।। প্রথম কলকাতা ।।
Onion Price Hike: এবার আমজনতার কপালে ভাঁজ ফেলতে চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি পেঁয়াজের। বছরের শুরুতে তার দাম কমই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দেশের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এই দাম সেপ্টেম্বরে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতোদিন বাজারে আগুন ধরিয়েছিল টমেটোর দাম। তার দাম মধ্যবিত্তের কিছুটা আয়ত্ত্বে আসতেই এবার ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে পেঁয়াজের দর।কেন বাড়ছে দাম? পেঁয়াজ সারা বছর জন্মায় না। তার ওপর গত বছর দেশে পেঁয়াজের চাষ কমেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তা নষ্ট হয়েছে।
এর ফলে বাজারে এখন তার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও হ্রাস পেয়েছে। তাই দীর্ঘ মন্দার পরে, পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। স্বভাবতই দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে এই সবজি। এই প্রবণতা আগামী কয়েক মাস পাইকারি বাজারগুলিতে অব্যাহত থাকতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ট্রেডাররা। সমস্যা সামাল দিতে অর্থ মন্ত্রক ১৯ আগস্ট পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ রফতানি শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে পেঁয়াজের রপ্তানি কমবে। দেশের বাজারে জোগান বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা কমবে বলেই মনে করছে কেন্দ্র। রপ্তানি শুল্ক বাড়ায় ব্যবসায়ীরা মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ নিলাম বন্ধ করে দিয়েছেন অক্টোবরে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। তার আগে সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজের দাম চরমে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা। এই সময় বাজার যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই লক্ষ্যে রপ্তানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
আগস্টের শুরু থেকেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। নাসিকের নিফাদ তালুকের লাসালগাঁওয়ের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের গড় দাম ১ আগস্ট ছিল প্রতি কুইন্টাল ১,৩৭০ টাকা। ১৯ আগস্ট প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ২,০৫০ টাকা। এর আগে, মার্চ-যে মাসে, পেঁয়াজ চাষিরা আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেই সময় এই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ঠেকেছিল কুইন্টাল প্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। ক্রপ অ্যান্ড ওয়েদার ওয়াচ গ্রুপ জানিয়েছে যে পেঁয়াজ চাষের জন্য ৩.৭৬ লক্ষ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু, তার বদলে ৩.২৯ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।মার্চ-এপ্রিল মাসে রবি ফসলের ক্ষতির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল।
এই সময় মহারাষ্ট্র-সহ বেশিরভাগ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্যগুলো বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টির মুখে পড়েছিল। যার ফলে চাষ ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়। অতিবৃষ্টি প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ চাষকে প্রভাবিত করেছে। শুধু তাই নয়, প্রায় ২০ শতাংশ কৃষককে ফসলের গুণমান নিয়ে উদ্বেগের কারণে ফের চাষ করতে হয়েছিল। কৃষকরা সাধারণত জুনের পরে তাদের রবি ফসল পেঁয়াজ কাটেন। কিন্তু, অনেক সময়ই দেখা যায় যে তাঁরা একাজ মে মাস থেকেই করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা তাঁরা করতে বাধ্য হন সঞ্চিত পণ্যের গুণমান নিয়ে উদ্বেগের কারণে। তাই মে মাসে অনেক সময়ই বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ চলে আসে। যা নিম্নমানের হয়, একইসঙ্গে দাম কম মেলে।
এই কথা মাথায় রেখে মহারাষ্ট্র সরকার মার্চ মাসে পেঁয়াজ চাষিদের প্রতি কুইন্টাল ৩০০ টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে একটি বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল। বেশিরভাগ কৃষক বলেছেন যে এই প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা এখনও পাননি। ফলে চাহিদা এবং সরবরাহের গরমিলের কারণেই বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। যা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম