।। প্রথম কলকাতা ।।
Paradise for Migratory Birds: শীত মানেই মিষ্টি রোদ পিঠে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে উশখুশ করে বাঙালি। আর বছর শেষে বাঙালির পায়ে যেন সর্ষে। বড়দিন বা বর্ষশেষে ঘরে বসে থাকতে কারই বা মন চায়। অনেকেই শীতযাপনের ডেস্টিনেশন ঠিক করে ফেলেছেন। আপনি এখনও কোথায় যাবেন ভেবে উঠতে পারেননি! তবে আপনার গন্তব্য হতেই পারে শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন ফুলবাড়ি। শীত পড়তেই ফুলবাড়ির মহানন্দা ব্যারেজে শুরু হয়েছে শত শত পরিযায়ী পাখির আনাগোনা।
নীল জলে এখন নানা রঙের বাহার। নাম না জানা কত পাখি! কত যে তাদের রূপ! বরফে মোড়া সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পেরিয়ে উড়ে এসেছে তারা। কি কি পাখি এসেছে এবার?
শীতের সময় ফুলবাড়ির বাড়তি আকর্ষণ অগুণতি পরিযায়ী পাখি। নানা আকারের বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে ফুলবাড়ির বিভিন্ন জলাশয়ে। এই পাখিদের দেখা মিলছে ফুলবাড়ি ব্যারেজেও। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এসে হাজির হয়েছে রাজগঞ্জ ব্লকের ফুলবাড়ি ব্যারেজে সংলগ্ন মহানন্দা নন্দীতে। মহানন্দার স্বচ্ছ জলে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে। অনেকে আবার দল বেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক। অপরূপ সে দৃশ্য। ফুলবাড়িতে পরিযায়ী পাখিরা আসতেই ভিড় বাড়ছে পর্যটকদেরও। শীত শুরু হতেই বিভিন্ন প্রজাতির রুডি শেলডাক, রিভার ল্যাপউইং সহ নানা ধরনের অতিথি পাখি এসেছে। শীতের ক’মাস ঘাঁটি গাড়ে হুইসলিং ডাক, পিনটেল ডাক, পায়েড কিংফিশার, ওয়াইল্ড স্প্যারোর মতো পাখিরাও।এবারও তাদের আসা শুরু হয়েছে। এই পরিযায়ী পাখিরা মূলত মঙ্গোলিয়া, তিব্বত, দক্ষিণ আফ্রিকা, সাইবেরিয়া সহ অন্যান্য দেশ থেকে আসে।
শীত কমার সাথে সাথে তারাও ফিরে যায় তাদের দেশে। শীত যত বাড়ছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যাও তত বাড়ছে। তেমনভাবে ভিড়ও বাড়ছে পর্যটকদের। অনেকেই অপার বিস্ময়ে দেখছেন তাদের। কত যে তাদের বাহার। কারও বাহারি লম্বা লেজ। কারও শরীরে রঙের মেলা। অনেকেই ঘুরছে দল বেঁধে। কেউ কেউ আবার একাকী। পরিবেশপ্রেমীরা বলছেন, উত্তরবঙ্গ শুধু পর্যটকদের নয়, টানে পরিযায়ী পাখিদেরও। তুষারাবৃত প্রবল ঠান্ডা এলাকা থেকে তারা চলে আসে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ এই এলাকায়। নভেম্বর ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু করে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এরা এখানে থাকে।
উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক পরিবেশ এই পাখিদের কাছে বিশেষ পছন্দের। তাই তারা এদিকটায় চলে আসে।শীত এলেই উত্তরবঙ্গ পরিযায়ী পাখিদের প্যারাডাইস হয়ে ওঠে। মহানন্দায় প্রচুর ছোট ছোট মাছ রয়েছে। তাই খাবারের অভাব নেই। সে জন্যই এখানে এই পাখিদের ভিড় বেশি। তবে তাদের আগলে রেখেছেন পাখিপ্রেমী স্থানীয় বাসিন্দাও। পরিবেশ শান্ত রাখতে এখানে জোরে সাউন্ড সিস্টেম বাজানো বন্ধ।
এখন মহানন্দার এই এলাকায় মাছ ধরাও নিষেধ। শান্তির পরিবেশ মিলতেই ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে পরিযায়ী পাখিরা। তাই আর দেরি নয়। রুকস্যাক পিঠে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। সঙ্গে একটা বাইনোকুলার রাখতে ভুলবেন না।
https://www.facebook.com/100082942485331/posts/359105730197507/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v