।। প্রথম কলকাতা ।।
ইরান রাশিয়ার কিলার ড্রোন টেনশন বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কী এক্সট্রা বেনিফিট এনে দেবে এই কিলার ড্রোন? রাশিয়ার ভেতরেই মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াচ্ছে ইরানের ড্রোন কারখানা। ইরানকে ব্লক করার ছুঁতো খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। ভেতরে ভেতরে রাশিয়ার হাত শক্ত করছে ইরানি ড্রোন। জালের মতো নিজের নেটওয়ার্ক বিস্তার করছে ইরান। নিজেদের দুর্বলতা কাটানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া। ইরানের হাত ধরে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে পারবে কি দেশটা?
ইরানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কিলার ড্রোন নির্মাণের নতুন একটি কারখানা তৈরীর পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। দেশটার ভেতরে তৈরি হওয়া এই ড্রোনের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া অনেকটা সুবিধাজনক পজিশনে পৌঁছে যেতে পারবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ইরান ও রাশিয়া, দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে রাশিয়ার ভেতরেই তৈরি হবে এই কিলার ড্রোন। ড্রোন কারখানাটি মস্কোর পূর্বে অঞ্চলে তৈরি করা হবে। ২০২৪ সালে এই কারখানা কাজ শুরু হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই কারখানা থেকে তৈরি হবে ৬০০০ এর বেশি ড্রোন। এতে রাশিয়ার সামরিক শক্তি আরও বেশি জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেও ইউক্রেন যুদ্ধে তলে তলে রাশিয়ার হাত শক্ত করে চলেছে ইরান থেকে আমদানি হওয়া বিভিন্ন শক্তিশালী অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। জানা যায়, ইরান থেকে জাহাজে করে নিয়মিত ড্রোন আমদানি করে রাশিয়া। ইরানের আমিরাবাদ থেকে নিয়ে আসা হয় এসব ড্রোন। যা কাস্পিয়ান সাগর হয়ে রাশিয়ার মারগাছ কালায় চলে আসে। সেখান থেকে রাশিয়ার দুটো ঘাঁটিতে ড্রোনগুলোকে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘাঁটির একটি আছে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব এলাকায়, অপরটি রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায়।
ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হয় এই সমস্ত ড্রোন। যুদ্ধে ব্যবহারের আগে পর্যন্ত এই দুটো ঘাঁটিতেই রাখা হয় ইরানি ড্রোন গুলোকে। এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এর আগে গলা তুলেছে, কিন্তু তাতে যে বিশেষ ফল হয়নি সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। তবে এরপর দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে যে ড্রোন কারখানা নির্মাণ হতে চলেছে রাশিয়ার ভেতরে, তা যুক্তরাষ্ট্রকে ইতিমধ্যেই টেনশনে ফেলে দিয়েছে। ২০২১ সাল থেকেই এই ড্রোন কারখানা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা শোনা গেছে। হোয়াইট হাউস এরই মধ্যে স্যাটেলাইট থেকে তোলা কিছু সেনসিটিভ ছবি সংগ্রহ করে বিভিন্ন ফোরামে পাঠিয়ে, ইরানের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী ফোরামগুলো যেন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইরানের ড্রোন প্রকল্পে কোনরকম সাহায্য না করে, যুক্তরাষ্ট্র সেই বিষয়টাই নিশ্চিত করতে চাইছে। জানিয়ে রাখি, ইরান বিভিন্ন দেশে তার নেটওয়ার্কের জাল ছরিয়ে দিচ্ছে যাতে যে কোন নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধকে সরিয়ে রেখে তারা যেন তাদের প্রয়োজনীয় সামরিক প্রযুক্তি সংগ্রহ করতে পারে।
সেক্ষেত্রে ইরানকে থামিয়ে রাখা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এতো সহজ কাজ যে হবে না সেটা বলতেই হচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ ড্রোন খাতে রাশিয়ার পদ্ধতিগত দুর্বলতা কে বড় করে সামনে এনেছে। রাশিয়া তাদের বর্তমান ড্রোন ঘাটতি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য একাধিক ড্রোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে, দ্রুত সংকটকালীন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। রাশিয়ার চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে আছে অপরিণত ড্রোন নির্মাণ কাঠামো এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হাতে না পাওয়া। রাশিয়া যে এতদিন ধরে স্বল্প পাল্লার ট্যাকটিক্যাল ড্রোন গুলো নির্মাণ করেছে সেগুলোতে রয়েছে নানান সীমাবদ্ধতা। কারণ রাশিয়া নির্মিত ড্রোন গুলো ভারী পেলোড বহন করতে পারে না। এছাড়া উন্নত ড্রোন প্রযুক্তিগুলো রাশিয়ার হাতে নেই। সে ক্ষেত্রে ইরান যদি ড্রোন ও মিসাইল নির্মাণে রাশিয়াকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে তাহলে রাশিয়া যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলো অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম