।। প্রথম কলকাতা ।।
Hilsa Fish: ঘোর বর্ষা, অথচ এখনো ইলিশ নিয়ে টানাটানি। বাংলাদেশ এই রূপোলি মাছের খনি হলেও আশঙ্কায় মৎস্যজীবীরা। তাহলে কি পদ্মার স্বাদের ইলিশ থেকে বঞ্চিত হবে বাঙালি? ভারতের বাজারে বাংলাদেশের ইলিশ মিলবে তো? এ বছর ইলিশ উৎপাদন কতটা বাড়বে? দাম কোথায় পৌঁছাতে পারে? ইলিশ প্রেমীদের জন্য রয়েছে দুর্দান্ত সুখবর। কপাল খুলবে মাঝিদের।
বাঙালির ইলিশ প্রীতি একটু বেশি। চকচকে রুপোলি ইলিশ দেখে ইচ্ছা হয় অনেকেরই, কিন্তু কিনতে পারে কজন? দাম নির্ভর করে যোগানের উপর। বর্ষা এলে চারিদিকে ইলিশ উৎসবের ধুম পড়ে যায়। অথচ এবছর আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ এলেও, কপাল খোলেনি বহু ব্যবসায়ীর। বাংলাদেশে আষাঢ় মাসে সমুদ্রে মাছ ধরা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় টুকিটাকি যা ইলিশ ধরা পড়েছে, তা নদীর। কিন্তু চাহিদা বেশি, অথচ যোগান কম। স্বাভাবিকভাবেই দামে ছ্যাঁকা লাগছে ইলিশ প্রেমীদের। মন খারাপ করবেন না। আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা। দু মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও জুলাই মাস থেকে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সমুদ্র পানে ছুটছেন মাঝিরা। এবার বর্ষার সময়টাও ঠিক নেই। যদিও এখন বৃষ্টি হচ্ছে। তাই আশা করা হচ্ছে, মাঝিদের জালে আটকা পড়বে রুপোলি ইলিশ। এই মুহূর্তে মাছ কেমন হবে তা বলে মুশকিল, তবে উৎপাদন ভালো হতে পারে। কারণ মাছের প্রজনন বেড়েছে। বাংলাদেশে গত বছর ইলিশের প্রজনন সাফল্য ছিল ৫২.৩২ শতাংশ। এ বছর জাটকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি।
গত এক দশকে বাংলাদেশের ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দুই লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি। বাংলাদেশ সমুদ্রের শস্যকে নিয়ে কম গবেষণা করছে না। নদীতে মাছ পুষ্ট হওয়ার জন্য রয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা। রীতিমত তিন দফায় চলে পরিকল্পনা। চলতি বছরে কর্মসূচি গুলো বেশ সফল। তাই সমুদ্রবক্ষে বেড়েছে ইলিশের সংখ্যা। বর্তমানে দেশটাতে উৎপন্ন ইলিশের পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন। বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ পায় বিশ্বের বহু দেশের মানুষ।
ইলিশ শুধুমাত্র মাছে ভাতে বাঙালির প্রিয় খাবারই নয়, এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভরসার জায়গা। ইলিশ দেশটার মানুষের খাদ্য আর আমিষের যোগান সুরক্ষিত করে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি আয়েও বড়সড় ভুমিকা রয়েছে। দেশটার মাছ থেকে মোট উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে শুধুমাত্র ইলিশ থেকে। জিডিপিতে যার অবদান শতকরা ১ শতাংশ। ইলিশ বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য। বিশ্বে ইলিশ আহরণে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে মোট উৎপাদিতে ইলিশের শুধুমাত্র ৮০ শতাংশ পাওয়া যায় বাংলাদেশ থেকে। দেশটা ইলিশ রপ্তানি করে গত বছর আয় করেছিল প্রায় ১৪১ কোটি টাকা। ভারতেও টন টন ইলিশ রপ্তানি করে মোটা মুনাফা আয় করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক খুবই ভালো। কখনো উৎসবের উপহার হিসেবে, কখনো বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঠিক নির্দেশিকা মেনে কিছু কিছু ইলিশ ভারতে রপ্তানি করে। ভারতের বাঙালিরাও স্বাদ পায় বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের। তাই বাংলাদেশে এবছর ইলিশ কেমন হবে, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে দুই দেশই। যদিও এবারে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে যাই হোক, পদ্মার ইলিশের স্বাদই আলাদা। এই মুহূর্তে হয়ত হতাশা রয়েছে, কিন্তু নদীতে জোয়ারের চাপ আর স্রোত বাড়লে ইলিশ ধরা পড়বে। তার জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম