।। প্রথম কলকাতা ।।
রোলস রয়েস, বিশ্বের ধনকুবেরদের পচ্ছন্দের গাড়ি। বিশ্বের সেই অন্যতম গাড়ি নাকি পরিষ্কার করেছিল ভারতের রাস্তা। একটা দুটো নয়, ছটা রোলস রয়েসের সামনে ঝাড়ু লাগিয়ে পরিষ্কার করা হতো নোংরা। ভাবতে পারছেন? কোটি কোটি টাকার গাড়ি দিয়ে নাকি চলত সাফাইয়ের কাজ। কিন্তু কেন? ইংরেজদের অপমানের মোক্ষম জবাব দিয়েছিলেন এক ভারতীয় রাজা। গল্পটা জানলে এই ভারতীয় রাজার প্রতি সম্মানে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যাবে। সেই সময় দাঁড়িয়ে তিনি ইংরেজদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ভারতীয়রা মুখ বুজে অপমান সহ্য করে না।
রোলস রোয়েস এমন একটা ব্র্যান্ড, যে ব্রান্ডের গাড়ি কেনার জন্য পৃথিবীর তাবড় তাবড় ধনকুবেররা মুখিয়ে থাকে। ১৯০৪ সালে এই গাড়ির পথ চলা শুরু। এই ব্র্যান্ডের সর্বনিম্ন গাড়িটা কিনতে গেলেও প্রায় দুই কোটি টাকা খরচ করতে হবে। ভারতে তখন ব্রিটিশদের রাজ চলছে। তখন এই এত দামি গাড়ি দিয়েই চলত রাস্তা পরিষ্কারের কাজ। নেপথ্যে ছিলেন আলোয়ারের রাজা জয় সিং প্রভাকর। অত্যন্ত সৌখিন জীবন যাপন করতেন। সোনার বিছানায় ঘুমাতেন, সোনার পোশাকও পরতেন।
রাজা জয়সিং প্রভাকর বেড়াতে যান ইংল্যান্ডে। লন্ডনের শহরে সাধারণ মানুষের পোশাকে ভ্রমণের সময় চোখে পড়ে রোলস রয়েসের শোরুম। শোরুমে গিয়ে সেলসম্যানের কাছে জানতে চান, গাড়ির সম্পর্কে কিছু কথা। কিন্তু সেলসম্যান অতি নগণ্য সাধারণ পোশাকে থাকা ভারতীয়কে ভাবেন ইংল্যান্ডের সামান্য কর্মচারী। রাজা বারংবার জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেলসম্যান বিরক্ত হয়ে তাঁকে বাইরে বার করে দেন।
অপমানিত এবং ক্ষুব্ধ রাজা ফিরে যান হোটেল। হোটেলে গিয়ে রাজকীয় পোশাক পরিধান করে খবর পাঠান রোলস রয়েসের শোরুমে। রাজার আগমন বার্তা খবর পেয়ে বিছিয়ে দেওয়া হয় লাল কার্পেট। তিনি মোট ৬টি রোলস রয়েসের গাড়ি নগদ টাকায় কিনে নেন এবং গাড়িগুলি শোরুমের ম্যানেজার নিজ দায়িত্বে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সাথে যায় অপমানকারী সেই সেলসম্যানকে। কিন্তু ভারতে গাড়িগুলো পৌঁছাতেই রাজা আদেশ দেন, প্রতিদিন গাড়ি গুলি ব্যবহার করা হবে ভারতে রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করার জন্য। প্রত্যেকটি গাড়ি তুলে দেওয়া হয় সাফাই কর্মীদের হাতে। এই খবর ইউরোপ থেকে আমেরিকা পৌঁছাতে বেশি সময় নেয়নি। ইউরোপের অত্যন্ত ধনী ব্যক্তি যাঁরা এই ব্র্যান্ডের গাড়ি ব্যবহার করতেন তারাও ভীষণ লজ্জায় পড়ে যান। এই ভেবে যে , ভারতের ময়লা পরিষ্কার করা গাড়ি তারা ব্যবহার করছেন। রাতারাতি বিশ্ববিখ্যাত গাড়িটির আভিজাত্য ও জনপ্রিয়তা শূন্যে নেমে আসে। বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি বিক্রি।
অবশেষে রোলস রয়েস কোম্পানি রাজা জয়সিং প্রভাকরকে অনুরোধ করে এমনটা না করার জন্য। প্রতিশ্রুতি দেয়, আরো ছটি নতুন মডেলের গাড়ি ভারতে পাঠাবে। যদিও শেষ পর্যন্ত রাজা কোম্পানির অনুরোধ রাখেন। সেদিন ভারতীয় রাজা উচিত শিক্ষা দিয়েছিল রোলস রয়েস কোম্পানিকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম