে সক্ষম রাশিয়ার সাইক্লোন।
চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই যুদ্ধ জাহাজের অভিষেককে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন পুতিন। তবে, এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে ব্ল্যাক সি ফ্লিট এর নেতৃত্বে থাকা রাশিয়ার মিসাইল ক্রুজার মস্কোভা, ইউক্রেনের অ্যান্টি শিপ মিসাইলের আঘাতে ডুবে গিয়েছিল। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছে রুশ বাহিনী। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন সাইক্লোন এর সঙ্গে না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম ব্যবস্থা রেখেছে রাশিয়া। যদিও, ব্ল্যাক সি ফ্লিট যথেষ্টই শক্তিশালী। চোখ বন্ধ করে এই ইউনিটের উপর ভরসা করে রাশিয়া। ব্ল্যাক সি ফ্লিট ১৭৮৩-৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ক্রিমিয়ান যুদ্ধের সময় এই ইউনিটটি বেশ কয়েকটি নৌ যুদ্ধে লড়াই করে। বর্তমানে কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তায় দায়িত্বে রয়েছে এই ব্ল্যাক সি ফ্লিট। শুধুমাত্র কৃষ্ণ সাগরের নিরাপত্তায় যে নিয়োজিত তাই নয়, আজভ সাগর এবং ভূমধ্যসাগরের রাশিয়ার সার্থরক্ষার দায়িত্বও তাদের উপর। ফলে ব্ল্যাক সি ফ্লিট এর যুদ্ধ জাহাজগুলো ক্ষমতার দিক থেকে সবসময়ই ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের তুলনায় এগিয়ে থাকার চেষ্টা চালায়। এমনকি সংখ্যাতেও।
বড় আকারের ডেস্ট্রয়ার, মাঝারি ফ্রিগেট, ছোট করভেট ছাড়াও এই ফ্লিটে আছে সাবমেরিন মিসাইল বোর্ড, মাইন সুইপার সহ ৫০ এর ও বেশি রণতরী। রাশিয়ার জন্য কৃষ্ণসাগর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উষ্ণ জলের বন্দর হিসেবে খ্যাত সেবাস্তপোল কৃষ্ণ সাগর তীরেই অবস্থিত। রাশিয়ার ভয়ংকর ঠান্ডায় যখন দেশটির বেশিরভাগ বন্দর অকার্যকর হয়ে পড়ে তখন এই কৃষ্ণ সাগরের সেবাস্তপোল বন্দর দিয়েই রুশরা ব্যবসা-বাণিজ্য চালায়। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্ব আরো বেড়েছে। ফলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্ল্যাক সি ফ্লিট এর গুরুত্বও। এবার এই বিশেষ ইউনিট এর হাত শক্ত করতে সাইক্লোনের সংযোজনে আরও কনফিডেন্ট হলো রুশবাহিনী।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম