।। প্রথম কলকাতা ।।
New Continent in Africa: মাটির নিচে ঘটছে তোলপাড়। তৈরি হয়েছে বিশাল ফাটল। দু টুকরো হয়ে যাচ্ছে একটা মহাদেশ। তাহলে কি এবার, পৃথিবীর গোটা ম্যাপটাই বদলে যাবে? এই যে দেখতে পাচ্ছেন ম্যাপ, যেটা ছোটবেলা থেকে পড়ে এসেছেন, ভূগোল বইয়ের পাতায় দেখে এসেছেন, সেটা হয়তো আর থাকবে না! নতুন মহাদেশ আর মহাসাগর কোথায় তৈরি হতে চলেছে? এটা একটা বড় প্রশ্ন। ধরুন আপনি যদি ভারতে থাকেন, কিংবা বাংলাদেশ কিংবা অন্য কোন দেশে, তাহলে কি আপনার পাশের দেশটা আপনার থেকে দূরে সরে যাবে? কিংবা হঠাৎ করে মাটি ফুঁড়ে গজিয়ে উঠবে একটা আস্ত মহাসাগর। অলীক কল্পনা নয়। ইতিমধ্যেই মাটির নিচে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
ম্যাপটা ভালো করে লক্ষ্য করুন। আজ যেটা আছে, অতীতে কিন্তু এমনটা ছিল না। ভবিষ্যতেও থাকবে না। যার অন্যতম কারণ মহাদেশীয় সঞ্চরণ। এই চলমান প্রক্রিয়াই মহাদেশ ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ। যা ঘটছে আফ্রিকায়। আফ্রিকা মহাদেশের ডান দিকটা ভেঙে ফাঁকা জায়গায় তৈরি হতে পারে একটা বিশাল মহাসাগর। ইতিমধ্যেই গবেষকদের এই বিস্ফোরক দাবির কারণে, গোটা বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে চাঞ্চল্য। আফ্রিকা ভেঙে গেলে নতুন সমুদ্র সৈকত পাবে মধ্য আফ্রিকার জমিতে ঘেরা বেশ কিছু দেশ। এমনটাই বলছে জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স এর সমীক্ষা। বেশ কিছু জায়গায় ফাটলও দেখা দিয়েছে। আপনি এতদিন ধরে জানতেন, সাতটা মহাদেশ আর পাঁচটা মহাসাগর। আর এটাই তো পৃথিবীর মানচিত্র। তার সঙ্গে জুড়ে আছে কত দেশ, রাজ্য, নদী, মানুষজন, জীবন, জগতসহ আরো অনেক কিছু। আশঙ্কা যদি সত্যি হয়, তাহলে এই চেনা পরিচিত মানচিত্র টাই বদলে যাবে।
বিজ্ঞানীরা বিশেষভাবে নজর রেখেছেন একদম ইথিওপিয়ার দিকে। এই অঞ্চলে রয়েছে বিশাল সক্রিয় আগ্নেয়গিরি । এখানে মাঝে মধ্যেই ভূমিকম্প সহ অগ্নুৎপাত হয়। তারপর দেখা দেয় বড় বড় গভীর গর্ত। হয়তো উপর দিয়ে দেখলে মনে হবে, একটা সাধারণ ফাটল। কিন্তু তা নয়। এর ভিতর রয়েছে আসল সমস্যা। ইথিওপিয়ার ৩৫ মাইল জুড়ে রয়েছে একটা ফাটল। যেটা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। ফাটল যখন বাড়তে বাড়তে অনেকটা হয়ে যাবে, এর ফাঁকে সমুদ্রের জল ঢুকলেই তৈরি হবে নতুন একটা সমুদ্র। দেখুন, পৃথিবী মানেই তো ভাঙা গড়ার খেলা। সেই সৃষ্টি থেকেই এমনটাই চলছে। প্যানজিয়া আর প্যানথালাসার কথা কে না জানে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ২০০৫ সালের বিশাল অগ্নুৎপাত আর ভূমিকম্পের জেরে এই এলাকার নিচের টেকটনিক প্লেটেও বেশ বড়সড় ক্ষতি হয়েছে। পরস্পরের দিকে দূরে সরে যাচ্ছে প্লেটগুলো। রীতিমত টালমাটার অবস্থা ইথিওপিয়া সহ লোহিত সাগরের ভিতরে।
আসলে বেশ কয়েকটা টেকটনিক প্লেটের উপর তৈরি হয়েছে পৃথিবীর উপরিপৃষ্ঠ। যার ওপরে জীব জগতের এত কর্মকাণ্ড। যখন প্লেট গুলো মাঝেমধ্যে একে অপরের থেকে সরে যায়, বা সংঘর্ষ লাগে, তখন তৈরি হয় ফাটল। যার নিম্নভূমি এলাকাকে বলা হয় রিফট উপত্যকা। যদি রিফট বরাবর প্লেটগুলো সরে যায়, তখন সেই জায়গায় নতুন করে গজিয়ে উঠতে পারে সমুদ্র। যার কারণে স্থলভাগ ছাড়াও সমুদ্রের তলদেশে আসতে পারে বড়সড় ফাটল। এর আগেই কিন্তু এমনটা হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা আর আফ্রিকা প্রায় ১৩৮ মিলিয়ন বছর আগে পৃথক মহাদেশে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। গত ৩০ মিলিয়ন বছর ধরে আরবীয় প্লেট আফ্রিকা থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে। আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডে আর সমুদ্রের তলায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরেই গঠনগত পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। সোজা কথায়, গোটা এলাকা অশান্ত হয়ে আছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের চোখে পড়ছে না ঠিকই, কিন্তু মাটির তলে তলে ঠিকই ঘটছে পরিবর্তন। বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিয়েছেন, আফ্রিকার গা থেকে ধীরে ধীরে অ্যারাবিয়ান প্লেটটা সরে যাচ্ছে। আফ্রিকার থেকে আলাদা করে দিয়েছে এডেন আর লোহিত সাগরকে। যদি আরো দূরে সরে যায়, তখন কিন্তু এই দুই শহর আফ্রিকার দিকে আরও সরে আসতে পারে।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/729322612723672/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
কি ভয় লাগছে? ভাবছেন দুম করে বড় অঘটন ঘটে যাবে না তো? প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসবে না তো? না ভয় পাওয়ার কারণ নেই। এটা প্রাকৃতিক ব্যাপার। পৃথিবীর আদি সৃষ্টির থেকেই এমনটা হয়ে আসছে। আফ্রিকা মহাদেশের সম্পূর্ণভাবে দু’ভাগ হতে এখনো রীতিমতো কয়েক লক্ষ বছর বাকি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম