।। প্রথম কলকাতা ।।
কৃত্রিম মেঘ তৈরি করে বৃষ্টি নামানোর কথা শুনেছেন? প্রকৃতির ওপর আর নির্ভর করার দরকার নেই। প্রয়োজন মতো আকাশ থেকে নামিয়ে আনা যাবে বৃষ্টি। বিমানের মাধ্যমে আকাশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বৃষ্টির সহায়ক বিভিন্ন সামগ্রী। তৈরি হবে মেঘ। নেমে আসবে বৃষ্টি! সেই কাজ করতে তৈরি আইআইটি কানপুর। প্রথম কোথায় সেই বৃষ্টি নামানোর প্রস্তাব দিল তারা? আপনি নিশ্চয়ই জানেন, ভয়াবহ দূষণের কবলে দিল্লি সহ গোটা উত্তর ভারত। দিওয়ালির আগেই ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে ভারতের রাজধানী দিল্লির দূষণ।বর্তমানে রাজধানীতে শ্বাসগ্রহণে শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা ২৫-৩০টি সিগারেট পানের সমান। শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও প্রবীণরা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে শিশুদের সুরক্ষায় রাজধানীর সব প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লির সরকার। সব নির্মাণ কাজ বন্ধের কথা ভাবা হচ্ছে।ভাবা হচ্ছে ভিন রাজ্যের যানবাহন দিল্লিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা। আপনি এখন ভাবছেন এসব করে এই দূষণ কমানো যাবে কি? ঠিকই ধরেছেন।বৃষ্টি না হলে এই দূষণ কমবে না। কিন্তু এখন তো বৃষ্টির সময় নয়! তাহলে? মুস্কিল আসান হতে চলেছে আইআইটি কানপুর। দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাতে তৈরি তারা। কিভাবে তা সম্ভব? চলুন দেখে নিই এই প্রতিবেদনে।
দূষণ কমানোর অন্যতম উপায় হল বৃষ্টি। কিন্তু প্রাক-শীত পর্বে, নভেম্বরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।তাই এবার কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে আইআইটি কানপুর। কৃত্রিম মেঘ তৈরি করে বৃষ্টি নামাতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন আইআইটি কানপুরের গবেষকরা। ক্লাউড সিডিং নামে পরিচিত কৃত্রিম বৃষ্টি আবহাওয়া পরিবর্তনের একটি কৌশল।যা মেঘের মধ্যে মাইক্রোফিজিক্যাল প্রক্রিয়াগুলিকে পরিবর্তন করে বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই পদ্ধতিটি ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং অন্যান্য দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই পদ্ধতি সাম্প্রতিক সময়ে জলের অভাব, খরা, কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি মোকাবিলার জন্য ব্যবহৃত হয়। সেই কাজ করতে এখন প্রস্তুত ভারতও। কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর বিষয়টি নিয়ে গত ৫ বছর ধরে কাজ করে চলেছে আইআইটি কানপুর।গত জুলাই মাসে এর পরীক্ষাও সফল হয়েছে।এবার সার্বিকভাবে দিল্লি ও সংলগ্ন এনসিআর অঞ্চলে দূষণ ঠেকাতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাতে উদ্যত হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে র অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলেও আইআইটি কানপুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আইআইটি কানপুরের গবেষকরা জানিয়েছেন, কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট আবহাওয়ার প্রয়োজন।সেজন্য চাই পর্যাপ্ত আর্দ্রতা এবং উপযুক্ত বাতাস সহ মেঘের উপস্থিতি। মেঘ তৈরি করে এবং কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করা প্রাক-শীতকালীন মাসগুলিতে কাজ করতে পারে কি না তা এখনও খতিয়ে দেখা বাকি।
কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য রাজধানীর আকাশে বিমান ওড়ানোর প্রয়োজন। আইআইটি-কানপুরের একটি বিমান আছে। মেঘের মধ্যে লবন ছেটানোর জন্য সেই বিমানের ডানাগুলিতে কিছু পরিবর্তনও করেছে তারা। বিমান ওড়ানোর জন্য ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন ডিজিসিএ-র অনুমতি লাগে। এছাড়া কৃত্রিম বৃষ্টি করানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি-র থেকে একাধিক অনুমোদন নিতে হবে। যখনই বিমান ওড়ানোর প্রয়োজন হবে, তখনই অনুমতি চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কানপুর আইআইটির গবেষকরা৷ এ দেশের বুকে কৃত্রিম বৃষ্টি কবে নামে সেটাই এখন দেখার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম