।। প্রথম কলকাতা ।।
Netaji: ভারতের বীর সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর ঘটনা এখনও পর্যন্ত একটা বড়সড় রহস্য হয়ে রয়েছে। ১৯৪৫ সালের ২২ অগাস্ট টোকিওর রেডিও জানায়, চার দিন আগে তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose)। অর্থাৎ ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু আদৌ বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল কিনা সেটা সবথেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। নেতাজির এই রহস্যময় অন্তর্ধান নিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০টি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তার মধ্যে তিনটি গঠন করা হয়েছিল ভারতেই। ভারতের প্রথম দুটি তদন্ত কমিশন বিমান দুর্ঘটনায় (Plane Crash) নেতাজির মৃত্যুকে সমর্থন করে। কিন্তু শেষ অর্থাৎ মুখার্জি কমিশন এই তথ্য খারিজ করে দিয়েছিল।
এরপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে বহু গবেষকরা গবেষণা করেছেন। এখনও পর্যন্ত অনেকেই এই বিষয়ে নিজের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে থেকে একাংশের দাবি, নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি। বরং ১৯৪৫ সালের পর রাশিয়ায় ছিলেন তিনি। যদিও এর স্বপক্ষে কোন জোরালো তথ্য-প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু তারপরেও নেতাজি গবেষক পূরবী রায় এই দাবি করেন। তিনি বলেন, ৯০ দশকে তিনি নেতাজিকে নিয়ে গবেষণা করার জন্য রাশিয়ায় গিয়েছিলেন। সেইখানে তিনি নেতাজির উপস্থিতির নানা তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে পেয়েছিলেন। আর পাওয়া গিয়েছিল একটি রেকর্ড। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারাল আলেকজান্ডার কলাসনিকভ নেতাজির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ইটিভি ভারত বাংলা ডিজিটাল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, গবেষক পূরবী রায় বলেন, ১৯৪৬ সালের সেই রেকর্ডে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কলাসনিকভ এবং সোভিয়েত ক্যাবিনেটের সদস্যরা নেতাজিকে কোথায় রাখা হবে এই নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। রাশিয়া থেকে পাওয়া তথ্য প্রমাণ ১৯৯৬ সালে তিনি তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক চিত্ত বসুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। যদিও তাঁর কিছুদিন পরেই চিত্ত বসুর মৃত্যু হয়।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ডিজি বক্সী একটি বই লেখেন। বইটির নাম তিনি দেন ‘বোস: দ্য ইন্ডিয়ান সামুরাই- নেতাজি অ্যান্ড দ্য আইএনএ মিলিটারি অ্যাসেসমেন্ট’। সেই বইয়ে মেজর জেনারেল বক্সী দাবি করেছিলেন, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি প্রয়াত হননি। বরং তা্র মৃত্যু হয় পরবর্তীতে সোভিয়ান ইউনিয়নে ব্রিটিশের জেরা চলাকালীন। তিনি সেই বইয়ে জানান, ওই বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটার পর নেতাজি যাতে নিরাপদে সোভিয়েত ইউনিয়নে চলে যেতে পারেন তার জন্য তাঁর মৃত্যুর খবর প্রচার করেছিল জাপানের গোয়েন্দারা। নেতাজি সাইবেরিয়ায় গিয়ে টোকিও সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত জ্যাকব মালিকের সাহায্যে আজাদ হিন্দ সরকারের দূতাবাস তৈরি করেছিলেন।
কিন্তু জার্মানির বোমা হামলার ফলে সাইবেরিয়া থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সকল সরকারি দফতর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। ব্রিটিশরা জানতে পারেন সোভিয়েত ইউনিয়নে রয়েছে নেতাজি। আর তারপরে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁরা অনুমতি চান নেতাজিকে জেরা করার জন্য । সেই জেরা চলাকালীনই নেতাজির মৃত্যু হয়, এমনটাই ওই বইয়ের দাবি করা হয়েছে। যদিও নেতাজির অন্তর্ধানের পর বহু বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বহু নেতাজি গবেষকরা বিভিন্ন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে একাধিক মতামত ব্যক্ত করেছেন। তবে নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য সেই ভাবে উদঘাটিত হয় নি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম