।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশকে ভরিয়ে দেবে পদ্মা সেতুর এই রেল নেটওয়ার্ক। এই রুটে কী আছে? অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটল মালগাড়ি। ঢাকা-মাওয়া রেললাইনে বুস্টার এফেক্ট? জালের মতো কানেকশন, রাজধানীর সঙ্গে জুড়ে গেল এতোগুলো জেলা। এ যে সে অভিজ্ঞতা নয়। জানেন ঢাকা-মাওয়া রেলপথে কী কী সুবিধা পাবে যাত্রীরা?আন্দাজ আছে? পদ্মা সেতুর উপরে বসানো রেলট্র্যাক ধরে আরেকটা স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।
এক ধাপ করে এগোচ্ছে পদ্মা রেলসেতু। আর বাংলাদেশের মানুষ ততটাই উদগ্রীব। আরও একটা পরীক্ষায় পাশ। ঢাকা-মাওয়া রেলপথে পদ্মা সেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেনের পর এবার মালগাড়ি। মালবাহী ট্রেনের গতি চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা করা হলো। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ১২০ কিলোমিটার গতির সফল পরীক্ষার পর মাওয়া টু ঢাকা মালবাহী ট্রেন ছুটল ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিতে। তিনটি ওয়াগন নিয়ে প্রথমে ৬০ কিলোমিটার গতিতে ছোটে মালবাহী ট্রেন। পরে কমলাপুর থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিতে মাওয়ায় পৌঁছায় ট্রেনটি। ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে মাওয়া স্টেশনে মালবাহী ট্রেন পৌঁছাতে সময় লেগেছে মাত্র এক ঘণ্টা। মনে রাখবেন এই সফল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ২১ জেলাকে রেলপথে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করার মাইলফলকের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পার করলো পদ্মা রেলসেতু, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করবে সমৃদ্ধ।
বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল ঘিরে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে ঠিকই, কিন্তু এই রেলপথ এখন পুরো প্রস্তুত। এতে ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। দক্ষিণে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ছাড়াও এবার কম খরচে পণ্য পরিবহন করা যাবে ট্রেনে, শুধুই কি তাই? যাত্রী পরিষেবা নিশ্চিত করতে নানান পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ভাঙার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর পর প্রথম স্টেশন গেন্ডারিয়া। এই জংশনের পর মূলত শুরু হয় পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৬৯ কিলোমিটার মূল পথ। তারপরেই দেখা যায় ১৭ কিলোমিটারের উড়াল রেলপথ যেটা ধলেশ্বরী সেতু পার হয়ে শেষ হয় কুচিয়া মরান্তেই। এই রেলপথ যাত্রীদের দেবে অন্যরকম অভিজ্ঞতা। আর কেরানীগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম উড়াল রেলস্টেশন। যেখানে থাকবে দুটো প্রধান লাইন ও দুটো লুপ লাইন। এক্সেলেটর, লিফ্ট সিরিসহ পাথর বিহীন পথে রয়েছে বিরাট এক আয়োজন। ঢাকা, গেন্ডারিয়া, কেরাণীগঞ্জের পর রয়েছে নিমতলা, শ্রীনগর, মাওয়া নামে আরও তিনটে স্টেশন। সব মিলিয়ে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত চল্লিশ কিলোমিটারে থাকবে ছটি স্টেশন।
ঢাকা থেকে মাওয়ার মধ্যে কেরানীগঞ্জ, নিমতলা এবং শ্রীনগর স্টেশন এর কাজ শেষের দিকে। সবমিলিয়ে ঢাকা টু ভাঙা পর্যন্ত দশটা স্টেশনের মধ্যে ৫ টা আপাতত চালু থাকবে বলে জানা গিয়েছে। এই স্টেশনগুলোতে রয়েছে আলাদা পার্কিং ব্যবস্থা। শিশু ও বয়স্ক যাত্রীদের জন্য রয়েছে চলন্ত সিঁড়ি ও লিফ্ট। প্লাটফর্মের উচ্চতাও এমনভাবে করা হয়েছে যাতে ট্রেনে ওঠার ক্ষেত্রে যাত্রীদের সুবিধা হয়। পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পের বগিগুলো ও বেশ খানিকটা স্পেশাল। তবে অন্যান্য স্টেশনের কাজ এগোলেও ভাঙ্গা জংশন এর কাজ শেষ হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। জানা যায়, ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে অনুমোদিত হয় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এই রেল সংযোগ প্রকল্পের বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। একই সঙ্গে ভাঙা-পাচুরিয়া-রাজবাড়ী পর্যন্ত রেলপথটি ব্যবহার করে এসব অঞ্চলের মানুষ ঢাকার সঙ্গে সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। এক কথায় বাংলাদেশ এর রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যেমন বেশ কয়েকটা জেলার কানেকশন পড়তে হবে তেমনি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটবে। পদ্মারেল সেতু বাংলাদেশকে ভরিয়ে দেবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম