।। প্রথম কলকাতা ।।
Ravana Palace in Sril Lanka: জানেন, এখনও শ্রীলঙ্কায় রয়েছে রাবণের সাম্রাজ্য! যেখানে সীতাকে অপহরণ করে রেখে দিয়েছিলেন। রাবণের সোনার লঙ্কা এখনো কি তাহলে টিকে রয়েছে? এখানেই আছে রাবণের সমাধি, আশ্চর্য উপায়ের রাবণ ব্যবহার করত লিফট। এ যেন এক অন্য দুনিয়া। মহাকাব্য রামায়ণের গল্প বলছে বাস্তবের ইতিহাস। এদেশের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুধু রামায়ণের কাহিনী। চলুন, আজ ঘুরে আসি রাবণের রাজ্য থেকে।
ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা, চারিদিকটা নীল সমুদ্রে ঘেরা । এই দেশেই রয়েছে রামায়ণ মহাকাব্যের বহু চিহ্ন। এখানেই আছে সীতা আম্মান মন্দির। বলা হয়, এই মন্দিরের পাশ দিয়ে যে নদী বয়ে গিয়েছে, সেখানেই সীতা স্নান করতেন। শ্রীলঙ্কার অত্যন্ত জনপ্রিয় মন্দির মুনেস্বরম মন্দির। রামচন্দ্র রাবণকে বধ করার পর এখানে এসে নাকি মহাদেবের আরাধনা করেছিলেন। আর সেই মনে আছে, সঞ্জীবনী পর্বতমালার কথা? লক্ষণকে বাঁচাতে হনুমান গন্ধমাদন পর্বত নিয়ে এসেছিলেন। যার পাঁচটি টুকরো পড়েছিল লঙ্কার পাঁচটি জায়গায়। যার মধ্যে অন্যতম দোলকুণ্ড সঞ্জীবনী পর্বতমালা। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এখানে পাওয়া গাছের ঔষধি গুন বিশাল। আর এই উদ্ভিদ গুলোর সঙ্গে নাকি ভারতীয় উদ্ভিদেরও বেশ মিল রয়েছে। এখানে থাকা পাহাড়ে রয়েছে হনুমানের পদচিহ্ন। কোথেমালে নামক জায়গায় রয়েছে, সীতা গোলি। বলা হয়, এই গোলি মূলত চাল দিয়ে তৈরি এক ধরনের লাড্ডু। রাবণ সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় এই গোলি খাবার হিসেবে দেন। রামচন্দ্র যাতে তাঁদের সন্ধান পান, তাই সীতা সেই লাড্ডু না খেয়ে ফেলতে ফেলতে গিয়েছিলেন।
এরকম টুকটাক বহু নিদর্শন রয়েছে। তবে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় হল, রাবণের প্রাসাদ। বিশ্বাস করা হয়, পুরাণ যুগের রাবণের প্রাসাদ আজও বহাল তবিয়াতে টিকে রয়েছে শ্রীলঙ্কায়। রাবণের সাম্রাজ্যের মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি বাদুল্লা, অনুরাধাপুরা, পোলোনারুওয়া প্রভৃতি এলাকা গুলো। প্রাসাদটি রয়েছে শ্রীলঙ্কার সিগিরিয়াতে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন এক খন্ড বিশাল বড় পাথর। কিন্তু তা না। কাছে গেলে বুঝতে পারবেন, আশ্চর্য তার ডিজাইন। কি নেই এখানে! বাগান পুকুর খাল দুর্গ সোপান থেকে শুরু করে রয়েছে ঝরনা। প্রাসাদটি তৈরি করেছিলেন রাবণের ভাই কুবের। সিগিরিয়া হল একটা রক পাহাড়ের চূড়ায় থাকা প্রাচীন প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ। রাবণ সীতাকে প্রথমে কয়েকদিন এখানে রেখেছিলেন। তারপর অন্যত্র নিয়ে যান। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপারটা কি বলুন তো, দেখতেই তো পাচ্ছেন, এর উচ্চতা ঠিক কত উপরে। অথচ এখানে কোনদিনও জলের অভাব হয়নি, অর্থাৎ জল তোলার জন্য আলাদা ব্যবস্থা ছিল। পাথর খন্ডের উপর রানীদের জন্য ছিল সুসজ্জিত বাগান। তার সাথে চূড়ায় পৌঁছানোর জন্য ছিল ১০০০ ধাপের সিঁড়ি আর একটা লিফট। স্থানীয় মানুষ জন বলেন, রাবণের মৃতদেহ রাখা হয়েছে প্রায় আট হাজার ফুট উচ্চতায়। তাও আবার মমি হিসেবে। যদিও এর পোক্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/717896800532920/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
আপনি চাইলেই রাবণের এই রাজপ্রাসাদ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। সিগিরিয়াকে অনেকে আবার বলেন লায়ন রক। কারণ রকের দুদিকেই রয়েছে পাথরের সিংহের থাবা। এই বিশাল বড় পাথরটির উচ্চতা প্রায় ২০০ মিটার। ট্রেকিং করে যেতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘন্টা। আর হ্যাঁ, এখানে প্রবেশ করতে সার্ক ভুক্ত দেশের নাগরিকদের ১৫ ডলারে হয়ে যাবে, না হলে খরচ করতে হবে ৩০ ডলার। রাবণের এই রাজত্ব থেকে মনে হবে, আপনি অনেক উঁচুতে আছেন। আর নিচের দিকে তাকালেই শুধু সবুজের সমারোহ। চোখে পড়বে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টন গ্রানাইট পাথর কেটে তৈরি করা অপরূপ জলাশয়। মূলত শত্রুদের হাত থেকে বাঁচতেই এমন জায়গায় সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন রাবণ। যাবেন নাকি, রাবণের এই প্যালেস দেখতে?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম